আব্দুস সামাদ: আশাশুনির ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম-প্রহরী নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়োমের ঘটনায় ৪ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। আশাশুনির উত্তর চাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশাশুনির নুর বক্স সরদারের ছেলে মো. মাহবুবুল হক বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণ করেছেন বলে জানা গেছে।
মামলার আসামীরা হলেন- নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি আশাশুনি উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানা, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সামছুন্নাহার, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি শম্ভুজিত মন্ডল ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি কোদন্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুদ্ধদেব। তবে, মামলায় উল্লেখিত ৪ জন আসামী ছাড়াও আরও বেশ কয়েক জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলাটি পেনাল কোর্টের ৪০৬/৪০৯.৪২০ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) নং ধারা দুর্নীতি দমন কমিশনের তফশীলভূক্ত অপরাধ হওয়া অভিযোটি দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিলের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
মামলায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরকারি নীতিমালার লঙ্ঘন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শন না করা, তড়িঘড়ি করে নিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ, প্রার্থীদের স্বাক্ষর জাল করা, উপজেলা চেয়ারম্যান বিদেশে থাকা অবস্থায় অনুমোদন, ৭টি বিদ্যালয়ে মাত্র ১ জন করে প্রার্থীর উপস্থিতি, জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশ অমান্য করা, প্রার্থীদের কাছ থেকে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা হারে প্রায় ৩ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা গ্রহণসহ বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আশাশুনি উপজেলার ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম-প্রহরী নিয়োগের জন্য ২০১৭ সালের ৬, ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়। পরীক্ষায় ৩৬টি বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়ার নাম করে এক বা একাধীক প্রার্থীরা নিকট থেকে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা করে প্রায় ৩ কোটি টাকা ঘুষ বানিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়োম সামনে আসলে দৈনিক পত্রদূত পত্রিকায় কয়েক দফা সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশে পর বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসার পরীক্ষা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। একই উচ্চ আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে অনিয়মের তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন। নিয়োগ বোর্ডে সকল আদেশ লঙ্ঘন করে প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সমাপ্ত করেছেন। বর্তমান নিয়োগ প্রাপ্তরা স্ব স্ব কর্মস্থলে কর্মরত আছেন।
Check Also
ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা
জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …