বিগত ১০টি নির্বাচন: তালা-কলারোয়ায় নৌকা ও ধানের শীষের ভোটের সমীকরণ

ক্রাইমর্বাতা ডেস্ক রিপোট:   স্বাধীনতা পরবর্তী তালা-কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসনে বিগত ১০টি সংসদ নির্বাচনে ৪বার আওয়ামী লীগ, একবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি, দু’বার বিএনপি এবং জামায়াত, মুসলিম লীগ ও জাতীয় পাটি একবার করে নির্বাচনে জয় পায়। এরমধ্যে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯৬ এর ১৫ ফেব্রুয়ারী এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অধিকাংশ বিরোধী দল বর্জন করে। এই ৪টি নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পাটি, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে।

তবে বিগত ১০ বছরে সরকারের নৈরাজ্য,দুণীতি,বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী দমনের কারণ নৌকার জনপ্রিয়তা অনেক খানিক গ্রাস পেয়েছে বলে ভোটাররা মনে করেন।সুষ্ঠু ভোট হলে আগামি ৩০ ডিসেম্বর
১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন তালা-ডুমুরিয়া নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের সালাউদ্দিন ইউছুফ নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগের খলিলুর রহমান ২৫ হাজার ৩৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকি পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৭৯ ভোট। এছাড়া বিএনপির প্রদীপ মজুমদার পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৮০ ভোট।
বিএনপিসহ বেশকিছু দলের বর্জনের মুখে ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকি ৪৬ হাজার ২৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। জামাতের আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস ৩৯ হাজার ৬২১ ভোট পান। জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত ৩৪ হাজার ৬০৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন।
১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনের মুখে অনুষ্ঠিত চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত এ আসনে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাসদ (রব) এর আব্দুস সালাম মোড়ল।
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তালা-কলারোয়ায় ৭২ হাজার ৬৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন জামাতের এড. আনসার আলী। আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত পেয়েছিলেন ৬৭ হাজার ৫৩ ভোট। বিএনপির আলতাফ হোসেন ৩৫ হাজার ৩৭৯ ভোট এবং জাতীয় পাটির শেখ মতলুব হোসেন লিয়ন ৫ হাজার ৮৮৭ ভোট পান।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধিকাংশ বিরোধী দলের বর্জনের মুখে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজার ৯৮১ ভোট পেয়ে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী বিএম আলতাফ হোসেন পান ১৬ হাজার ৬২৩ ভোট।
একই বছর ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত ৭৬ হাজার ৭১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে জামাতের এড. আনসার আলী ৫১ হাজার ৫৪ ভোট, জাতীয় পাটির সৈয়দ দিদার বখত ৫০ হাজার ৬৩০ ভোট, বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব ৩৯ হাজার ৬১২ ভোট পান।
২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ মুজিবুর রহমান ১ লাখ ১৪ হাজার ৫২৭ ভোট পান।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ মুজিবুর রহমান ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব পান ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৬৫ ভোট।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ওয়ার্কার্স পাটির এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ৯২ হাজার ২০০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সরদার মুজিব পান ২৩ হাজার ৬১৩ ভোট।

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।