রাখাইনে এখনো নির্যাতন চলছে : জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী হাইকমিশনার বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা সকলেই বিধ্বস্ত

জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতন এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই অমানবিক নির্যাতনে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখেন এবং নির্যাতিত অনেক রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষের সাথে কথা বলে তাদের নির্যাতনের বীভৎস কাহিনী শুনেন।

পরে আজ রোববার দুপুরে কক্সবাজারস্থ ইউএনএইচসিআর কার্যালয় প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোহিঙ্গাদের যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা সকলেই মানসিকভাবে আহত এবং চরমভাবে বিধ্বস্ত। কেউ গুলির আঘাতে আহত, কেউ ধর্ষণের শিকার। তিনি তার বক্তব্যে সেনাদের হামলায় গুরুতর আহত রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা দেশত্যাগ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এমুহূর্তে তাদের জন্য খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা, আশ্রয় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী খুবই প্রয়োজন। তিনি এখনও রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতন অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন ও গণহত্যা বন্ধ করার আহবান জানান।

জাতিসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য আগ্রহী। কিন্তু সমস্যা সমাধানের মূল বিষয়টি মিয়ানমারের কাছে। তাই মিয়ানমারকেও এই সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতে হবে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সামাল দেয়া বাংলাদেশ সরকারের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। তাই তিনি দাতাসংস্থাগুলোকে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা একদিকে রাষ্ট্রবিহীন জনগোষ্ঠী অন্যদিকে তাদের নাগরিকত্বও নেই এই দুইটি বিষয় তার মনে বেশি বেদনা সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, ‘আমার কক্সবাজার আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধন কিভাবে করা যায় তার উপায় খুঁজে বের করা।

Please follow and like us:

Check Also

‘জলবায়ুু পরিবর্তন’ —– ঝুঁকিতে উপকূলের ৪০ শতাংশ কৃষিজমি

বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দুই লাখ ৪০ হাজার কৃষকের আবু সাইদ বিশ্বাস,সাতক্ষীরাঃ ‘জলবায়ুু পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।