খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

ঢাকা: দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় বিএনপি। চিন্তিতও বিএনপি নেতা-কর্মীরা। অসুস্থতার আড়ালে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে ‘মাইনাস ওয়ান’ ফর্মুলা বাস্তবায়নের ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে। উদ্বেগ শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যেই নয়, অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের হঠাৎ ‘নাটকীয়’ সংবাদে উদ্বিগ্ন। সেই সাথে দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষও বিষয়টি নিয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠছেন। কারণ, এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্যই কোনো পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে না। একেকজন একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা শুধু বাড়ছেই। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে শেষ হবে -সেটাই বড় উদ্বেগের কারণ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ পরিস্থিতিতে আগামীকাল রোববার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার মুক্তির দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা বলছেন। যাতে তিনি অসুস্থ হলে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করছেন খালেদা জিয়া। হাঁটু ও পিঠের ব্যথা বেড়েছে তার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত ২৮ মার্চ, বুধবার তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল কারাগারে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেছেন, ‘কারা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়া কারা কর্তৃৃপক্ষকে বলেছেন তিনি অসুস্থতা অনুভব করেছিলেন। এরপর সিভিল সার্জনকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে।’ খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে নির্ধারিত সাক্ষাৎটি বাতিল করে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা কারাবিধি মেনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে কারাগারে খালেদা জিয়ার নিয়মিত চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান জানান, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন।’
শুক্রবার বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে দলের মহাসচিব বলেন, ‘বেগম জিয়ার হঠাৎ অসুস্থতার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন, উৎকণ্ঠিত। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এ মুহূর্তে বিদেশে পাঠানো দরকার। এ জন্য প্যারোলে নয় তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’ গতকাল সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বক্তব্যের পর দুপুরে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকার নির্দয় হতে পারে না। তার চিকিৎসার জন্য যা করা দরকার সবই হবে। তার চিকিৎসার জন্য যেখানে প্রয়োজন নেয়া হবে, দেশে হোক বিদেশে হোক।’
এদিকে, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ‘বিএনপি মিথ্যাচার করছে’ অভিযোগ করে শনিবার ওবায়দুল কাদের ফের বলেন, ‘প্রয়োজনে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’ সবমিলিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ধোঁয়াশা। প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছেন বিএনপি নেতা-কর্মীসহ দেশবাসী। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের মহাসচিবকে দেখা করতে না দেয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানামুখী আশঙ্কা ও ক্ষোভের। পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি চেয়েছেন দলটির মহাসচিব। এর আগে সরকারের বিরুদ্ধে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতা গোপনের অভিযোগ আনেন তার আইনজীবীরা। বুধবার দুপুরে বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত থেকে বের হয়ে আইনজীবীরা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। তাঁর সুচিকিৎসা প্রয়োজন। দলটির মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টিকে আমরা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছি না। অন্যান্য স্বৈরাচাররা যেভাবে প্রতিপক্ষকে অপসারণ করার চেষ্টা করে, সেই ধরনের অপসারণ করার চেষ্টা এখানে হতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করি।’
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যখন চারদিকে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে তখন শুক্রবার পরিবারের কয়েকজন সদস্য তার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী, তাদের দুই সন্তান ও জিয়া পরিবারের ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী রহমানসহ ৬ জন কারাগারে যান। সাক্ষাৎ শেষে পৌনে ৬টায় তারা কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। তবে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বা অন্য কোনো বিষয়ে তারা গণমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরে হাঁটুর ব্যথায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। ব্যথার কারণে জ্বরও এসেছিল। বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেখানে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের অধীনে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক টিম তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। রয়েছেন একজন ডিপ্লোমা নার্সও। কারা
সূত্র জানায়, ২৮শে মার্চ অসুস্থতাজনিত কারণেই খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি। এরপর থেকেই তার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে তৎপরতা বাড়ানো হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়াকে দেখতে কারাগারে যান ঢাকার সিভিল সার্জন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরে খালেদা জিয়া কথাবার্তাও বলেছেন অন্যান্য দিনের চেয়ে কম। নির্জন কারাগারে খালেদা জিয়ার নিয়মিত চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বয়স ৭৩ বছর। এই বয়সে তো কিছু সমস্যা থাকেই। এ ছাড়া আগে থেকেই তিনি ব্যাক পেইন, হাঁটুতে ব্যথা ও আর্থাইটিসে ভুগছেন। সেই সমস্যাগুলোর কারণে মাঝেমধ্যেই শরীর খারাপ হতে পারে। কিন্তু যেমন বলা হচ্ছে, তেমন কোনো অসুস্থতা নেই। আমরা সার্বক্ষণিক তাঁর খবর রাখছি।’
এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত আইজি প্রিজন কর্নেল ইকবাল হাসান জানান, খালেদা জিয়া আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। এসব সমস্যা একটু বেড়ে গিয়েছিল। যে কারণে তিনি অসুস্থবোধ করছিলেন। এখন তিনি সুস্থ আছেন। কারা বিধি অনুসারে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছি। প্রকৃত অবস্থা কিছুই জানি না। বিএনপি চেয়ারপারসনকে বুধবার আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও তার অসুস্থতার কথা বলে তাকে আদালতে হাজির করেনি কারাকর্তৃপক্ষ। তারই প্রেক্ষিতে ম্যাডামের চার জন ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় নিয়মরীতি মেনে তার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারা সাক্ষাৎ করতে পারেননি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীদের ধারণা ছিল দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তিনি জামিন পাবেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পরপর উন্নত চিকিৎসার নামে সরকার তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দিতে পারে- এমন একটি গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। বিএনপি নেতাদের মধ্যেও এমন একটি আশঙ্কা ছিল। বিএনপি নেতারা জানান, সরকার মনে করেছিল খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে রাজনীতিতে ইমেজ সংকটে ফেলা যাবে। অন্যদিকে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির মাধ্যমে ভাঙন ধরানো যাবে। কিন্তু কারাগারে পাঠানোর পর খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার পারদ দিনদিন ঊর্ধ্বমুখী। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঐক্যও এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি মজবুত। ফলে দলে ভাঙন ধরানো ও খালেদা জিয়ার ইমেজ ক্ষুণœ করতে সরকারের কৌশল কাজে আসেনি।
নেতারা জানান, খালেদা জিয়া এমনিতে বয়স্ক, তার ওপর তিনি অতীতে হাঁটুর অপারেশনসহ বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিয়েছেন। ফলে তার অসুস্থতা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি, নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও বিএনপিকে অন্ধকারে রেখে উন্নত চিকিৎসার নামে তাকে বিদেশ পাঠানোর অপকৌশলটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারে সরকার। গত কয়েকদিনে সে আশঙ্কাটিই আবার সামনে এসেছে। বিশেষ করে দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপির শীর্ষনেতারা। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, চিকিৎসার নামে বেগম জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে সরকার ‘মাইনাস ওয়ান’ ফর্মুলা বাস্তবায়নে এখন উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু দেশের মানুষ সরকারের এ ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বিতর্কের আড়ালে আসলে কী হচ্ছে?
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন, নাকি তিনি অসুস্থ- এ নিয়ে গত ২৮ মার্চ থেকে জনমনে নানা বিভ্রান্তি ডালপালা ছড়িয়েছে। সরকার-বিএনপি এবং কারা কর্তৃপক্ষের নানা ধরনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে বিষয়টি আরও জটিল হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এদিকে পূর্বনির্ধারিত থাকার পরও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়ার ঘটনাসহ পুরো বিষয়টিকে বিএনপির হাইকমান্ড ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে। তাদের প্রথম সন্দেহ; বিএনপির রাজনৈতিক এজেন্ডা সরকার বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে বলেই ফখরুলকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
একটি সূত্রের দাবি, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে তৃতীয় ধারার কয়েকটি দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে খালেদা জিয়ার মতামত নেওয়াসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক এজেন্ডা নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনার কথা ছিল মির্জা ফখরুলের।
বিএনপির দ্বিতীয় সন্দেহ, অসুস্থতার নামে খালেদা জিয়াকে চাপ দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার চক্রান্ত করছে।
তৃতীয়ত, বিএনপির ভেতর নানা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দলটিকে দুর্বল করতে চাইছে সরকার। এমনকি খালেদার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রয়োজনে বিএনপিকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও মনে করেন দলটির স্থায়ী কমিটির নেতারা।
দলটির স্থায়ী কমিটির অন্তত চারজন সদস্য বলেন, সরকারের মূল টার্গেট, বিএনপির মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। যে কারণে মির্জা ফখরুলকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। জেল কর্তৃপক্ষ হঠাৎ ফোন করে জানিয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন অসুস্থ, দেখা হবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মতে, সরকার নানাভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। এর আগেও তারা বিএনপিতে নানা বিভ্রান্তি তৈরি করে ব্যর্থ হয়েছে। সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই মহাসচিব হিসেবে ফখরুল সাহেবকে কারাগারে চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।
খালেদা জিয়ার জামিন পেতে আপিল বিভাগে যাবেন আইনজীবীরা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন তার আইনজীবীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, কারা কর্তৃপক্ষ বলছে না তিনি কতটা অসুস্থ। তিনি কী কারণে অসুস্থ এবং কতটা অসুস্থ এ বিষয়ে সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ কিছুই জানাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার প্রয়োজন। এ অবস্থায় আইনজীবীরা চিন্তা করছেন আদালতে আবেদন করে তার জামিন আবেদনের শুনানি এগিয়ে আনা যায় কি না। এ জন্য আগামীকাল রোববার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার অসুস্থার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে জামিন করানোর চেষ্টা করবেন।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে না, তিনি কতটা অসুস্থ। সরকারও এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কিছু জানাচ্ছে না। তার অসুস্থতার বিষয়ে কিছু জানানো হচ্ছে না। আমরা অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি এগিয়ে আনার চেষ্টা করব। কাল আমরা আপিল বিভাগে যাবো। চেষ্টা করব বেগম খালেদা জিয়ার জামিন কারানোর জন্য।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরপরই বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত থেকে গ্রেফতার করে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে রাখা হয়।

Please follow and like us:

Check Also

অনিশ্চয়তার নতুন যুগে মধ্যপ্রাচ্য

ইউক্রেন-রাশিয়া রেশ কাটতে না কাটতেই ফিলিস্তিনের গাজায় শুরু হয় ইসরাইলি আগ্রাসন। এরপর থেকে অশান্ত হতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।