বিপন্ন মানবতা : বিপন্ন রোহিঙ্গা ॥ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন অপরিহার্য

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:মিয়ানমারের উপর বিশ্ব নেতৃত্ব বর্তমান সময়ে ব্যাপক ভিত্তিক চাপ দিয়ে চলেছে, আর বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বের চাপ অতি দ্রুত বাংলাদেশ হতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। মিয়ানমারের অতি প্রাচীন জনপদ আরাকান বর্তমান সময়ে শূন্যতা আর অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মমতা, বর্বরতা আর নৃশংসতা সব ধরনের মানবতা আর মানবিক মূল্যবোধ কে ক্ষত বিক্ষত করেছে। বিশ্বের দেশে দেশে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চরম অমানবিক আর মানবতা বিরোধী হিসেবে পরিচিত, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্বারক সই হলেও এখনও পর্যন্ত রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে তারিখ নির্ধারন হইনি, বিশ্ব সম্প্রদায় তথা আন্তর্জাতিক বিশ্ব চাইছে মিয়ানমার অতি দ্রুততার সাথে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত নিক। বাংলাদেশ সরকার ও চাইছেন রোহিঙ্গারা অতি দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যাক। আন্তর্জাতিক বিশ্বে মিয়ানমার বর্তমান সময়ে চরম অমানবিক দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পক্ষান্তরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিশ্বে তথা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে উদার এবং মানবিক দেশ হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। খ্রীষ্টান ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিস বর্তমানে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে আয়োজিত সম্বর্ধনা সভায় পোপ ফ্রান্সিস বলেন বিশ্বে বাংলাদেশ বিশেষ সুনাম এবং প্রশংসা কুড়িয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমার এবং দেশটির সেনাবাহিনীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দৃশ্যতঃ মানবতা আর মানবিক মূল্যবোধের সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, আমাদের দেশের বাস্তবতায় লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া কম সমস্যার বিষয় নয়, নানান ধরনের প্রতিকুলতাকে টপকিয়ে মানবিক মূল্যবোধ আর মানবতায় বিশ্বাসী হয়ে রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে। খ্রীষ্টান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন বাংলাদেশ শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির গুলোতে বিরাজ করছে বোবা কান্না, লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলা আর মহিলাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গর্ভবতী। হাজার হাজার শিশুর নানান ধরনের অপুষ্টিতে ভোগা এবং রোগ ব্যাধির বিষয়টি বিশেষ ভাবে আলোচিত। কক্সবাজার শরনার্থী শিবির গুলোতে বিপুল সংখ্যক বৃদ্ধের অবস্থান ক্যাম্পগুলোতে মানবিক বিপর্যয় বিরাজ করছে তবে বাংলাদেশ সরকার আশ্রীত লাখ লাখ রোহিঙ্গাদেরকে থাকা খাওয়া সহ সব ধরনের মানবকি সহায়তা প্রদান করে চলেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব তথা বিশ্ব সম্প্রদায় বারবার মিয়ানমারের অপ্রতিরোধ্য অবস্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে আর আন্তর্জাতিক বিশ্ব মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। বলেই মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ করে সর্বশেষ রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত নেওয়ার লক্ষে বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্বারক সই করেছে। বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ অপেক্ষার প্রহর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। আন্তর্জাতিক বিশ্ব অবশ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। বিশ্বের দেশে দেশে রোহিঙ্গা নির্যাতন আর তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কঠোর অবস্থান নিলেও ভেটোক্ষমতার অধিকারী দুইটি দেশের জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলেও মিয়ানমার কে থামানো এবং হত্যাযজ্ঞ দমনে বিশেষ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দৃশ্যতঃ নির্যাতন নিপিড়ন এবং বর্বরতার জন্য আলোচিত বা পরিচিতি পেলেও মিয়ানমার সরকার এর ইচ্ছা ব্যতিত সেনাবাহিনী গণহত্যা করার সাহস পাইনি। রোহিঙ্গা সংকট নিষ্পত্তির একমাত্র পথ অবলম্বে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেওয়া।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।