ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে থাই পেয়ারা চাষ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে থাই জাতের পেয়ারা। থাই পেয়ারা চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন ঝালকাঠির ৪ যুবক।  অধিক লাভজনক হওয়ায়  এ জাতের পেয়ারা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় যুবকরা। অর্থকরী ফল এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর থাই পেয়ারার চাহিদা থাকায় এই ফলটির আবাদ দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে এ জেলায়।  আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার 20ঝালকাঠিতে বাণিজ্যিক ভাবে পেয়ারা চাষ করেছেন এখানকার ৪ উদ্যোক্তা। ঝালকাঠি সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাণ্যিজিক ভিত্তিতে এ থাই  জাতের পেয়ারার বাগান করেছেন সাবেক ছাত্র নেতা লস্কর আশিকুর রহমান দিপু,  প্রভাষক মো. কামাল হোসেন, প্রভাষক গোলাম মুর্তুজা ও আইনজীবী সোহেল আকন। মাত্র ৯ মাস আগে  ঝলকাঠি সদর উপজেলার শেখের হাট ইউনিয়নের গাবখান নদীর তীরবর্তী শিরযুগ বিআইডব্লুটি এর ১৫ একর জমি লিজ নিয়ে এবং বিনইকাঠি ইউনিয়নের পানপাশা এলাকায়  নিজেদের ৪ একর জমিতে  উচ্চ শিক্ষিত এ চার যুবকের প্রকল্প শুরু হয়। বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন পর্যন্ত  উদ্যোক্তাদের ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বড় ধরণের কোন দূর্যোগ বা  প্রতিকূলতা সৃষ্টি না হলে উৎপাদন তোলার ৩-৪ ধাপে দেড় কোটিরও বেশী টাকার  উৎপাদন পাওয়া যাবে, বলে উদ্যোক্তারা জানান। জেলার চাহিদা মিটিয়ে আশেপাশের অন্য জেলা গুলোতে  ঝালকাঠির থাই পেয়ারা বাজারজাতের আশা করছেন উদ্যোক্তারা। উদ্যোক্তা দিপু জনান, তাদের এই ১৯ একর জমিতে এ পর্যন্ত জমি প্রস্তুত করা, চারা ক্রয়, রোপন, পরিচর্যাসহ পানি সরবরাহ নিয়ে ৩৫ লাখ টাকার বেশী  খরচ হয়েছে এবং পুরো মাত্রায় ফলন পর্যন্ত ৬০-৬৫ লাখ টাকা খরচ  তিনি আরও জানান,  থাই  পেয়ারা থেকে ৩-৪ ধাপে  দেড় কোটি টাকার বেশী বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন তারা। প্রতিদিন প্রকল্পে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এখানে তাদের মধ্যে ১০ জন শ্রমিকের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।  এ প্রকল্পের 21আরেক উদ্যোক্তা সোহেল আকন জানান, পেয়ারা চারা লাগানোর ২-৩  মাসের মধ্যে ফলন আসা শুরু হয়। তবে গাছের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং গাছ মজবুত রাখাতে প্রথম বারের ফলন ভেঙে ফেলে দেয়া হয়। এ পেয়ারা একটু বড় হওয়ার পর পলিথিন দিয়ে বেঁধে না দিলে পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়। এ আক্রমণ  প্রতিরোধ করতে পারলেই পেয়ারা চাষে সফলতা এবং অর্থ পাওয়া যাবে। আগামী বছর  পেয়ারার আবাদ  আরও সম্প্রসারিত হবে বলে কৃষি বিভাগ মনে করছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. তাজুল ইসলাম জনান, ঝালকাঠিতে ছোট বড় বিভিন্ন ফলের বাগান সৃষ্ঠি হচ্ছে।শিক্ষিত যুব সমাজ এ ফলের বাগান সৃষ্টিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা। এবছর প্রথম বারের মত ফলন আসা শুরু করেছে। তবে পেয়ারা গাছের স্বাস্থ্য রক্ষার কারণে ৮০ ভাগ ফলন ফেলে দিয়ে ২০ ভাগ রাখা হয়েছে বাজারজাত করার জন্য। আর এ পেয়ারা কেজি প্রতি ৮০-১০০ টাকা বাজার দাম পাওয়া যাবে বলেও জানান এ জেলায় প্রথম বারের মত থাই পেয়ারা চাষের উদ্যোক্তারা।

Please follow and like us:

Check Also

রাজাপুর আল- হেরা জামে মসজিদের কমিটি গঠন

সাদী হাসান, চাম্পাফুল প্রতিনিধিঃ কালীগঞ্জ উপজেলা রাজাপুর আল- হেরা জামে মসজিদে নতুন কমিটি গঠন করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।