পরিবারভিত্তিক সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কায় খালেদা জিয়া দেখতে যাননি শফিক রেহমানকে

ক্রাইমবার্তা রিপোট:পরিবারভিত্তিক সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেখতে যাননি সদ্য কারামুক্ত সাংবাদিক শফিক রেহমানকে।
11
এদিকে, সদ্য কারামুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা, দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়া ও শফিক রেহমানকে দেখতে না যাওয়া নিয়ে কিছুটা আলোচনা-সমালোচনা-কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সচেতন সাধারণ মানুষের মধ্যে।

আমাদের সময় ডটকমের তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কেন তার সাবেক জ্বালানি ও খনিজ উপদেষ্টা, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে দেখতে গেলেন হাসপাতালে। কেনইবা নিজের ও দলের অতি ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্বেও সদ্য কারামুক্ত সাংবাদিক শফিক রেহমানকে দেখতে যাননি খালেদা জিয়া।

২০১২ সালে ঘটা স্কাইপ কেলেঙ্কারির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল। কারওয়ান বাজারস্থ আমার দেশ কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি মোট ৭০টি মামলার আসামি ছিলেন। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর কারাবাসের পর গত ৩ নভেম্বর জামিনে মুক্তি মেলে মাহমুদুর রহমানের। সেদিন থেকে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্ট সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ চক্রান্তের মামলায় গত ১৬ এপ্রিল সাংবাদিক শফিক রেহমানকে নিউ ইস্কাটনস্থ নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। টানা সাড়ে চার মাস কারাবাসের পর পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে গত ৩১ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে জামিন মেলে তার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তা খুবই খুবই স্পর্শকাতর হিসেবে আমলে নিয়েছেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কেননা, সজীব ওয়াজেদ জয় শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা নন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাত বংশধরও। তাকে অপহরণ চক্রান্তের মামলা একটি বিশাল ও খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। তার উপর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সুরক্ষায় বিশেষ আইনও আছে।

সূত্রমতে, যদি শফিক রেহমানকে খালেদা জিয়া দেখতে যেতেন, তবে বঙ্গবন্ধু পরিবার ও জিয়া পরিবারের মধ্যে একটি সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা সৃষ্টি হবে। শফিক রেহমানকে দেখতে গেলে, মামলার বিষয়কে মনের অজান্তে হলেও আসকারা দেয়া হতে পারে। এসব আশঙ্কা থেকেই খালেদা জিয়া শফিক রেহমানকে দেখতে যাননি। তবে উভয়ের মধ্যকার সম্পর্ক অটুট আছে পুরোপুরিই।

শফিক রেহমান কারামুক্ত হবার পর থেকে এখন অব্দি খালেদা জিয়া তার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন বলে আমাদের সময় ডটকমকে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একটি সূত্র।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রথমে স্কাইপ কেলেঙ্কারির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংশ্লিষ্ট এবং স্পর্শকাতর হলেও শফিক রেহমানের মামলার মতো ঘন স্পর্শকাতর নয়। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে থাকা বাকি মামলাগুলোর অভিযোগ গুরুতর বটে। কিন্তু শফিক রেহমানের মামলার কাছে একেবারেই নগণ্য। এসব বিষয় বিবেচনায় এনে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সশরীরে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাহমুদুর রহমানকে দেখতে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের সময় ডটকমকে জানান, মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমান- উভয়েই বিএনপির নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু কিছু গুরুতর স্পর্শকাতর বিষয়ের অস্তিত্ব, আশঙ্কা থাকায় শফিক রেহমানকে চেয়ারপারসন দেখতে যাননি।

Check Also

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইয়াছিন আলীকে গ্রেফতার করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।