বিধ্বস্তের আগে পাইলট যা বলেছিলেন নিয়ন্ত্রণকক্ষে

ত্রিভুবন বিমানবন্দরের রানওয়েতে আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় ইউএস বাংলার বিমানটিতে। কিন্তু বিধ্বস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত পাইলটের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। সর্বশেষ পাইলট জানিয়েছিলেন কোনো সমস্যা নেই। তবে তিনি বিমানটিকে একটি নির্দিষ্ট দিকে অবতরণ করাতে চাইছিলেন। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক রাজ কুমার ছেত্রি বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রাজ কুমার ছেত্রি বলেন, বিমানটি অবতরণের অনুমতি পাওয়ার পর পাইলট বলেন, তিনি উত্তর দিকে অবতরণ করতে চান। তখন কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোনো সমস্যা আছে কি না। জবাবে পাইলট বলেছিলেন, কোনো সমস্যা নেই।

কিন্তু বিমানটি অবতরণের আগে দুবার আকাশে চক্কর দেয়। তখন নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে আবারো জানতে চাওয়া হয়, সবকিছু কি ঠিক আছে? তখনও পাইলট জানান, ঠিক আছে। এরপর অবতরণে অসংগতি দেখে নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে পাইলটকে জানানো হয়, বিমানটি ঠিকভাবে অবতরণ করছে না। কিন্তু পাইলটের কাছ থেকে আর কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

মহাব্যবস্থাপক বলেন, অবতরণের সময় বিমানটি যথাযথ নির্দেশনায় থাকা উচিত ছিল। কিন্তু কোনো কারণে ওই নির্দেশনায় ছিল না। একপর্যায়ে উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে ও সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়।

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে দেয়া ভুল বার্তার কারণে সোমবার বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকাস্থ ইউএস বাংলার কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ তথ্য জানান।

ইমরান আসিফ বলেন, বিমানের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে এর অডিও বার্তা ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে। যে কেউ ইউটিউবে গেলে সেটি শুনতে পারবেন।

বিমানটি দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫০ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা। ৬৭ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুরে ছেড়ে যায় বিমানটি। দুপুরে পৌঁছানোর পরপরই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি ইনডিপেন্ডেন্ট স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে জানাচ্ছে, বিমানটি কাঠমান্ডু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে (২নং প্ল্যাটফর্ম) থেকে পাশের ফুটবল খেলার মাঠে বিধ্বস্ত হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্লেনটি বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ মডেলের এস২-এজিইউ। বাইরে পাখাবিশিষ্ট এ ধরনের প্লেনে সর্বোচ্চ ৭৮টি আসন থাকে।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।