‘সিঙ্গাপুর বসে বাংলাদেশ দখলের ষড়যন্ত্র করছে আইএস!’

Anandabazarঢাকা, ১৮ মে : একাত্তরে বাংলাদেশ মুক্তির ৬ বছর আগে ১৯৬৫ তে স্বাধীন সিঙ্গাপুর, আজ অন্যতম ধনী দেশ। গতিতে হাওয়া হার মানে। প্রতিটি সেকেন্ড ডলারে মাপা। মাথা পিছু আয় ৫০,০৮৭ ডলার। সমীহ করে ইউরোপ আমেরিকা। সেখানেও জায়গা করছে জঙ্গিরা। ছ্ুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোতে চাইছে। আপাতত, পা রাখা, তারপর দৌড়। তারা জানে, বিত্তবানদের দিয়ে হবে না। ধরতে হবে তাদের, জীবন যাদের নাগালের বাইরে। বেঁচে থাকাটা ব্যতিক্রম। অর্থের লোভে সন্ত্রাসী লাইনে চলতে তাদের আপত্তি হবে না। ১৩ বাংলাদেশি সেই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে। তারা সাধারণ শ্রমিক। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। অবৈধ বসবাসের জন্য নায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। তাদের কোনও ছুটি ছিল না। কাজের হিসেব হত ঘন্টায়। কাজ করত নির্মাণ কর্মী বা জাহাজ শ্রমিকেরা দু’দিন অন্তর কর্মস্থান বদল করে পরিচয় গোপন রাখত। একই অবস্থা আমেরিকায় মেক্সিকোর নির্মাণ কর্মীদের। অবৈধভাবে বসবাসের দরুণ তাদের মজুরি নামমাত্র।
সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি টনি টান, প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লুং, দুজনেই উদ্বিগ্ন। সেখানকার স্বরাস্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্থিক দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা জঙ্গি ফাঁদে পা দিয়েছে। তাদের ৫ জনকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকি ৮ জন দু’বছরের জন্য জেলে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ধৃতরা সিঙ্গাপুরে ঢোকার আগে কোনওভাবেই জঙ্গি কার্যকলাপের সাথে যুক্ত ছিল না। সিঙ্গাপুরেই তারা অন্ধকার রাস্তার খোঁজ পেয়েছে। সে পথে প্রবেশ করেছে বাধ্যবাধকতায়। তাদের দায়িত্ব ছিল, বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট অব বাংলাদেশ গঠন। যাদের প্রথম কাজ হবে শেখ হাসিনা সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে সন্ত্রাসবাদকে স্থায়িত্ব দেয়া।
এত বড়ো কাজ তাদের মতো নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের সাধ্যের বাইরে জানত আইএস চক্র। তারা রাস্তাটা দেখাতে পারলেই খুশি হত সন্ত্রাসী নেতৃত্ব। তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হয়নি। দেয়া হয়েছিল সিডি আর বই। যা সন্ত্রাসী কাজে প্রেরণা হতে পারে। অনলাইনে আইএসের কাজ দেখানো হত। জঙ্গিদের মেলামেশার জায়গা ছিল সিঙ্গাপুরের পার্ক। ধৃতদের মধ্যে অন্যতম মিজানুর রহমান স্বীকার করেছে, ইসলামিক স্টেট অব বাংলাদেশ গঠন করেছিল তারা। বাংলাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ করে কাজ এগোনোর চেষ্টা হয়েছিল। টাকার কোনও অভাব ছিল না। সেটা সময়মতো তাদের হাতে পৌঁছে যেত।
সিঙ্গাপুর সরকার জানিয়েছে, এই প্রথম সন্ত্রাসীদের খোঁজ পাওয়া গেল। তারা যাতে ডালপালা মেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। সিঙ্গাপুরে ৭৭ শতাংশ চিনা, ১৫ শতাংশ মালয়, ৬ শতাংশ ভারতীয়। ভারতীয়দের মধ্যে তামিলদের প্রতিপত্তি যথেষ্ট। বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি। অন্য বিদেশী যারা থাকে তারা নির্দিষ্ট কাজে ব্যস্ত। অবৈধ কর্মকান্ডে যুক্ত থাকার সুযোগ বা ইচ্ছেটা কোনটাই নেই।
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকদের টার্গেট করেছিল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া। তাদের দিয়েই বাংলাদেশ শিকড় ছড়ানোর ইচ্ছে ছিল। বাংলাদেশি শ্রমিকরা ঢাকা সিঙ্গাপুরের মধ্যে নিয়মিত যাতায়াত করত। বাংলাদেশে আইএস তৎপরতা আগে দেখা যায় নি। আটক জঙ্গিদের কাছ থেকেই জানা যেতে পারে, সত্যিই তারা চারা পুঁততে পেরেছে কিনা। – অমিত বসু, আনন্দবাজার

Check Also

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: স্মৃতিসৌধে পরিদর্শন বইয়ে রাষ্ট্রপতি

মহান স্বাধীনতা দিবসে ঢাকার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।