২২১ আসনে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে: বিএনপি

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:   ঢাকা: ২২১ আসনে ভোটগ্রহণে অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের আলাল বলেন, আমরা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত যা জানতে পেরেছি তাতে ২২১ আসনে অনিয়মের একই চিত্র। মাত্রার হেরফের থাকতে পারে। তবে সারাদেশে সার্বিক চিত্র এমনই। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটতো প্রায় শেষ হয়েই গেছে। ভোটে না থাকার তো কোনো যৌক্তিকতা নেই। থাকতেই হবে।
এমন পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত আপনারা কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত কি করবো বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ভোটের দিন সংঘর্ষের আশঙ্কায়  হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলো ইসি। ইসির সেই আশঙ্কাটাই এখন সত্য প্রমাণিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। আলাল বলেন, বহুল প্রতিক্ষীত ও বহুল প্রত্যাশীত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জাগরণ এসেছিল। কিন্তু যেদিন আমরা দেখলাম সকল নির্বাচনি ইতিহাসের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে জানানো হলো যে, নির্বাচনের দিন সমস্ত হাসপাতাল, সমস্ত ডাক্তার ও সকল অ্যাম্বুলেন্সকে ন্স্যান্ডবাই রাখার জন্য। সেদিনই আমরা ভেবেছিলাম বোধ হয় নির্বাচনটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেটা আগেই জেনেছিলেন। জেনেই উনি ভোটারদেরকে সতর্ক করেছিলেন। ওনার সেই আশঙ্কাটাই এখন সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে।  তিনি বলেন, আমরা যে কথাগুলো বার বার বলছিলাম। যেগুলোকে গুজব বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। ব্যালট পেপারে আগেই সিল মারা হবে, কোথাও কোথাও আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হবে। ভোটারদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মেরে পিটিয়ে কেন্দ্রে থেকে দূরে রাখা হবে। সেই চিত্রই কিন্তু আমরা দেখছি এবং আমাদের সেই আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণিত হলো।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে বিশেষ করে বলবো। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে ভুল করা হবে। অংশগ্রহণ না করলে বিএনপি পিছিয়ে যাবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। তাই আমরা পরিপূর্ণ উদ্যমে অংশগ্রহণ করে বাধাগ্রস্ত হয়ে দেখালাম দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।  দলীয় সরকারের অধীনে পরিপূর্ণ দাপটের সাথে ক্ষমতায় থেকে টানা দুই মেয়াদে কোনো সুষ্ঠু ও অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু সেই অংশগ্রহণের অংশটাকেও আজকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।

গতকাল রাত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সারাদেশের বিভিন্ন আসনে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হচ্ছে বা কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ভোটারদেরকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে নারী ভোটারদেরকে প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথবা তাদের সামনে সিল মেরে দেওয়া হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অতিউৎসাহী সদস্যদের সহযোগিতায় এগুলো করা হচ্ছে। সারাদেশের সার্বিক নির্বাচনের চিত্রটা এরকমই অভিযোগ করেন তিনি।  তিনি বলেন, সকালে নির্বাচন শুরু হওয়ার সময়ও আমাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশায়ও পদাঘাত করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে হতাশ, বিষন্ন ও বিস্মিত করা হয়েছে। নির্বাচনের নামে এই অর্থহীন তামাশার কোনো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি না। প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে বা অন্যকোনো কায়দায় একটা গেজেট জারি করে নিলেই হতো যে, নৌকা ২৯৯ আসন বা দুইশ সাড়ে নিরানব্বই আসন পেয়ে গেছে। এমনটা হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকতো না। কিছু প্রক্রিয়া দেখিয়ে নির্বাচনকে হালাল করার ব্যবস্থা আজকে পরিপূর্ণ করা হলো।

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।