একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় এসেছে।
রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে আপিল দুটি।
জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের আপিল ২নং ক্রমিকে ও জাতীয় পার্টির নেতা কায়সারের আপিল ৩নং ক্রমিকে রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল দায়ের করেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবীরা এ আপিল দায়ের করেন।
আপিল আবেদনে এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাস চাওয়া হয়েছে। মোট আপিল ৯০ পৃষ্ঠার এবং আপিলে খালাসের পক্ষে ১১৩টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।
এর আগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর রংপুর অঞ্চলের আলবদর কমান্ডার এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির আদেশ দিয়ে রায় দেন ট্রাইব্যুনাল। একাত্তরে গণহত্যা, হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাকে এ সাজা দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজহারুলের বিরুদ্ধে গঠন করা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি অভিযোগে তাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়।একটিতে ২৫ বছর এবং অপরটিতে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এ জামায়াত নেতাকে।
আর প্রমাণিত না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আনা ১ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
অপরদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল করা হয়।
২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আদালত কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দেন।
গণহত্যার একটি, হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ১৩টি ও ধর্ষণের দুটিসহ মোট ১৬টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়, যার মধ্যে ১৪টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
এছাড়া ১, ৯, ১৩ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর, ৭ নম্বরে সাত বছর ও ১১ নম্বরে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। ৪ ও ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ অভিযোগগুলোতে খালাস দেয়া হয় তাকে।