SAMSUNG CAMERA PICTURES

অতিথি পাখিরা আবারও রাণীশংকৈলে ফিরে এসেছে

মোঃ আনোয়ার হোসেন আকাশ: শুরু হয়েছে শীতকাল। প্রকৃতির চেহারা ক্রমান্নয়ে পাল্টে যাচ্ছে। পরিবর্তন হচ্ছে আবহাওয়া। শীত আসার সাথে সাথে দেখা মিলছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির। আর বরাবরের মতো এবারও ঠাকুরগাও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার কেউটান গ্রামে অতিথি পাখি পানকৌড়িরা আবারও ফিরে এসেছে। রাণীশংকৈল-কাঁঠালডাঙ্গী প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শিমুল গাছ। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কুলিক নদী। যার রুপ লাবণ্য মনোরম করে তুলেছে কিনারের কাশবন। হাল্কা হিমেল হাওয়ায় দোল খায়। চাষীরা ক্ষেতে কাজ করে আপন খেয়ালে। সব মিলিয়ে পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের গ্রাম বাংলার রুপ লাবণ্য এক অপরুপ রুপে বিকাশমান। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা শিমুল গাছের ডগায় বসে থাকা পানকৌড়ি পাখির ঝাঁক। পাখিটি দেখতে বেশ সুন্দর। লম্বা ঠোঁট, দেহের আকারও তাই। লম্বা শরীর নিয়ে বসে থাকে কালো শরীর নিয়ে। এরা সাধারণত মাছ, পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। পাখিগুলো প্রতিদিন হাজারো মানুষের নজর কাড়ে। পথচারিরা অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে পাখিগুলোর দিকে। এখানকার গ্রাম, মানুষের সাথে যেন এক নিবিড় সম্পর্কের বাঁধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে পাখিগুলো। মনে হচ্ছে এখানকার মানুষগুলো যেন তাদের কতই না চেনা। গ্রামের প্রতিটি মানুষের গায়ের গন্ধ যেন তাদের নাকে লেগে আছে। গ্রামের মানুষগুলো যেন পাখিগুলোকে সন্তানের মতো আগলে রাখে। সেখানকার মানুষের সাথে কথা বললে মনে হয় পাখিগুলো তাদের কত আপন। যেন এক আত্মার। পাখিগুলো সাইবার অঞ্চল থেকে আসে। সেখানে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার কারনে এই এলাকায় চলে এসেছে এরা। এই শিমুল গাছটি তাদের নিরাপদ আশ্রয় ভেবে তারা প্রতি বছর এখানেই আসে। পাখি শিকারীরা অনেক সময় এদের মারতে এসে গ্রামের মানুষের হাতে হ্যাস্ত ন্যাস্ত হয়েছে চরমভাবে। অনেকে আবার কিল ঘুষিও খেয়েছে। যার ফলে এখন আর কেউ এদের শিকার করতে আসেনা। কারন সবাই জেনে গেছে শিমুল গাছের পাখিগুলো শিকার করতে গেলে সমস্যা আছে। এখানকার মানুষেরা সারাদিন গাছের আশ পাশে কাজ করলেও কোন বিচলিত ভাব পাখিদের মাঝে দেখা যায় না। অথচ অপরিচিত লোক শিমুল গাছের কাছাকাছি গেলেই তারা ডাকাডাকি শুরু করে দেয়। তারা এলাকার মানুষদের জানিয়ে দেয় কে যেন তাদের মারতে এসেছে। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় পাখিগুলো ২৫ শে অক্টোবর’১৭ শিমুল গাছে এসেছে। কিছু পাখি এসেছে কয়েকদিনের মধ্যে আরো পাখি আসবে। পুরো গাছ পাখিতে ভরে যায় প্রতি বছর। পাখির ডাক শুনে বেশ ভাল লাগে। প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। সকাল হলে এরা খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর সহ বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। বিকাল হলে আহার শেষে আবার শিমুল গাছে ফিরে আসে। এখানে ৬ মাস পর্যন্ত থাকে তারপর শীত শেষ হলে আবার চলে যায়।
কথা হলে হোসেনগাও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুব আলম বলেন, পাখিগুলো এলাকার মানুষের খুব কাছের বন্ধুর মতো। শীত শুরু হলেই এরা প্রতি বছর কেউটান গ্রামের শিমুল গাছে আশ্রয় নেয়। গ্রামবাসি নিজ সন্তানের মতো এদের আগলে রাখে। গ্রামবাসির ভয়ে কোন পাখি শিকারী এদের মারতে সাহস পায়না।

 

 

 

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।