দক্ষিণ-পশ্চিমঞ্চালের জমজমাট বৃহৎ পশুর হাট: ভারতীয় গরু না থাকায় স্বস্তির নি:শ্বাস বিক্রেতার

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:  আব্দুল ওহাব ও দিপঙ্কর বিশ্বাস: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ পশু কেনাবেচার স্থান দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়ার গরুহাট। ঈদের বাকি মাত্র কয়েক দিন। ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহ রহমত ও সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কুরবানী করেন। আর এই ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পারুরিয়ার পশুর হাট। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ও জেলার বাইরে থেকে খামারীরা তাদের পালিত পশু বিক্রয় করতে আসে এই হাটে। হাটের পরিবেশ ক্রেতা ও বিক্রেতা বান্ধব এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকায় এ হাটের চাহিদা দীর্ঘ দিনের। হাটে গরু, ছাগল, ভেড়াসহ বিভিন্ন ধরনের পশু সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রয় হয়। এছাড়া বিভিন্ন জাতের হাঁস, মুরগি, কবুতর ও পাখি পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এখানে বিক্রি হয় ছোট-বড় সকল বয়সীদের পোশাক, জুতা, কসমেটিক্স, ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষ, মাছ, মাংস, সবজিসহ সাংসারিক সকল জিনিসপত্র। সাপ্তাহিক এ হাটে ক্রয়-বিক্রয় করে কয়েক হাজার মানুষ তাদের সংসার পরিচালনা করে থাকেন।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চালে শেষ মুহ‚র্তে জমে উঠেছে দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়ার পশুরহাট। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। রবিবার পারুলিয়া বৃহৎ পশুর হাট পরিদর্শন করেনে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনছুর আহম্মেদ, জেলা পরিষদের সদস্য আল-ফেরদাউস আলফা, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক সুজন ঘোষ, সহ-সভাপতি দিপঙ্কর বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক মুকুল, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। এছাড়া সকাল থেকে র‌্যাব-৬ এর সদস্যরা, দেবহাটা থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সদস্যদের উপস্থিত ও দক্ষ নজরদারিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়িয়ে, যানজট নিরাসন করে হাটের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করেন।
হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা থাকলেও দাম কম ছিল না বড় গরুর। এবার দাম অন্য বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা বেশি। তবে এতে সন্তুষ্ট খামারী, গরু ব্যবসায়ীরা ও বিক্রেতারা। যথেষ্ট ম‚ল্য পাওয়াতে লোকসান গুণতে হচ্ছে না তাদের। অন্যদিকে ক্রেতাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে ধর্মীয় কাজটি সমাধান করতে পশু কিনছে ক্রেতারা। তাই বিক্রিতেও রয়েছে প্রতিযোগিতা। তবে এবার হাটে ভারতীয় পশু না থাকায় দেশীয় পশুর আগমন কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে। পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এ ঈদের দিনটিতে আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের আশায় মানুষ কোরবানি দিয়ে থাকেন। এজন্য প্রয়োজন হৃষ্টপুষ্ট পশু। এই চাহিদা পূরণ করতে দেবহাটা উপজেলার গরুহাটে গিয়ে দেখা গেছে হাটের হাল চিত্র। হাটে বেচাকেনা জমে উঠেছে। এর মধ্যে দেশি গরুর সংখ্যাই বেশি।
গরুর বেপারিরা জানান, জেলার অন্য পশুরহাটগুলোতে এবার বিভিন্ন এলাকা থেকে দেশি পশু আসছে। তবে ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে গরু না আসায় দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে বলে সাধারণের অভিমত। বিশেষ করে গতবছর বাজারে মাংসের কেজি ছিল ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা। সেখানে এ বছর মাংসের কেজি ৫০০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা। সেই হিসেবে পশুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। এ হাটে গত কয়েকহাটের তুলনায় বিক্রিও বেশি। হাটে ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম চাইছে বিক্রেতারা। এছাড়া ৩৫ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা দামের গরু বেশি বিক্রি হয়েছে। ৪০-৫৫ হাজার টাকার মধ্যেও বেশকিছু গরু বিক্রি হয়েছে। খাসি ছাগলও বিক্রি হচ্ছে তুলনাম‚লক। তবে ৬-৮ হাজার টাকা দামের ছাগল বেশি বিক্রি হচ্ছে।
হাটের ইজারা গ্রহণকারী ও জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদৌস আলফা জানান, ভারতীয় গরু না থাকায় দেশি গরুর সমাগম বেশি। তাছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে কোন প্রকার চুরি, ছিনতাই না ঘটে। তাই ক্রেতা-বিক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে দাম থাকায় স্বস্তি ফিরেছে।

Check Also

দেবহাটায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সভা

দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটার কুলিয়া ইউনিয়নের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।