নির্বাচনী বাজেট জনকল্যাণে আসবে না : মির্জা ফখরুল

ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেয়া বাজেট জনগণের কোনো কল্যাণে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দেয়া বাজেট বাস্তবায়ন অসম্ভব। এই সরকার সামনে নির্বাচনকে রেখে রাজনৈতিকভাবে বাজেটকে ব্যবহার করছে। কোন কোন খাতে এই ব্যবহার হচ্ছে? স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা ভালো না, শিক্ষা খাতের অবস্থা ভালো না। সেগুলোর জন্য আমরা দেখতে চাই, ওইসব খাতে কীরকম বরাদ্দ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ওইসব খাতের অবস্থা ভালো নয়।

ফাইল ছবিফাইল ছবি

 

আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব বলেন।

জাতীয়তাবাদী মহিলাদল আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ছিলেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুরী আরা সাফা, সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মনে করি এই বাজেটটি জনগণের কল্যাণে খুব একটা কিছু করতে পারবে না। সরকার জনগণের ভোটের নির্বাচিত হয়নি উল্লেখ করে তাদের বাজেট উপস্থাপনার বৈধ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী সরকারকে একটা বাজেট দিতে হয়। পার্থক্যটা এখানে যে, এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। এখানে সরকারের লেজিটেমিসির প্রশ্ন এসে যায়। সেকারণে সমস্ত সঙ্কটের মূলে কিন্তু এই যে, এই সরকারের বৈধতা নেই। বাজেট যে তারা দিচ্ছে, সেটারও কোনো জবাবদিহিতা বা দায়বদ্ধতা তাদের নেই। সংসদে যে আলোচনাগুলো হবে, তারও জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার মাধ্যমে হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বাজেটের আলোচনা-সমালোচনা, জনগণের কল্যাণে কতটুকু হবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় আমরা দেখেছি, অর্থনীতিবিদরা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো তারা এই বাজেটের যে বিশাল একটা অবয়ব, যেটা এই সরকার বরাবরই বড় অবয়ব দিচ্ছে, বড় একটা বাজেট দিচ্ছে যেটা সব সময় বলা হচ্ছে ইট ইজ হাইলি অ্যামবিসাছ।

তিনি আরো বলেন, এবার বলা হচ্ছে যে, ঝুঁকি নিয়ে দেয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী নিজেই বলছেন যে, শেষ বাজেট ঝুঁকি নিয়ে দিচ্ছেন। ভালো কথা। যারা বাজেট দিচ্ছে, তাদের সেই বৈধতা আছে কিনা। বৈধতা নেই বলেই আজকে আর্থিক ক্ষেত্রে যত সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।

অতীতের বাজেট বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন, ব্যাংকিং সিস্টেম, শেয়ার মার্কেট এবং এডিবির (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) যে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, সেটাও কিন্তু চূড়ান্তভাবে হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে আমরা পত্রিকায় দেখেছি, গতবছরের বাজেটের ৫৫% থেকে ৬০% এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। তাহলে এই বড় বাজেট দেয়ার যুক্তিটা কী থাকতে পারে?।

তিনি বলেন, এই বাজেটের লক্ষ্যটা কী? লক্ষ্যটা এমন হতো জনগণের কল্যাণের জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধির জন্য তাহলে একটা কথা ছিলো। আমরা দেখছি যে, ভ্যাট এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নেয়া হচ্ছে এবং অনুৎপাদক খাতে ব্যয় বেশি হচ্ছে।

সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, একই সঙ্গে পাওয়ার প্ল্যান্টের ক্ষেত্রে দুর্নীতি চরম পর্যায় চলে গেছে এবং কোনো জবাবদিহিতা নেই, কোনো টেন্ডার হয় না- এই বিষয়গুলো রয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করি, আমাদের দেশের আর্থিক যে নিয়ন্ত্রণ বা আর্থিক যে ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আসছে বাজেটও বিশাল ঘাটতি থাকবে, সেক্ষেত্রে জনকল্যাণ কতটুকু সম্ভব হবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, খুব কঠিন এটা। এটা শুধু কঠিন নয়, অসম্ভব ব্যাপার।

 

 

Please follow and like us:

Check Also

অনিশ্চয়তার নতুন যুগে মধ্যপ্রাচ্য

ইউক্রেন-রাশিয়া রেশ কাটতে না কাটতেই ফিলিস্তিনের গাজায় শুরু হয় ইসরাইলি আগ্রাসন। এরপর থেকে অশান্ত হতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।