শ্রীলঙ্কায় ‘শুটআউটে’ ৬ শিশু সহ ইসলামপন্থি ১৫ সন্দেহভাজন ‘জঙ্গি’ নিহত

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  শ্রীলংকার পূর্ব উপকূলে রাতে ব্যাপক বন্দুকযুদ্ধের পর ছয়টি শিশুসহ ১৫ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। শনিবার দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্রের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বন্দুক লড়াইয়ে এছাড়া চার বন্দুকধারী ও এক বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, বাট্টিকালোয়া শহরের আমপারার সেইন্টহ্যামারুথুতে শুক্রবার সন্ধ্যায় এই বন্দুক লড়াই শুরু হয়। এই শহরেই রোববার বিলাসবহুল হোটেল ও গির্জায় ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে ২৫৩ জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক আহত হয়েছেন।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সুমিথ আটাপাট্টু বলেন, সেনাবাহিনী একটি ঘরে ঢুকতে চাইলে বন্দুকধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করেন। আমাদের পাল্টা গোলায় দুই বন্দুকধারী নিহত হন। এছাড়া বন্দুকযুদ্ধের ভেতরে পড়ে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

পরবর্তীতে পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার চূড়ান্ত অভিযানে গেলে নিহতদের মধ্যে চার সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজধানী থেকে ৩৭০ কিলোমিটার পূর্বে ইস্টার সানডের হামলাকারীরা লুকিয়ে আছে, এমন আভাস পাওয়ার পর সেনা ও পুলিশের একটি দল অভিযানে নামে।

নিরাপত্তা বাহিনী বাড়িটিতে অভিযানে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক ঘণ্টার লড়াই হয়েছে। ওই বাড়িতে ইসলামিক এস্টেট যোদ্ধারা আবু বকর আল বাগদাদীর প্রতি আনুগত্য জানিয়ে শপথবাক্য পাঠ করার ভিডিও করেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, তারা আইএসের একটি পতাকা ও বেশ কয়েকটি ইউনিফর্ম পেয়েছে। ভিডিওর ওই আট ব্যক্তি যে ইউনিফর্ম পরে ছিলেন, এগুলোও ঠিক দেখতে তেমনি।

এর মধ্যে দেশটিতে নিরাপত্তা বাড়াতে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপলা সিরিসেনা বলেছেন, রোববারের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তারা ১৪০ সন্দেহভাজনকে খুঁজছেন। এ হামলায় ২৫৩ জন নিহত ও পাঁচশতাধিক আহত হয়েছেন।

শুক্রবার কলম্বোয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দেশে আইএসের তৎপরতা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা শ্রীলংকার রয়েছে।

এ হামলার ঘটনায় দেশটির মুসলমানদের যাতে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা না হয়, দেশবাসীর কাছে সেই আহ্বানও তিনি জানিয়েছেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বেশ কয়েক জন শ্রীলংকান যুবক ২০১৩ সাল থেকে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত। কিন্তু এই আসন্ন হামলা নিয়ে প্রতিরক্ষা ও পুলিশ প্রধান তাকে অবগত করেননি।

এই বিস্ফোরণে মূল ভূমিকা রাখা হাশেম সাংগ্রি লা হোটেলে হামলার সময় নিহত হয়েছেন বলে জানান লংকান প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, দেশটির বিলাসবহুল হোটেলে সঙ্গী ইলহামকে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালিয়েছেন হাশেম। সিসিটিভির ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক এস্টেট।

Check Also

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইয়াছিন আলীকে গ্রেফতার করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।