বিশ্বজিৎ হত্যার পাঁচ বছর, দণ্ডিতরা দলীয় কর্মসূচি ও ফেসবুকে সক্রিয়

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট: ঢাকা : পুরান ঢাকার রাস্তায় নিরীহ পথচারী যুবক বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের বিচার শেষে হাইকোর্টের রায়ও প্রকাশ হয়েছে। এ মামলার পলাতক ফাঁসির আসামি ও যাবজ্জীবন শাস্তি পাওয়া আসামিদের স্থায়ী ঠিকানায় গেছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। কিন্তু সেটা তামিল না হয়ে সংশ্নিষ্ট থানায় ফাইলবন্দিই পড়ে আছে। গত পাঁচ বছরে গ্রেফতার হয়নি পলাতক ১৩ আসামি। পুলিশের খাতায় তারা পলাতক থাকলেও অধিকাংশ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশ্বজিতের ক’জন স্বজন হতাশা প্রকাশ করে জানান, তারা গরিব। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ গ্রেফতার করছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পলাতক আসামিদের রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তারা নিয়মিত পোস্ট দিচ্ছে রাজনৈতিক কর্মসূচির ছবি। এসব কারণে সংশ্নিষ্ট থানা পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে মোটেও তৎপর নয়।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানেন, পলাতক বেশিরভাগ আসামি বিদেশে চলে গেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ধরনের কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি। বিদেশ গেলেও হত্যা মামলার আসামিদের ফিরিয়ে আনা কিংবা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির তৎপরতাও নেই। নেই আসামিদের গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় মনিটরিং। পলাতক ক’জন আসামির স্থায়ী ঠিকানার থানাগুলোতে যোগাযোগ করেও পাওয়া গেছে একই চিত্র।

বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ চলাকালে ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর সকালে পুরান ঢাকার বাহাদুরশাহ পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্বজিৎকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য এবং ওই ঘটনায় গ্রেফতার আসামিদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ককটেল নিক্ষেপকারী ভেবে নিরীহ-নির্দোষ ওই যুবকের ওপর হামলা চালানো হয়। গণমাধ্যমে সেই বীভৎস হত্যার ছবি প্রকাশ পেলে দেশ-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে সর্বস্তরের মানুষ খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। তবে শুরু থেকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঘটনায় জড়িত কেউ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নন, তারা অনুপ্রবেশকারী।
ঘটনার এক বছর পর ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে রায় দেন। রায়ে রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিয়া, রাজন তালুকদার ও মীর নূরে আলম লিমনকে

০৯ ডিসেম্বর ২০১৭,শনিবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি

Please follow and like us:

Check Also

বাংলাদেশি জাহাজ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ৮ জলদস্যু গ্রেফতার

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ অপহরণে যুক্ত ৮ জলদস্যুকে আটক করেছে সোমালিয়ার পুলিশ। রোববার জাহাজটিকে মুক্তি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।