অত্যাচারের মুখে বিসমিল্লাহ ক্লথ স্টোর পরিবার !

বড় তিন ভাই এবং বোনদের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সব জমি বাড়ি প্রতারণার মাধ্যমে এককভাবে দখল করে নিয়েছে আমাদের ছোট ভাই শাহজাহান কবির। তার তান্ডব আর খুন জখমের হুমকিতে পুরো পরিবার এখন তটস্থ। শাহজাহান কবির তার প্রয়াত বড় ভাই মুজিবর রহমানের প্রথম স্ত্রী নিহত জাহানারার চার কন্যা সন্তান এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার পুত্র সন্তানকেও সহায় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।
সোমবার বিকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন বিসমিল্লাহ ক্লথ স্টোর পরিবারের তিন বোন ফিরোজা ইয়াসমিন, শাহানা খাতুন ও আফরোজা খাতুন। তারা বলেন শাহজাহান কবির একাই বড় ভাই মুজিবর রহমানের ৭৭ বিঘা জমি এবং শ্যামনগরের রামজীবনপুর গ্রামের বাড়ি দখলে নিয়ে লুটপাট করছে গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে। এমনকি বড় ভাই মুজিবর রহমানের ব্যাংক ঋণ প্রায় সাত লাখ টাকাও পরিশোধ করেনি সে।
সাতক্ষীরার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বিসমিল্লাহ ক্লথ স্টোরের মালিক শহরের মুনজিতপুরের আবদুল গফুর সরদারের মৃত্যুর পর তার নামীয় সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করে নেয় ছোট ভাই শাহজাহান কবির। বড় ভাই মুজিবর রহমানের বাড়িটিও দখলের জন্য বোনদের ভুল বুঝিয়ে প্রতারণা করে সে। প্রকৃতপক্ষে তাদের বাবার সাথে ভাই মুজিবরের ওই বাড়ি নিয়ে মামলা চলছিল। সে সময় বোন ফিরোজাকে নিয়ে এসে মুজিবর রহমান বাড়ি বুঝিয়ে দেন। ২০০৭ সালে তাদের বাবা এবং মামলা চলমান অবস্থায় ২০১৪ সালে বড় ভাই মুজিবর রহমান মারা যান। কিন্তু বড় ভাই মুজিবর রহমানের প্রথম স্ত্রীর কোনো পুত্র সন্তান না থাকায় মেয়েরা এগিয়ে এলে তাদের হুমকি দেয় শাহজাহান। তাদের মাতা জাহানারা খাতুন খুনের উল্ল্খে করে শাহজাহান কবির জানায় জমি নিতে এলে তোদের পরিণতি তোদের মার মতোই হবে। পরে মামলার রায় কৌশলে পিতার পক্ষে করে নিয়ে এক এক করে বোনদের টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে কৌশলে লিখে নেয় শাহজাহান। অথচ বাড়ির প্রকৃত মালিক প্রয়াত মুজিবর রহমান। শাহজাহান নয়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান পিতা জীবিত থাকাকালে শ্যামনগরে বোন ফিরোজার নামে দেওয়া ৮ বিঘা জমিতে গেলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ফিরোজাকে মারপিট করায় শাহজাহান। ওই বাড়ি থেকে ফিরোজাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে শাহজাহান। এমনকি ভাড়াটিয়াদেরও বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে সে। এরই মধ্যে শাহজাহান বোন আফরোজাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। শাহজাহান কবির পৈতৃক জমি জমার সব কাগজপত্র নিজ দখলে রেখে দিয়েছে। ফিরোজার মেয়েকে সে বলেছে তোর মা জমি জমি করলে মারা পড়বে। গত ১৮ জুলাই তো মেরেই ফেলতাম। ভাগ্য ভালো সে বেঁচে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন তাদের বড় ভাইয়ের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কোনো পুত্র সন্তান ছিল না। এজন্য নৈকাটি গ্রামে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেখানে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। ২০১৪ সালে বড় ভাই মুজিবর রহমান মারা গেলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী নাহারকে শাহজাহান বলে ‘এখানে থাকলে তোমার পরিণতি সতীন জাহানারার মতো হবে’। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নাহার এখন তার একমাত্র পুত্র সন্তানকে সাথে নিয়ে ইটভাটায় জোন দিচ্ছেন। শাহজাহান বড় ভাই মুজিবরের চারকন্যা ও এক পুত্রসহ তার মাকে বঞ্চিত করা ছাড়াও তার দশ বোনকে সুবিধামতো ব্যবহার করে প্রতারণা করছে। শাহজাহানোর অত্যাচারে অপর দুই ভাই জাহাঙ্গির কবির ও আলমগীর কবির এখন পথে পথে ঘুরছে।
এ সবের প্রতিকার দাবি করে প্রতারক ও জালিয়াত শাহজাহান কবিরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিন বোন ফিরোজা ইয়াসমিন, শাহানা খাতুন ও আফরোজা বেগম পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।