TOPSHOT - Argentina's forward Lionel Messi reacts at the end of the Russia 2018 World Cup Group D football match between Argentina and Croatia at the Nizhny Novgorod Stadium in Nizhny Novgorod on June 21, 2018. Croatia won 0-3. / AFP PHOTO / Martin BERNETTI / RESTRICTED TO EDITORIAL USE - NO MOBILE PUSH ALERTS/DOWNLOADS

‘মেসির পায়ে গতি ছিল না, ছিলেন মনমরা’#-ক্রোয়েশিয়ার কাছে শোচনীয় পরাজয়#আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে টিকে থাকা হুমকির মুখে

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃপ্রথম খেলায় দুর্বল আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস করেন লিওনেল মেসি। ফলে ড্রতে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে।এরপর বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিতীয় খেলায় ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে বাজেভাবে হার। দেশটির ফুটবলের সমর্থকদের কাছে যা মেনে নেয়া অসম্ভব। কাজেই এ নিয়ে আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়াও ইতিবাচক না।দেশটির স্থানীয় টেলিভিশন ধারাভাষ্যকার ডিয়েগো লাতোররি সমালোচনায় মেসিকে তুলোধুনো করে ছাড়লেন।তিনি বলেন, মেসি বৈদ্যুতিক খাম্বার মতো স্থির হয়ে ছিলেন। তার পায়ে গতি ছিল না। পুরো ম্যাচে মেসি মনমরা হয়ে ছিলেন।

দেশটির সংবাদ মাধ্যম মেসি ও তার সতীর্থদের সমবেদনা কিংবা সান্ত্বনা দেয়ার ধারে কাছে যাচ্ছে না। বরং নিজেদের ফুটবল দলকে রীতিমতো ধুয়ে দিচ্ছে।আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম বলছে, এটি এমন একটা ফল, প্রিয় মানুষের লাশের মতো যার ভার সহ্য করা যায় না।ক্লারিন নামের একটি পত্রিকা লিখেছে, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনা বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে।তাদের ভাষ্য, আর্জেন্টিনা হতাশ করেছে এবং বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার পথে।লা নেসিওন নামের একটি পত্রিকা লিখেছে, আর্জেন্টিনা নাকি ক্রোয়েশিয়ার উপহাসের শিকার হয়েছে! এই হারে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে টিকে থাকা হুমকির মুখে পড়েছে।ক্রোয়েশিয়ার কাছে এই পরাজয়কে অপমানজনক হিসেবে উল্লেখ করেছে দ্য ইনফোবায়ি নামের আর্জেন্টাইন এক অনলাইন।মেসিদের নিয়ে টিপ্পনি কাটতে ছাড়েননি ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনা দলের ডিফেন্ডার অস্কার রুজ্জেরিও।আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরোকে নিয়ে তিনি বলেছেন, কাবায়েরোকে দলে নেয়া হয়েছে, কারণ সে পা দিয়ে ভালো খেলতে পারে।

 

আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে দিল ক্রোয়েশিয়া

 ভঙ্গুর ডিফেন্স আর দুর্বল মাঝমাঠের কড়া মাশুল গুনতে হলো আর্জেন্টিনাকে। এর ফায়দা লুটে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের উড়িয়ে দিল ক্রোয়েশিয়া। তাদের ৩-০ গোলে হারিয়েছেন ক্রোয়াটরা। এ জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেলেন তারা।
বিশ্ব আসরে ক্রোয়েশিয়ার বড় সাফল্য তৃতীয় স্থান অধিকার করা। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপে এ গৌরব অর্জন করে দেশটি। এবার যেভাবে খেলছে তাতে অনেক দূর য্ওায়ার সম্ভাবনা আছে তাদের।
নবাগত আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্রয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে আর্জেন্টিনা। ফলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে হলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জয় ভিন্ন কোনো বিকল্প পথ খোলা ছিল না তাদের।
এমন সমীকরণ নিয়ে নিঝনি নভোগরদ স্টেডিয়ামে শুরুটা আক্রমণাত্মক করে আর্জেন্টিনা। সূচনালগ্ন থেকেই নিজেদের দখলে বল রেখে একের পর এক আক্রমণ ওঠেন লিওনেল মেসিরা। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করেন তারা। সবচেয়ে বড় সুযোগ পান ৩০ মিনিটে। তবে ফাঁকায় বল পেলেও জালে জড়াতে পারেননি এনজো পেরেজ।

