১৫ টাকা সিটভাড়া আর ৩৮ টাকায় খাবার খেয়ে তারা লাফালাফি করে:কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নতুন তথ্য

ক্রাইমবার্তা রিপোট:    কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে হামলার অভিযোগে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, আন্দোলন হলেও তাদের ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করা নিয়ে উচ্চ আদালতের রায় আছে। সরকার এই রায় অমান্য করতে পারছে না। এই রায় অমান্য করলে আদালত অবমাননা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুরে জড়িত ছিল, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। গত ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া দশম সংসদের ২১তম অধিবেশন আজ শেষ হলো।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে নিজের সমাপনী ভাষণে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ কোটা সংস্কারের বিষয়টি সহানুভূতির সাথে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করেন। সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো বলেছি টোটাল কোটা বাদ দিতে। কিন্তু হাইকোর্টের রায় রয়েছে। এই রায় অবমাননা করলে তো আমি কনটেমপ্ট অব কোর্টে পড়ে যাব। এটা তো কেউ করতেই পারবে না। কিন্তু আমরা তো ক্যাবিনেট সেক্রেটারি দিয়ে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। তারা সেটা দেখছে। তাহলে এদের অসুবিধাটা কোথায়?’

সংসদ নেতা বলেন, ‘কোটা নিয়ে আন্দোলন। ঠিক তারা যে কী চায়, বারবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, সেটা কিন্তু সঠিকভাবে বলতে পারে নাই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বুধবার বলেছেন কোটার ব্যাপারে—মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোটা, তার ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় রয়ে গেছে। যেখানে হাইকোর্টের রায় আছে যে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ওইভাবে সংরক্ষিত থাকবে। তাহলে ওই কোটার বিষয়ে আমরা কীভাবে কোর্টের ওই রায় ভায়োলেট করব। সেটা তো আমরা করতে পারছি না। কিন্তু আমি যেটা করে দিয়েছি, কোটা যেটাই থাক, কোটা পূরণে যেটা খালি থাকবে, তা মেধা থেকে পূরণ হবে। গত কয়েক বছর থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। তা হচ্ছে।’

আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন ছেলেপুলে আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, গাড়িতে আগুন দিয়ে পোড়ানো, বাড়ি ভাঙচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত পৌঁছে ভাঙচুর ও লুটপাট করা, স্টিলের আলমারি ভেঙে গহনাগাটি, টাকাপয়সা—সবকিছু লুটপাট করা হয়েছে। ভিসির পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এটা কি কোনো শিক্ষার্থীর কাজ? এটা কি কোনো শিক্ষার্থী করতে পারে? কথায় কথা বলে, ক্লাস করবে না। ক্লাসে তালা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত কে হবে? আমরা সেশনজট দূর করেছি। তাদের কারণে এখন আবার সেই সেশনজট।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ টাকা সিটভাড়া আর ৩৮ টাকা খাবার। কোথায় আছে পৃথিবীর? নতুন নতুন হল বানিয়েছি। ১৫ টাকা সিটভাড়া আর ৩৮ টাকায় খাবার খেয়ে তারা লাফালাফি করে। তাহলে সিটভাড়া আর খাবারে বাজারদর যা রয়েছে, সেগুলো দিতে হবে তাদের। সেটা তারা দিক।’

গত ১০ এপ্রিল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কি আন্দোলন নাকি? উচ্ছৃঙ্খলা কখনো বরদাশত করা যায় না। আর ভিসির বাড়িতে যে ক্যামেরা ছিল, তা তারা ভেঙে চিপস নিয়ে গেছে। যাতে তাদের চেহারা দেখা না যায়। কিন্তু তারা জানে না যে আশপাশে অনেক জায়গায় আরও ক্যামেরা ছিল। যেমন ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা ছিল। সেই ক্যামেরা দেখে একটা একটা করে খুঁজে বের করা হচ্ছে। ভিসির বাড়িতে যারা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে, আক্রমণ করেছে, তাদের তো ছাড়া হবে না। তাদের ছাড়া যায় না। তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং তদন্ত করা হচ্ছে। অনেকে স্বীকারও করছে। যত আন্দোলনই হোক না কেন, এদের ছাড়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কারণ এরা লেখাপড়া শিখতে আসেনি।

Check Also

উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা গড়ে তুলব: পরিদর্শন বইয়ে প্রধানমন্ত্রী

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে ঢাকার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।