বিএনপি জামায়াত কেউ ছাড় দিতে রাজি নয়:আপাতাতো সমঝোতা হচ্ছেনা

ক্রাইমবার্তা রিপোট:   সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি ও জামায়াত কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। জামায়াত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের প্রচারণা চলছে জোরেশোরে। তাকে ২০ দলীয় জোটের একক প্রার্থী ঘোষণার জন্য জামায়াত সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালালেও বিএনপি তাতে সাড়া দেয়নি। উল্টো তারা তাদের দলীয় প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন জানাতে অনুরোধ করে। বুধবার ঢাকায় জোটের সভায় তিন সিটিতে একক প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও সিলেটে কে প্রার্থী হবেন তার নাম ঘোষণা করা হয়নি। নেতৃবৃন্দরা আশাবাদী শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হবে। তবে কেন্দ্রের সমঝোতার কথা বলা হলেও সিলেটের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। উভয় দলই নিজের মতো করে চালিয়ে যাচ্ছে প্রচারণা। আরিফ জামায়াতকে বাদ দিয়ে জোটের শরিকদের সাথে বৈঠক করেছেন গত রোববার। দুই দিন পর বুধবার বৈঠক করেছেন এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। উভয়ই চাচ্ছেন তাদের সমর্থন। সিলেটে বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া শরিকদের মধ্যে খেলাফত মজলিস ও জমিয়তের অনেক সমর্থক রয়েছেন।

একটি সূত্র জানায়, জামায়াত নিয়ে বিএনপি যতটা না বিচলিত তার চেয়ে বেশি শঙ্কিত দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমকে নিয়ে। সিলেটের আদি বাসিন্দা সেলিমের রয়েছে একটি বড় ভোট ব্যাংক। বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে তিনি এর সাথে জড়িত থাকায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তার সাথে রয়েছেন। তারা প্রকাশ্যে না এলেও নেপথ্যে সেলিমের পক্ষে রয়েছেন। তিনি এখনো অনঢ় অবস্থানে থেকে জোরেশোরে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। এ অবস্থায় বেকাদায় পড়েছেন আরিফ। নানা কারণে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে তার দূরত্ব থাকায় মাঠে নামার আগে এখন ঘর গোছাতে ব্যস্ত আরিফ। দফায় দফায় বৈঠক করে দলের ঐক্য ধরে রাখার ওপর তিনি জোর দিচ্ছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম প্রসঙ্গে গতকাল মহানগর বিএনপির এক কর্মিসভায় আরিফ বলেন, ‘বদরুজ্জামান সেলিম সবসময় দলের সুখ-দুঃখে পাশে ছিলেন। তিনি খুবই কর্মঠ নেতা। বর্তমানে তিনি আবেগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আমি আশা করি, নির্বাচনে তিনি আমার পাশে এসে দাঁড়াবেন।’
এ দিকে জামায়াতের মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের পক্ষে দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। দেশের একমাত্র সিলেট সিটিতে জামায়াত প্রার্থীকে ২০ দলীয় জোটের সমর্থন দেয়া হবে এমন প্রত্যাশা ছিল নেতাকর্মীদের। কিন্তু সে প্রত্যাশা এখনো পূরণ না হলেও হতাশ নন তারা। চালিয়ে যাচ্ছেন জুবায়েরের পক্ষে প্রচারণা। সিলেটে সাংগঠনিকভাবে বেশ শক্তিশালী জামায়াত সরকারের দমন-পীড়ন সত্ত্বেও নীরবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন ইমেজের অধিকারী জুবায়ের সিটি নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন লাভে সক্ষম হবেন এমন আশাবাদ তার সমর্থকদের।

সততা ও ভালোবাসা নিয়ে নগরবাসীর সেবা করতে চাই : কামরান
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, সিলেট মহানগর সভাপতি, মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেছেন, দীর্ঘ দিন থেকে বিভিন্নভাবে আপনাদের পাশে আছি এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আপনাদের পাশে থাকবো। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করার ল্েয মেয়র প্রার্থী হয়েছি। আপনাদের সমর্থনে নির্বাচিত হলে সত্যিকার অর্থে একটি মডেল নগরী গড়তে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বুধবার রাতে নগরীর বিলপার এলাকাবাসী আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও রাসেল আহমদের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল মোমেন, আওয়ামী লীগ নেতা মিলাদ গাজী, কয়েছ গাজী, সালাহ বক্স, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসর আজিজ, বুরহান উদ্দিন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব বাবলু, অ্যাডভোকেট আব্দুল মালিক প্রমুখ।

ভুল হয়ে থাকলে মা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন : আরিফ
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সিলেট সিটি নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আগামী ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে দলের প্রতি সমর্থন রেখে আপনারা আমাকে যেভাবে সহযোগিতা করছেন, তার জন্য আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ব্যক্তি আরিফ হিসেবে আমার দোষত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু দলের প্রার্থী হিসেবে আপনারা সকল ভেদাভেদ ভুলে আমার সাথে কাজ করুন। আমার আচার-আচরণে কোনো ভুল হয়ে থাকলে আপনারা মা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন সিলেটের মানুষের পাশে থাকবো।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে সিলেট মহানগর বিএনপি আয়োজিত কর্মিসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে খাদিমনগরস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেকের পরিচালনায় কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।

