SAMSUNG CAMERA PICTURES

পিচ সড়ক এখন কাদা

 

SAMSUNG CAMERA PICTURES
স্বাধীনতা পরবর্তী সাতক্ষীরা সকের এমন বেহাল দশা আগে কোন দিন দেখি নি। পূর্বে সড়ক খারাপ হলেও এতো দীর্ঘ সময় মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। সড়কগুলো কয়েকমাস নষ্ট হলে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিত প্রশাসন। কিন্তু সময় পরিবর্তন হয়েছে। গত দেড় বছর শহরের প্রধান সড়ক চলাচলের অযোগ্য হলেও কার্যতঃ সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি বলে গতকাল বিকালে মন্তব্য করেন বাকাল এলাকার ষাটউর্ধ্ব রফিকুল ইসলাম।

 

সাতক্ষীরার সড়ক মহাসড়কগুলোতে দুর্ভোগ কোনো নতুন বিষয় নয়। দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই সাতক্ষীরার মানুষের চলাফেরা। তবে দুর্ভোগের সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বৃষ্টি। কোনটি রাস্তাা আর কোনটি খানাখন্দ চেনার উপায় নেই। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি পাকা না কাঁচা সড়ক। পিচ উঠে কাদায় পরিণত হয়েছে।
সাতক্ষীরা-কলিগঞ্জ-শ্যামনগর-আশাশুনি-পাটকেলঘাটা-খুলনা-যশোর। সাতক্ষীরা থেকে যোগাযোগের অন্যতম এসব মাধ্যমগুলো এখন কাদায় পূর্ণ। জেলা সদর থেকে শুরু করে এমন বেহাল দশা উপজেলাগুলোতেও।
সূত্র জানায়, শহরের মেডিকেল কলেজ থেকে সার্কিট হাউজ পর্যন্ত সড়কের জন্য টেন্ডারের পরে কাজ পান মেসার্স মহিউদ্দীন বাঁশির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে এ সড়কের কার্যাদেশ দেওয়া হয় চলতে বছরের মে মাসে। কিন্তু ঠিকাদার গড়িসমি, সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের অবহেলায় কাজ শুরু হয়নি। অবশেষে গত ৪ জুলাই সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও কয়েকজন মিডিয়া কর্মী নিয়ে সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সড়ক সংস্কার কাজ উদ্বোধন করেন। সে সময় ২/৩ দিন সড়কের পিচগুলো তোলা হয়। পরে আর দেখা যায় নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের। বন্ধ হয়ে যায় কাজ।
বাঁকাল গ্রামের বৃদ্ধ আজিজুর রহমান (৭০) জানালেন, শহরে চলছি বহুকাল ধরে। কিন্তু এতো ভয়াবহ পরিস্থিতি কখনও দেখিনি। যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হাটারও পরিস্থিতি নেই। তিনি বলেন, জেলা শহরের ছফুরণনেছা মহিলা কলেজ থেকে কামালনগর হাটের মোড় পর্যন্ত মেইন সড়কের দু’ধারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যেভাবে শত শত  ট্রাক রাখা হচ্ছে তা না দেখলে বর্ণনা করে বুঝানো যাবে না। বাড়ী থেকে সাতক্ষীরা শহরের উদ্দেশ্যে বের হলে জীবন বাঁচিয়ে আবার বাড়িতে ফিরতে পারবো এই নিশ্চয়তা নেই।
তিনি আরো জানান, সড়কে খানা-খন্দের কারণে সাদা কাপড় পরে এই সড়ক দিয়ে একবার চলাচল করলে কামালনগর হাটের মোড় থেকে তার কলেজ পর্যন্ত কোয়াটার কিলোমিটর রাস্তা ভ্যানে যেতেই চাচ্ছে না। ভাড়া গুনতে হচ্ছে দ্বিগুন।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা বিজিবি ক্যাম্পের দুই গেটের মাঝখানের রাস্তার অংশটুকু মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন কয়েকটি গাড়ি, ভ্যান উল্টে যাচ্ছে। রাস্তার উপর বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার উপর কাদা উঠে গেছে। এটা দেখে বুঝার উপায় নেই এটা পিচ রাস্তা না কাচা রাস্তা।
ভ্যান চালক মিজানুর রহমান বলেন, ঝুঁকির মধ্য দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাসের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে সেটি বড় কথা নয় যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বৃষ্টির কারণে সড়কের অধিকাংশ স্থানে গর্ত আর রাস্তার মধ্যে পার্থক্য বোঝার উপায় নেই। এই কাদায় ভ্যান চালাতেও কষ্ট হয়।
সূত্র আরো জানায়, ২/১ দিন পর পর পিচ রাস্তার উপর শুকনা ইট দিয়ে রাস্তা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না। অপরদিকে, রাস্তার উপর পানি থাকায় পথচারীরা হেঁটেও চলতে পারছে না।
এদিকে মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে সাতক্ষীরার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দীন জানান, সাতক্ষীরা সদরের প্রধান সড়কটি অত্যন্ত খারাপ। এটার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ঈদুল আজহার আগেই কাজ শেষ হবে আশা করছি। তবে বর্তমানে যে দুরবস্থা তার কবে সুরহা হবে তা তিনি জানেন না।

Check Also

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: স্মৃতিসৌধে পরিদর্শন বইয়ে রাষ্ট্রপতি

মহান স্বাধীনতা দিবসে ঢাকার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।