মিনিট তিনেক পর কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ সুযোগ তৈরি করে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু মারিও মানজুকিচের ব্যর্থতায় সাফল্যের মুখ দেখেনি দলটি। ক্রোয়াটরা সবচেয়ে বড় সুযোগ পায় বিরতির খানিক আগে। গোলরক্ষককে একা পেয়েও ঠিকানায় বল পাঠাতে পারেননি আন্তে রেবিক। বিরতির পর যেন সেই দায়ই শোধ করেন তিনি। ৫৩ মিনিটে গোলরক্ষক কাবাল্লেরোর ভুলে নিশানাভেদ করে ক্রোয়েশিয়াকে লিড এনে দেন এ মিডফিল্ডার।
অবশ্য এর খানিক আগেই সুবর্ণ সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর অ্যাসিস্ট পান সার্জিও আগুয়েরো। তবে আরামসে তা মিস করেন ম্যানসিটি তারকা।
পিছিয়ে পড়ে সর্বশক্তি মাঠে নিয়োগ করেন হোর্হে সাম্পাওলি। আগুয়েরোকে উঠিয়ে গঞ্জালো হিগুয়েইনকে নামান তিনি। আর এনজো পেরেজকে তুলে নামান পাওলো দিবালাকে। এতে আর্জেন্টিনার আক্রমণের গতি বাড়ে। মুহুমুহু আক্রমণে ওঠেন তারা।

পরে তাই কাল হয়ে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনার জন্য। গোল খেয়ে অতিরিক্ত আক্রমণের খেসারত গুনতে হয় তাদের। ৮০ মিনিটে গোল করে কোটি আর্জেন্টাইনের হৃদয় ভাঙেন লুকা মদ্রিচ। এ রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডারের গোলে কার্যত ঘুরে দাঁড়ানোর আশা শেষ হয়ে যায় আর্জেন্টিনার।
এর রেশ না কাটতেই ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে শেষ পেরেকটি ঠুকেন মেসির বার্সা সতীর্থ ইভান রাকিটিচ। এতে ৩-০ গোলের হারে মাঠ ছাড়তে হয় আলবিসেলেস্তেদের।
এ হারে একরকম বিদায়ঘণ্টা বেজে গেল তাদের। এখন দলটির দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠা নির্ভর করছে কোনো কিন্তুর ওপর।
গোটা ম্যাচে বোতলবন্দি ছিলেন ছোট ম্যাজিসিয়ান মেসি। যেটুকু সময় মাঠে ছিলেন শেকলবন্দি ছিলেন আগুয়েরো, হিগুয়েইন ও দিবালা। এজন্য ক্রোয়েশিয়া ডিফেন্ডাররা যতটা বাহবা পাবেন, তার চেয়েও বেশি লজ্জা পাবে আর্জেন্টিনার।কারণটা, সেখান থেকে পর্যাপ্ত বল সরাবরাহ পাননি তারা। মরার উপর খাড়ার ঘা ছিল অতি দুর্বল রক্ষণ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এরকম ছন্নছাড়া দল নিয়ে বিশ্বকাপে জয় পাওয়া সম্ভব নয়।

Please follow and like us:

Check Also

অনিশ্চয়তার নতুন যুগে মধ্যপ্রাচ্য

ইউক্রেন-রাশিয়া রেশ কাটতে না কাটতেই ফিলিস্তিনের গাজায় শুরু হয় ইসরাইলি আগ্রাসন। এরপর থেকে অশান্ত হতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।