কক্সবাজারে টানা বর্ষণ-দুর্যোগে ১১ জনের প্রাণহানি

কক্সবাজারে টানা বর্ষণ-দুর্যোগে ১১ জনের প্রাণহানি

নিহত দুই ভাই শাহিন ও ফাহিম

শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণ থেমে যাওয়ায় কক্সবাজার জেলাব্যাপী বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আকাশে মেঘ থাকলেও রোদের দেখা মিলেছে বিকালে।

তবে বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমেনি। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।

এদিকে গত পাঁচ দিনের টানা বর্ষণ ও বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মহেশখালীতে একজন, সদরের ইসলামাবাদে একজন, রামুতে তিনজন, উখিয়ায় পাঁচজন এবং সীমান্তের ঘুমধুমে একজন মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে রামু উপজেলার উত্তর ফতেখাঁরকুল চালইন্নাপাড়া এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই ভাই মো. শাহিন (১০) ও মো. ফাহিম (৮) প্রাণ হারায়। তারা ওই এলাকার কামাল হোছেনের ছেলে।

বাড়িতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নানার বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথে প্রবল স্রোতে শাহিন ও ফাহিম ভেসে যায়। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

একইদিন উখিয়ার সোনাইছড়িতে বন্যার স্রোতে নিখোঁজ সামিরা আক্তার (১৪) নামে মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। সে সোনাইছড়ি জাফর আলমের কন্যা এবং সোনাইছড়ি আয়েশা সিদ্দিকা বালিকা মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বুধবার ভারি বর্ষণে আকস্মিক বন্যায় ঢলের পানিতে সমিরা আকতার ভেসে গিয়েছিল।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন জানান, মধ্যম রত্নাপালং গ্রামের মৃত অমূল্য বড়ুয়ার ছেলে ইতুন বড়ুয়া (১৫) ও রত্নাপালং সাদৃকাটা গ্রামের কামাল উদ্দিন (৬০) নামের একজনের মরদেহ বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয়েছে।

এর আগে বুধবার উখিয়ার পালংখালী আনজুমানপাড়ায় দেয়ালচাপায় সরওয়ার আলমের ৭ বছরের শিশুপুত্র শাহরিয়ার হোসেন রাব্বি ও উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ঘুমধুমে পাহাড় ধসে চেমন খাতুন (৫৫) নামে এক নারী মারা যান। একইদিন সন্ধ্যায় রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃকাটা নামক এলাকায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বন্যার পানি দেখে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মো. ইসলাম সাওদাগর (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

হিমছড়ি বড় ঝর্ণা সংলগ্ন সমুদ্র সৈকত থেকে অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়। পাহাড় ধসে মারা যায় মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মহুরাঘাটা এলাকার মনোয়ার আলম নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।

এদিন ঢলের পানিতে খেলতে নেমে উম্মে সালমা (৭) নামে এক কন্যা শিশু মারা গেছে। সালমা ওই এলাকার আব্বাস মিস্ত্রির মেয়ে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, বন্যায় গত ৫ দিনে ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হয়েছে।

Check Also

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: স্মৃতিসৌধে পরিদর্শন বইয়ে রাষ্ট্রপতি

মহান স্বাধীনতা দিবসে ঢাকার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।