খেলাপি ঋণের টাকা চাওয়াতে ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার সহ পাঁচ কর্মকর্তা অবরুদ্ধঃ পুলিশ এসে উদ্ধার

স্টাফরিপোটারঃ46 ৫২ লক্ষ টাকার খেলাপি ঋণের টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজার সহ চার কর্মকর্তাকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরা সঙ্গীতা মোড় সংলগ্ন কামাল নগরে এ ঘটনা ঘটে। ব্যাংক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান,মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে ঋণের টাকা আদায়ের জন্যে শহরের কামালনগরস্থ মাহবুবুর রহমানের বাড়িতে যায় ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক সহ তারা পাঁচ কর্মকর্তা। বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্রই মাহবুবুর রহমান এবং তার ছেলে তাদেরেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাহবুব তাকে মারপিট করে। পরিস্থি বেগতিক দেখে ব্যাংটির শাখা ব্যবস্থাপক শেখ আব্দুস সামাদ পুলিশের সহযোগীতা চান। পরে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে এবং মামবুবকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজার জানান,বিকেলে মাহবুবুর রহমানের কাছে খেলাপি ঋণের টাকা চায়তে গেলে তার কয়েক কর্মকর্তাকে অপমানিত করে। এমনকি আটকিয়ে রাখে। পরে তিনি পুলিশের সহযোগীতা নেন। তার কাছে ব্যাংকের ৫২ লক্ষ টাকা খেলাপি ঋণ আছে। আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
মাহবুব একহজন প্রভাবশালী ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে দল বদল করেন তিনি। বিএনপি সরকারের সময়ে তিনি সাতক্ষীরা জেলা কৃষক দলের সহ সভাপতি সহ বিভিন্ন পদে ছিলেন। পরে সদরে জামায়াতের এমপি নির্বাচিত হওয়ার সুবাধে বেশি সুবিধা নিতে জামায়াতে যোগ দান করেন । কয়েক বছর জামায়াতের বিভিন্ন পদে ছিলেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালে শহরের ৮ নং ওয়ার্ড জামায়াতের সহসভাপতি ছিলেন। এসময় তার নেতৃত্বে শহরের জামায়াতের কয়েকটি বড় বড় মিছিল হয়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী শহরের কদম তলাতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জামায়াত শিবিরের যে সংঘর্ষ হয়ে ছিল তার নের্তৃত্বে ছিল মাহবুব বলে পুলিশ জানায়। সেই সংঘর্ষে জামায়াত শিবিরের হামলায় নিহত হন সাতক্ষীরা সিটি কলেজের তৎকালিন সভাপতি জন প্রিয় নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও শাহিন। এহত্যার ঘটনায় মাহবুবু রহমানকে পৃথক মামলায় ৭১ ও ৭২ নং এজহার ভুক্ত আসামি করা হয়। মামলা থেকে বাঁচতে পরে আওয়ামীলীগে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি আগরদাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড কমিটির প্রভাবশালি সদস্য।
তিনি শহরের রক্সি সিনেমা হল সংলগ্ন পৌরমার্কেটের ভাই ভাই মেশিনারিজরে মালিক। তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা দিগন্ত নামে একটি এনজিও পরিচালিনা করেন। সেখানে গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকার অর্থ আতœস্যাতের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা থেকে মেশিনারিজরে যন্ত্রপাতি ক্রয় বাবদ ৭৫ লক্ষ টাকা ও ৭২ লক্ষ টাকা চেক জালিয়াতির মামলায় তিনি ওয়ারেণ্ট ভুক্ত আসামী। প্রভাব খাটিয়ে তিনি থানাতে এসব ওয়ারেন্ট আটকিয়ে রেখেছে বলে সূত্র জানায়।
থানার দালালি,মামলার ভয় দেখিয়ে নিরিহ মানুষদের কাছ থেকে বিপুল অংকের অর্থ আদায় সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয় জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানায় ওসি জানায়,তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। কেউ মামলা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে থানা থেকে তাকে ছাড়াতে একটি মহল পুলিশের সাথে দেনদরবার শুরু হয়েছে। এমনকি সরকার দলীয় অনেকত প্রভাব শালি নেতা তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশকে চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Please follow and like us:

Check Also

সাফজয়ী ফুটবলার রাজিয়া সুলতানার বাড়িতে চলছে কান্না

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ গত শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজিয়াদের জরাজীর্ণ বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িজুড়ে যেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।