মৃত্যুর ৩ বছর পর এলো গ্রেফতারি পরোয়ানা পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ

রাজশাহীর দুর্গাপুরে এক ব্যক্তির মৃত্যুর তিন বছর পর থানায় এলো গ্রেফতারি পরোয়ানা। এ ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ করেছেন মৃতের ছেলে শাহিনুল ইসলাম। তাদের বাড়ি উপজেলার শ্যামপুর নওপাড়া গ্রামে।

শাহিনুল ইসলাম অভিযোগে বলেছেন, তার বাবা আবদুস সালাম তিন বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু এখনও তার নামে ঝুলছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। দুর্গাপুর থানার তৎকালীন কনস্টেবল সারোয়ার হোসেনকে তিনি তার বাবার মৃত্যু সনদ হস্তান্তর করে নথিভুক্ত করতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি তার বাবার মৃত্যু সনদ নথিভুক্ত করেননি। এ কারণে আদালত তার বাবার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। পুলিশ কনস্টেবল সারোয়ার হোসেন কিছুদিন আগে দুর্গাপুর থানা থেকে রাজশাহী মহানগর পুলিশে (আরএমপি) বদলি হয়েছেন। এখন তিনি মহানগর আদালতে কর্মরত। শুক্রবার এ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আরএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন শাহিনুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে আবদুস সালামের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে ২০১৪ সালের ২ মার্চ আবদুস সালাম মারা যান। নিয়ম অনুযায়ী, কিছুদিন পর শাহিনুল ইসলাম থানার কনস্টেবল সারোয়ার হোসেনের কাছে সনদ জমা দিয়ে আসেন এবং থানার মুন্সি হিসেবে সারোয়ারকে তা যথাযথভাবে নথিভুক্ত করতে অনুরোধ করেছিলেন।

এ ঘটনা জানার পর শাহিনুল ১৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মহানগর আদালতে কনস্টেবল সারোয়ারকে পেয়ে যান। এ সময় তার বাবার মৃত্যু সনদটি ফেরত চান শাহিনুল। কিন্তু সারোয়ার সেটা ফেরত না দিয়ে ঠিক করে দেয়ার কথা বলে শাহিনুলের কাছ থেকে আরও পাঁচ হাজার টাকা নেন। তখন সারোয়ার তাকে বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। ফলে সনদটির আর দরকার হবে না। এদিকে ২১ সেপ্টেম্বরের পর শাহিনুল আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার বাবার মৃত্যু সনদটি না পাওয়ায় মামলাটি আদালত নিষ্পত্তি না করে পরবর্তী তারিখ ফেলেছেন। তার বাবার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানাটি জারি রয়েছে। পরে ২২ সেপ্টেম্বর শাহিনুল প্রতারণা, দায়িত্ব অবহেলা ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কনস্টেবল সারোয়ারের বিরুদ্ধে আরএমপির কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত কনস্টেবল সারোয়ার হোসেন বলেন, আমি কারও মৃত্যু সনদ নিইনি। আমার মনে পড়ছে না। আমি শাহিনুলকে চিনি না। সারোয়ার পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, শাহিনুল দলবল নিয়ে উল্টো আদালতে এসে আমার ওপর হামলার চেষ্টা করেছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ওসি রুহুল আলম বলেন, আবদুস সালাম নামের কারও মৃত্যু সনদ নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি তিনি জানেন না।

Check Also

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।