স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার নামে অর্থ বাণিজ্যের সিভিল সার্জন ডা. রফিকুলের বিরুদ্ধে: ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

ক্রাইমর্বাতা রির্পোট:  স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকার অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলাম ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। ফলে গরিব, বেকারদের জন্য বরাদ্দ হওয়া প্রকল্পের সহযোগিতার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেকেই। এতে করে সরকারের সুনাম নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ব্যহত হচ্ছে গরিবের ভাগ্যেন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হওয়া প্রকল্প।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে শিক্ষিত ও দক্ষ পেশাদার ড্রাইভার তৈরি করে কর্মসংস্থান তৈরির জন্য অর্থ এসইআইপি এর অর্থায়নে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে মোটর ড্রাইভিং উইথ বেসিক মেইনটেন্যান্স প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। যা সারা দেশের কারিকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কর্তৃক ৪ মাস মেয়াদী কোর্সের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ওই প্রশিক্ষণে ভর্তির জন্য কর্তৃপক্ষ সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন স্বাক্ষরিত একটি স্বাস্থ্য সনদ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর ওই স্বাস্থ্য সনদ দেওয়ার জন্য সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন রফিকুল ইসলাম ও প্রধান অফিস সহকারি আশিক নেওয়াজকে প্রতি সনদে দিতে হচ্ছে বারোশত টাকা। তারা বলছেন অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষা আছে। যে কারণে এই বারোশত টাকা সরকার নির্ধারণ করেছেন। টাকা নেওয়ার জন্য কোন রশিদও দেওয়া হচ্ছে না। ওই টাকা নেওয়া হয়েছে প্যাথলজিস্ট রবিন্দ্র নাথের মাধ্যমে। অথচ দেশের অন্য কোন জেলায় খবর নিয়ে জানাগেছে, স্বাস্থ্য সনদ নিতে দুই থেকে তিনশত টাকা নেওয়া হচ্ছে।
তবে ওই টাকা সরকারি খাতে জমা হচ্ছে না। পুরো টাকাটাই সিভিল সার্জন ও কয়েকজন কর্মচারি ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মচারি জানিয়েছেন।
এদিকে,স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ নিতে এসে বারোশত টাকা দিতে না পেরে অনেক গরিব ও বেকার যুবকরা সদর হাসপাতাল থেকে ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্য সনদ নিতে আসা পাটকেলঘাটার বেকার যুবক রফিকুল ইসলাম, শহরের কাটিয়া এলাকার ইমরান হোসেন, লাবসা এলাকার হাবিবুর রহমানসহ অনেকেই বলেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে স্বাস্থ্য সনদ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু বারোশত টাকা না দিলে স্বাস্থ্য সনদ তারা দেবে না। আমাদের পক্ষে এখন টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিছু টাকা কম নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও আমাদের দুর্ব্যবহার করেছে প্যাথলোজিস্ট রবীন্দ্র নাথ।
অথচ সরকার গরিব ও বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে ওই প্রকল্পটি চালু করেছেন। বর্তমান সরকার দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য এধরনের একাধিক প্রকল্প চালু করলেও আশিক নেওয়াজসহ কিছু অর্থলোভী অসাধু কর্মকর্তার কারণে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিফলে যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত মো. মুছাব্বেরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এত টাকা নেওয়ার বিষয়টি শুনে আমি ব্যথিত হয়েছি। আমি সাবেক সিভিল সার্জনকে বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করেছি।
এবিষয়ে প্যাথলোজিস্ট রবীন্দ্র নাথের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এখানে আমার কোন হাত নেই। সবই সিভিল সার্জন অফিস নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমি হুকুমের গোলাম মাত্র।
এদিকে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওই সনদ দিতে গেলে অনেক পরীক্ষা করতে হয়। সেখানে ওইরকম টাকাই খরচ হচ্ছে।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।