ভার্থখলা এলাকায় মতবিনিময়ে মেয়র প্রার্থী ডা: মোয়াজ্জেম
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যাপক ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন খান বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জামেয়া ভার্থখলা মাদরাসায় প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল ও খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আল্লামা মজদুদ্দীনের সাথে মতবিনিময় ও ভার্থখলা এলাকার জনসাধারণের সাথে কুশলবিনিময় করেন।

মতবিনিময় ও ভার্থখলা এলাকায় কুশলবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগর সভাপতি নজির আহমদ, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় (সিলেট বিভাগ) সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: রিয়াজুর ইসলাম রিয়াজ, ইসলামী আন্দোলন সিলেট মহানগর সেক্রেটারি হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জেলা সভাপতি মাওলানা সাঈদ আহমদ, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিন প্রমুখ।

আরো পড়ুন :

আয় বেড়েছে লিটন ও বুলবুলের
মুহা: আব্দুল আউয়াল রাজশাহী ব্যুরো 

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের আয় বেড়েছে। বেড়েছে সম্পদের পরিমাণ।

তবে তুলনামূলক বেশি আয় ও সম্পদ বেড়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী লিটনের। তার এবারের বার্ষিক আয় ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ২২৮ টাকা। তিনি আয়কর রিটার্নে মোট অর্জিত সম্পদ ৬২ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৮ টাকা দেখিয়েছেন। অপর দিকে বিএনপি প্রার্থী বুলবুলের অর্জিত সম্পদ লিটনের প্রায় অর্ধেক, ৩১ লাখ ৭ হাজার ২৬০ টাকা। বুলবুলের এবারের বার্ষিক আয় ২৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
বুলবুল এমএসএস এবং লিটন বিএ (অনার্স) পাস। দু’জনেরই এলএলবি ডিগ্রি রয়েছে। এদের মধ্যে লিটন পেশা হিসেবে আইনজীবী এবং রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য উল্লেখ করেছেন। অন্য দিকে বুলবুল বরাবরের মতো তার পেশা দেখিয়েছেন সাধারণ ব্যবসা। এর পাশাপাশি মাছ চাষও করেন দু’জনই। এ নিয়ে টানা তৃতীয় বারের মতো ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটন ও মহানগর বিএনপির সভাপতি বুলবুল। এ দু’জন ছাড়াও বৈধ প্রার্থী রয়েছেন আরো চারজন।

এবার বুলবুল ১২টি মামলা মাথায় নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৪টি মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত আছে। তবে লিটনের নামে কোনো মামলা নেই। ২০০৮, ২০১৩ ও আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এ দুই প্রার্থীর দাখিল করা হলফনামার তুলনামূলক বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

দাখিলকৃত হলফনামা থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালে লিটনের বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার, বাড়িভাড়া থেকে ৫০ হাজার, ব্যবসা থেকে ৮৪ হাজার এবং পেশা থেকে ৬০ হাজার টাকা এসেছে। ২০১৩ সালের হলফনামায় তার বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭২ টাকায়।

গতবার বাড়িভাড়া ও কৃষি খাতে কোনো আয় দেখাননি লিটন। ব্যাংক আমানত দেখান ২ লাখ ৫৪ হাজার ১৭২ টাকা। মেয়র হিসেবে সম্মানী ভাতা পান ৬ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া ডেভেলপার থেকে সাইনিং মানি বাবদ দেখান ৫০ লাখ টাকা। এবার তার বার্ষিক আয় ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ২২৮ টাকা। এর মধ্যে গৃহসম্পত্তি থেকে ৫ লাখ ৫২ হাজার, কৃষি খাত থেকে এক লাখ ৬০ হাজার, পেশা থেকে ১২ লাখ এবং ব্যাংক মূলধন থেকে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৮০ টাকা। অন্যান্য উৎস হতে আয় দেখান ১৯ লাখ ৯ হাজার ৮০৭ টাকা।

২০০৮ সালে লিটনের নিজ নামে নগদ অর্থ ছিল ১০ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৫ হাজার টাকা। ২০১৩ সালে তা দেখান নিজ নামে ২০ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৫ হাজার টাকা। এবার তার নিজ নামে ৩০ হাজার, স্ত্রীর নামে ২০ হাজার এবং নির্ভরশীলদের নামে ৫ হাজার টাকা নগদ দেখান লিটন।

