দিদি’ ডাকায় লাথি দিয়ে দোকানির মাছ ড্রেনে ফেলে দিলেন এসিল্যান্ড

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  দিদি’ ডাকায় লাথি দিয়ে মাছ বিক্রেতার মাছ ড্রেনে ফেলে দিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি)।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ১২ মে (রোববার) সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে।

এসিল্যান্ডের এমন কাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে।

সূত্র জানায়, গত রোববার সকাল বেলা এসিল্যান্ড কার্যালয়ের গেটের পাশে বসে মাছ বিক্রি করছিলেন কয়েকজন মাছ বিক্রেতা।

এ সময় গাড়ি নিয়ে অফিসে প্রবেশ করছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার।

অফিসের প্রবেশ পথে গাড়ি থামিয়ে দেন সঞ্চিতা কর্মকার। গাড়ির ভেতরে বসেই এক ব্যবসায়ীকে মাছের ঝুড়ি সরাতে বলেন।

এ সময় লায়েক আহমেদ নামের এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‌‌দিদি সরিয়ে নিচ্ছি।

আর এ কথা শোনার পরেই ক্ষেপে যান এসিল্যান্ড সঞ্চিতা কর্মকার।

গাড়ি থেকে নেমে বলেন, ‘আমি কিসের দিদি! এর পরই লাথি দিয়ে লায়েক আহমেদ ও তার সঙ্গী হাসান মিয়ার মাছের ঝুড়ি পাশের ড্রেনে ফেলে দেন।

সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার এমন আচরণে লায়েক মিয়াসহ অন্যান্য মাছ ব্যবসায়ীরা হতভম্ব হয়ে যান।

এসিল্যান্ডের এমন আচরণে উপজেলাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ‘মাছ ব্যবসায়ীরা কেউ এসিল্যান্ড কার্যালয়ের ভেতরে বসে মাছ বিক্রি করছিল না।

সেটা করলে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারতেন। অথচ এভাবে লাথি মারার মতো কাজটি করে তিনি মাছ বিক্রেতাদের রুজি-রুটিতে লাথি মারলেন। এমন বিরূপ আচরণ তার মতো উর্ধ্বতন কর্মকর্তার থেকে একেবারে কাম্য নয়। ’

এ ঘটনায় এসিল্যান্ড সঞ্চিতা কর্মকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

কিন্তু বিষয়টির কোনো সন্তোষজনক সমাধান না হওয়ায় পরদিন (১৩ মে) উপজেলার সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচিত হয়।

সভায় স্থানীয় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজি বদরুদ্দোজা বলেন, ‘মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে এসিল্যান্ডের এই দুর্ব্যবহারের বিষয়টি আমি আলোচনায় তুলেছিলাম। তবে এসিল্যান্ডের পক্ষ থেকে মাছ বিক্রেতাদের সান্তনা দিতে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখিনি।’

এদিকে লাথি দিয়ে মাছ বিক্রেতার মাছ ফেলে দেয়া স্বীকার করেছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার।

এ ব্যাপারে তার অভিযোগ, ‘তারা মাছ নিয়ে আমার অফিসের ভেতরে ঢুকে যায়। বারবার নিষেধ করা হলেও তারা মানেন নি। ’

এসব মাছ বিক্রেতার নিয়ে আসা মাছের দুর্গন্ধে অফিসে কাজ করতে কষ্ট হয় বলে জানান তিনি।

এরপর স্থানীয়দের তুমুল সমালোচনার পর সঞ্চিতা কর্মকার বলেন, ‘সেদিন কোনোভাবেই আমি তাদের সরাতে না পেরে বেশ রেগে গিয়েছিলাম। তখনই লাথি দিয়ে মাছ ফেলে দিই। ’

বিষয়টি ঠিক হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এজন্য আমি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে রাজি আছি।’

Please follow and like us:

Check Also

কলারোয়া  উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি আবুল কাশেমের ইন্তেকালঃ বঙ্গবন্ধু বিশেষ সুপারিশে  যিনি কারা মুক্ত হন

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।