বৌদ্ধ-মুসলমান সম্পর্ক উন্নয়নে মিয়ানমারে কফি আনান-উখিয়া সীমান্তে ৩৭ রোহিঙ্গাকে ফেরত

উখিয়া সীমান্তে ৩৭ রোহিঙ্গাকে ফেরত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত হয়ে উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ৩৭ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ওইসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী-৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়কের পরিচালক ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো ৩৭ রোহিঙ্গার মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী ও ১৩ জন শিশু রয়েছে।
তিনি জানান, এসব রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ কয়েক ভাগে নাফ নদীর পালংখালী সীমান্ত জিরো পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে পালংখালী বিওপি এবং রেজুখাল চেকপোস্ট ৩৪ ব্যাটালিয়নের হাতে ধরা পড়ে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত আসা এসব রোহিঙ্গাদে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিজিবি জানায়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে উখিয়া সীমান্তে বিজিবির টহল ও তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

বৌদ্ধ-মুসলমান সম্পর্ক উন্নয়নে মিয়ানমারে কফি আনান

মিয়ানমারে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ এবং সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের মাঝে কিভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন করা যায় সে প্রচেষ্টা চালাতে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান এখন মিয়ানমারে।

মিয়ানমারের নতুন সরকার রোহিঙ্গা সম্পর্কিত যে নতুন কমিশন গঠন করেছে কফি আনান সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি তার এ সফরে এ কমিশনের সদস্যদের সাথেও বৈঠক করবেন।

জাতিসংঘের সাবেক এ মহাসচিব এমন এক সময়ে মিয়ানমার সফর করছে যখন দেশটিতে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে হাজার-হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান তাদের ঘর-বাড়ি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করছেন, রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ করছে।

রাখাইন রাজ্যে সংঘাত কিভাবে বন্ধ করা যায় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু মুসলমানদের মাঝে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমার সরকারকে পরামর্শ দেবেন কফি আনান।

মূলত মিয়ানমারের গনতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সূচির আগ্রহে আনানকে এ কমিশনের প্রধান করা হয়েছে।

কফি আনান যদিও চেষ্টা করছেন মিয়ানমারের বৌদ্ধ এবং মুসলমানদের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে কিন্তু বাংলাদেশে অবস্থানরত জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা এরই মধ্যে বিবিসিকে বলেছেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মূল করতে চায়।

কিন্তু আনান তা কাজে কতটা সফল হবেন সেটি নিয়ে এরই মধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা আনানের নেতৃত্বে কমিশনকে পছন্দ করছে না। তারা এর আগে এ কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানিয়েছিল।
প্রায় চারমাস আগে কফি আনানকে এ কমিশনের প্রধান করা হলেও তার কিছুদিন পরেই রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাতের শুরু হয়। রোহিঙ্গা মুসলমানদের অভিযোগ এবারের দমন-পীড়ন অতীতের যে কোন মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।

যদিও মিয়ানমারের সরকার বলছে, কয়েকটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিহত হওয়ার পরে তারা এ অভিযান চালাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করছে মিয়ানমারের সরকার।

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর ব্যাপক অত্যাচার ও নিপীড়নের অভিযোগ স্বত্বেও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সূচির নীরবতার কারণে অনেকে তার সমালোচনা করছেন।

Please follow and like us:

Check Also

বেইজিং ঘনিষ্ট মুইজ্জুর জয়: ভারত থেকে আরও দূরে সরবে মালদ্বীপ

মালদ্বীপে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ভারতের প্রভাব কমাতে ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।