অর্ধশত বছরের মধ্যেই ইসলাম হবে ‘বড় ধর্ম’

ডয়চে ভেলে : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার এক প্রতিবেদনে বলেছে, আগামী ২০৭০ সালে অনুসারীর সংখ্যায় বিশ্বের অন্য সব ধর্মকে ছাড়িয়ে যাবে ইসলাম। অর্থাৎ ৫৩ বছর পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি থাকবে মুসলমান। ২০১০ সালে সারা বিশ্বে মোট ২১৭ কোটি মানুষ খ্রিষ্ট ধর্ম অনুসরণ করতো। তারপরই ছিল ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা। তখন বিশ্বে মোট ১৬০ কোটি ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছিল। কিন্তু পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদন বলছে, ৫ দশক পর খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের পিছনে ফেলে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি হয়ে যাবে মুসলমান।

জন্মহার সবচেয়ে বেশি: কেন এত দ্রুত ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বাড়বে? বলা হচ্ছে, সারা বিশ্বে মুসলমানদের জন্মহার বেশি আর মূলত এ কারণেই সংখ্যায় সব ধর্মকে পিছনে ফেলবে তারা। মুসলমানদের শিশু জন্মহার ৩ দশমিক ১ শতাংশ আর খ্রিষ্টানদের ২ দশমিক ৭ শতাংশ।

তরুণ অনুসারী বেশি: অন্য সব ধর্মের তুলনায় ইসলাম ধর্মের তরুণ অনুসারী বেশি। এ মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের নীচে। অন্যদিকে ৩৪ শতাংশ ইসলাম ধর্মবলম্বীর বয়স ১৫ বছরের কম। তার মানে, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তুলনায় ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বেশি দিন সন্তান জন্ম দেয়ার সুযোগও বেশি।

নাস্তিক কমবে : পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে নাস্তিক অনেক কমবে। এখন যেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ নাস্তিক, সেখানে ২০৫০ নাগাদ তা কমে হবে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ।

২০৭০ সালে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মুসলমান

পিউ রিসার্চ সেন্টারের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে আরো যে বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে, তা হলো, ২০১০ সাল থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এই সময়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বাড়বে ৭৩ শতাংশ। ফলে এক সময় স্বাভাবিক কারণেই সংখ্যায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ছাড়িয়ে যাবে ইসলাম। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০৭০ নাগাদ সারা বিশ্বে মুসলমানই সবচেয়ে বেশি থাকবে।- ডয়চে ভেলে

এদিকে, নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রায় ৫৪,০০০ জন মাধ্যমিক স্টুডেন্ট ইসলাম ধর্মের শিক্ষা পাচ্ছে যদিও আরো দশগুণ স্টুডেন্ট ইসলামি শিক্ষা নিতে আগ্রহী।বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইসলামের শিক্ষা চরমপন্থী হতে নিরুৎসাহিত করে তাই এটা খুবই জরুরি।প্রতিটি মুসলিম স্টুডেন্ট যথাযথভাবে ইসলামের শিক্ষা পাচ্ছে না বলেও সমীক্ষায় বলা হয়। খবর ডয়েচেভেলে- জার্মানির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী দুই বছর আগেও ৮০০ টি স্কুলে ৪২,০০০ জন স্টুডেন্ট ইসলামি শিক্ষা নিত বর্তমানে তা বেড়ে ৫৪,০০০ জনে পৌছেছে। আগামীতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে।

‘মুসলিম লাইফ ইন জার্মানি’ শিরোনামে ২০০৮ সালের ওই রিপোর্টে বলা হয় প্রায় ৫,৮০,০০০ জন স্টুডেন্টের ইসলামি শিক্ষা প্রয়োজন।বর্তমানে বিপুল সংখ্যক মুসলিম শরণার্থী জার্মানিতে অবস্থান করছে তাই এ সংখ্যা বর্তমানে আরো অনেক বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে।নির্দিষ্ট সংখ্যা না জানা গেলেও ওসনাব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রউফ সাইলান বলেন, জার্মানিতে ছয় থেকে আঠারো বছর বয়সী মুসলিম জনসংখ্যার সংখ্যা প্রায় আট লক্ষাধিক। উল্লেখ্য, জার্মানিতে রাজ্য পর্যায়ে আলাদা আলাদা শিক্ষা ব্যাবস্থা বিদ্যমান। কিছু কিছু রাজ্যে ধর্মীয় শিক্ষা চার্চ থেকেই নিতে হয়। কোথাও কোথাও স্কুল নিজেই ব্যবস্থা করে আবার কোনো কোনো রাজ্যে ইসলামী শিক্ষা নিষিদ্ধ। হামবার্গ ও ব্রীমেন রাজ্যে সকল ধর্ম মিলিয়ে ক্লাস করানো হয়। আবার পূর্ব জার্মানের বার্লিন ব্যতিত সকল রাজ্যে ইসলামী শিক্ষা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।অন্যদিকে জার্মানিতে ইসলাম ধর্মের শিক্ষকদের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আবার অনেক স্কুল কমিটি চায় না তাদের স্কুলে ইসলামি শিক্ষা থাকুক। অনেক সময় কিছু কিছু অভিভাবকও চায় না তার সন্তান ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। এটা যে শুধু পদ্ধতিগত সমস্যা তা নয়।সাংবিধানিকভাবে জার্মানিতে ইসলামি শিক্ষার কোনো ভিত্তি নেই। এখানে কেবল তিনটি পদ্ধতিতে ধর্ম শেখা যায় তা হল- পরিবার, নিজ সম্প্রদায় এবং চার্চ বা মসজিদ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নাস্তিক শিক্ষক বলেন, আমি চায় না আমার স্টুডেন্টরা ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। তারা যদি ইসলামি শিক্ষা চায় তো মসজিদে যাক স্কুলে কেন? যদি তারা ধর্ম শিখতেই চায় আমি বলবো তারা যেন খ্রিস্টান ধর্ম শিখে।আরেক জার্মান শিক্ষক বার্গরাক স্বীকার করেন যে রাজ্যগুলোর কড়া তত্ত্বাবধানের কারণে আরব ও তুরস্কের তুলনায় জার্মানিতে মুসলিমরা যথাযথ শিক্ষার পরিবেশ পাচ্ছে না।

Please follow and like us:

Check Also

ঢাকায় প্রথম মহিলাদের ঈদের জামাত

বাংলায় মুসলমান সমাজে নারীদের প্রতিকূলতার ইতিহাস অনস্বীকার্য। নারীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বিবাহ ও অন্যান্য ব্যাপারে ইসলামের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।