শূন্য হাতে ফিরেছেন খাদ্যমন্ত্রী, চালের চুক্তি করেনি মিয়ানমার

ঢাকা : মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা ও নির্যাতনের কারণে গোটা বিশ্ববাসী যখন দেশটির পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করছেন তখন বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মিয়ানমার সফর করেছেন চাল আমদানির চুক্তি করতে। এতে তিনি দেশবাসীর তীব্র সমালোচনামুখে পড়েন। কিন্তু তার অর্জন শূন্য। তিনি আশা নিয়ে গেলেও ফিরেছেন খালি হাতে। এখনই দেশটি জি-টু-জি’র ভিত্তিতে চাল রপ্তানি চুক্তি করতে সম্মত হয়নি।
মিয়ানমার সফর করে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম গত শনিবার রাতে দেশে ফেরেন। দেশে চালের মজুদ বাড়াতে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের পর মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির চুক্তি করতে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে মিয়ানমার সফরে গিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তবে মিয়ানমার সরকার চাল রফতানির বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোন চুক্তি স্বাক্ষর করেনি।
এর আগে, ভারত আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে চাল রফতানি করবে না, বলে জানিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে ভারতীয় কাস্টমস একটি চিঠিও দিয়েছে বাংলাদেশকে।

খাদ্যমন্ত্রীর মিয়ানমার সফরের উদ্দেশ্য ছিলো সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এমওইউ (সমঝোতা চুক্তি) স্বাক্ষর করা। কিন্তু বাংলাদেশের এমন প্রস্তাবে রাজি হয়নি মিয়ানমার। বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির লক্ষ্যে বাংলাদেশি প্রস্তাবে তাৎক্ষণিকভাবে সম্মত হয়নি মিয়ানমার।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশের মন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তারা চাল আমদানির প্রস্তাবটি আপাতত গ্রহণ করলেও চুক্তি করবে না। বাংলাদেশের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সরকারের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে। তারা বাংলাদেশ সফরে এসে প্রস্তাবের আরও বিভিন্ন দিক বিবেচনা করবেন, প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করবেন। সেগুলো সন্তোষজনক হলেই চুক্তি করবে মিয়ানমার, এর আগে নয়।
এই চুক্তি স্বাক্ষর হলেই মিয়ানমার থেকে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করতে পারতো বাংলাদেশ। তবে এই মুহূর্তে মিয়ানমার সরকারের কোনও কর্মকর্তা চাল আমদানির প্রস্তাব বিবেচনা, পর্যালোচনা বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে বাংলাদেশে আসতে পারবেন না। কারণ রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই মুহূর্তে বংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে আসা কোনও প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাতে আগ্রহী নয়, বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সরকার বছরে অন্তত ৩০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সুযোগ রাখতে চেয়েছিলো। এ লক্ষ্যে ভিয়েতনাম থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন, থাইল্যান্ড থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির লক্ষ্যে চুক্তি করেছে সরকার। বাকি ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করতে চেয়েছিলো। তবে মিয়ানমারের প্রস্তাবের পর এই চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।