২০০৮ সালে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার বা তার স্ত্রীর কোনো অর্থ দেখানো হয়নি। ২০১৩ সালে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে ৫৮ লাখ ৫ হাজার ৮৭৫ এবং স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ৬১ হাজার ৪৭৫ টাকা দেখিয়েছেন। এ ছাড়া শেয়ারে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ দেখান ১০ লাখ ৮ হাজার ১০৫ টাকা।
এবার ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে এক কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪০৮, স্ত্রীর নামে ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার এবং নির্ভরশীলদের নামে ২৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে তিনটি স্থায়ী আমানতে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং নির্ভরশীলদের নামে ১০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রে এবং ১০ লাখ টাকা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ দেখিয়েছেন লিটন। শেয়ারে বিনিয়োগ দেখিয়েছেন গতবারেরটাই।
২০০৮ ও ২০১৩ সালে লিটনের একটি প্রাইভেটকার দেখানো হলেও এবার দেখানো হয়েছে ৩৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপগাড়ি (ঢাকা মেট্রো গ ১৩-৮৩১৮)। ২০০৮ সালে তার স্ত্রীর নামে ৬০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল। ২০১৩ সালে সেটির উল্লেখ নেই। এবার দেখানো হয়েছে ৫০ ভরি। ২০০৮ সালে উল্লেখ না থাকলেও ২০১৩ ও এবার ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার দেখানো হয়েছে লিটনের নামে। এবার ২১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যুক্ত হয়েছে নির্ভরশীলদের নামেও। আর এ সবগুলোই দেখানো হয়েছে উপহার হিসেবে পাওয়া।
স্থাবর সম্পদে ১ দশমিক ৬৩ একর কৃষি জমি, উপশহর হাউজিং স্টেটে ৩ তলা বাড়ি এবং ঢাকার বনানীতে ৫ কাঠার অ্যাপার্টমেন্ট দেখানো হয়েছে এবার। এর আগে ২০০৮ ও ২০১৩ সালেও বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট এবং ঢাকার ৫ কাঠা জমি দেখানো হয়।

অপর দিকে, ২০০৮ সালে বুলবুলের বার্ষিক আয় ছিল ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ২০১৩ সালে তা দেখানো হয় ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এবার দেখিয়েছেন ২৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। সদ্যবিদায়ী এই মেয়র এবারো সাধারণ ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। এর আগের দুই নির্বাচনে তার বার্ষিক আয়ের সবটুকুই দেখানো হয়েছে মাছ চাষ থেকে। এবার এ খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক মুনাফা থেকে আয় আরো ২৬০ টাকা।

নগদ অর্থ বেড়েছে বুলবুলের। ২০০৮ সালে বুলবুল ও তার স্ত্রীর কাছে নগদ অর্থ ছিল ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ছিল বুলবুলের নামে। ২০১৩ সালে নিজের ও স্ত্রীর নামে নগদ অর্থ দেখান ১৬ লাখ ১২ হাজার ১৫৫ টাকা। এর মধ্যে ৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নিজের এবং ৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা স্ত্রীর নামে। এবার বুলবুলের নামেই নগদ ৪২ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮ টাকা। আর স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৮০০ টাকা।
২০০৮ সালে তার নিজের নামে ২৫ ও স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল। এবারো সেটিই দেখানো হয়েছে। ২০০৮ সালে হলফনামায় স্ত্রীর নামে একটি বাড়ি দেখান বুলবুল। ২০১৩তে এর সাথে আরো একটি যৌথ মালিকানাধীন দালান দেখান। এবার এ দু’টিই দেখিয়েছেন। স্ত্রীর নামে না থাকলেও এবার বুলবুলের নামে ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬১২ টাকা। এর বাইরে কোনো বিনিয়োগ নেই বুলবুলের।
এ ব্যাপারে বুলবুল নয়া দিগন্তকে জানান, হলফনামায় যেটি দেয়া আছে সেটি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও যথাযথ। মেয়র হিসেবে যে সম্মানী এবার পেয়েছেন, গত দুইবারে তা ছিল না। এবার যুক্ত হয়েছে। এ কারণেই এবার আয় ও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। তা ছাড়া তিনি নির্বাচিত হয়েও দু’বছর মতা পাননি। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া শেষে ওই দুই বছরেরও সম্মানী পেয়েছেন। পরে সেই অর্থ সন্তানদের নামে সঞ্চয় হিসেবে রেখে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তাই এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, গত ১৩ জুন থেকে রাসিক নির্বাচনের তফসিল কার্যকর হয়েছে। সেদিন থেকেই ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ২৮ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দেয়ার দিন নির্ধারিত ছিল। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় ১ ও ২ জুলাই। আর প্রত্যাহার ৯ জুলাই ও প্রতীক বরাদ্দ ১০ জুলাই নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুলাই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী রাসিক নির্বাচনে মোট সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৩০টি। এ ছাড়া সংরতি নারী ওয়ার্ড সংখ্যা ১০টি। এবার রাসিক নির্বাচনে মোট ভোটার তিন লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৮টি।

Please follow and like us:

Check Also

কলারোয়া  উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি আবুল কাশেমের ইন্তেকালঃ বঙ্গবন্ধু বিশেষ সুপারিশে  যিনি কারা মুক্ত হন

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।