সাতক্ষীরায় যৌতুক মামলা করায় স্ত্রীকে ধরে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে জখম

ক্রাইমবার্তা রিপোট:যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রীর দায়েরকৃত যৌতুক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামী স্বামী মামুনুর রশিদ, তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনা আক্তার ও শ্যালক সাইফুল্যাহ একত্রে অপর স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যাপক মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। জখমীর নাম আম্বিয়া খাতুন সে সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামের সালাম সরদারের মেয়ে। সোমবার সন্ধ্যায় সদরের মাহমুদপুর গ্রামের রাস্তার পাশে বাগানের মধ্যে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, পারিবারিকভাবে সদরের ঘোনা গ্রামের সালাম সরদারের মেয়ে আম্বিয়ার সাথে বিয়ে হয় ১৬ সালের জুন মাসে সদরের মাহমুদপুর গ্রামের মৃত অজিহার গাজীর ছেলে মামুনুর রশিদের সাথে। বিয়ের পর জানতে পারে মামুনুর রশিদের আগে একটি স্ত্রী ছিল এবং সে ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে। এনিয়ে শুরু হয় দাম্পত্য জীবনে তাদের দ্বন্দ্ব। এক পর্যায়ে আম্বিয়া চলে যায় তার বাবার বাড়ি ঘোনা গ্রামে। সেখানে থেকে স্বামীর সাথে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় গত বছর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে স্বামী ও শাশুড়ির নামে। এ মামলায় শুধুমাত্র স্বামী মামুনুর রশিদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন সদর থানার এসআই হারুণ। পরবর্তীতে আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হয়ে আসামী অনুপস্থিতি থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আম্বিয়া খাতুন গণমাধ্যমকে জানান, সদর হাসপাতালে তার আরেক বোন চিকিৎসাধীন রয়েছে। সোমবার বিকেলে তার খাবার দিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে মাহমুদপুর এলাকায় পৌছালে প্রতারক ও পাষ- স্বামী মামুনুর রশিদ তার আরেক স্ত্রী শিরিনা খাতুন ও শ্যালক পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপি গ্রামের আবু সরদারের ছেলে সাইফুল্যাহ তিনজনে মিলে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আম্বিয়াকে একটি বাগানের মধ্যে ফেলে ব্যাপক মারপিট করে। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করার পাশাপাশি মাথায়ও আঘাত করে। গলায় উড়না পেঁচিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। আম্বিয়া জানায়, তার সামনের ৪টি দাত নড়বড় করছে। তারা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এই মারপিট করেছে। এ সময় আস্ফালন করে বলে আদালত থেকে মামলা তুলবি, নইলে তোর পরপারে পাঠিয়ে দেব।
আম্বিায়া খাতুন আরও জানান, ওই অবস্থায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকা দারোগা শ্যামা বাবুর কাছে ফোন দিলে তিনি স্থানীয় আলিপুর ইউনিয়নের চৌকিদার পাঠিয়ে দেন। চৌকিদারসহ স্থানীয়রা উদ্ধার করে আম্বিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি জানান, দারোগা দুই একবার আসামী মামুনুর রশিদের বাড়িতে গেছে বটে তবে আটক করতে অনিহা দেখা গেছে। কারণ সে মাদক ব্যবসায়ী হওয়ায় মোটা অংকের সুযোগ সুবিধা নেয়ার অভিযোগ করেন আম্বিয়া। আম্বিয়া খাতুন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। একটু সুস্থ হয়ে ফের ওই তিনজনের নামে মামলা করবো। তিনি সার্বিক বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Check Also

আলিপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন জিয়াউল ইসলাম জিয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার সদরের আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।