ফেসবুক আসক্তির কারণেই স্ট্যাটাস দিয়ে ফাহিমের আত্মহনন!

প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মবিসর্জনকারী উদীয়মান মডেল ফাহিম শাহরিয়ার সৌরভ তার মমতাময়ী মা রাশেদা আক্তার রেনুর কবরের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত হয়েছেন।

মঙ্গলবার রাত ১০ টায় কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ শামসুদ্দিন ভূইয়া মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাযে জানাজা শেষে তাকে মসজিদ সংলগ্ন মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দূরারোগ্য ব্যধিজনিত কারণে তার মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পর থেকে বড়বেশি ভেঙে পড়েছিলেন সৌরভ। এদিকে এক তরুণী মডেলকে পছন্দ করতেন সৌরভ। উভয় পরিবারও তাদের এ সম্পর্কের বিষয়টিকে সাদরে সম্মতিও জানিয়েছিলেন।

সম্প্রতি মডেলিংয়ের কারণে নওরীণের অবাধ চলাফেরায় বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু হয়। সোমবারদিন সকালেও নওরীণ একটি বিশেষ এ্যাসাইনমেন্টের কাজ করার সময় সেখানে হাজির হয়ে সৌরভ তার সঙ্গে বচসায় লিপ্ত হন এবং খারাপ আচরণ করেন বলে সৌরভের বাবা বিশিষ্ট ছড়াকার ও শিশু সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর আলম জাহান জানান।

আর এ ঘটনার পর ওইদিন রাতেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মোহাম্মদপুরের পুলপাড়া এলাকার বাসায় আত্মহননের পথ বেছে নেন সৌরভ। এ আত্মহননের ঘটনাটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের টপ ভাইরাল হয়ে উঠেছে।

মডেল সৌরভের পিতা জাহাঙ্গীর আলম জাহান জানান, তার মধ্যে এমন ইগো কাজ করতো যে তার ভালবাসার মানুষটি অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে ও কাজ করতে পারবে না। এমন ইগোই তার এই নিষ্ঠুর পরিণতি ডেকে এনেছে।

সৌরভের চাচা মানবাধিকার নাট্য সংগঠনের জেলা সভাপতি হারুন আল রশীদ মনে করেন, ফেসবুক আসক্তির কারণেই তার মধ্যে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহননের প্রবণতা এসেছে। আর কোন মা-বাবার সন্তান যেন এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে তাদের বুক খালি না করেন সৌরভের বাবা ও চাচা চোখের জলে বুক ভাসিয়ে সকল সন্তানদের প্রতি এমন আহ্বান রেখেছেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা কবি জাহাঙ্গীর আলম জাহানের একমাত্র পুত্র সন্তান ফাহিম শাহরিয়ার সৌরভ ঢাকার ডেফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে লেখাপড়া শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং এক্সিকিউটিব হিসাবে চাকরি করতেন। মোহাম্মদপুরে বাসা নিয়ে বসবাস করছিলেন কয়েক বছর ধরে।

এক পর্যায়ে শোবিজের রঙিন দুনিয়ার হাতছানিতে মডেলিংয়ের কাজেও জড়িয়ে পড়েন সুদর্শন যুবক সৌরভ। ওখানে কাজ করার সময় পরিচয় হয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রীর। তিনিও মডেলিং করতেন। দিনে দিনে এ সম্পর্ক প্রেম ভালবাসায় রূপ নেয়।

এখান থেকেই শুরু হয় হাত ধরাধরি করে জীবন সাজানো ও জীবন রাঙানোর গল্প।কিন্তু। তুচ্ছ ব্যক্তিগত ইগু ও ফেসবুক আসক্তি নিষ্ঠুর পরিণতি টেনে দেয় এ গল্পের।

Please follow and like us:

Check Also

পাঁচ দিন পর শুরু হলো ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে পাঁচদিন পর শুরু হলো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। গত ১০ এপ্রিল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।