কালিগঞ্জে আড়াই মাসেও উদ্ধার হয়নি পাচার হওয়া মেয়ে ভিকটিম উদ্ধার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : যৌতুকের দাবিতে পাচার করে দেওয়া মেয়েকে উদ্ধার ও দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সস্মেলনে এ আর্তি জানান কালিগঞ্জ থানার চম্পাফুল ইউনিয়নের কুমারখালি গ্রামের পাচার হওয়া মেয়ে এক নারীর দিনমজুর বাবা।
লিখিত বক্তব্যে ওই দিন মজুর বলেন, তার মেয়েকে (১৯) নয় মাস আগে দেবহাটা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের চন্দ্রকান্ত মল্লিকের ছেলে চিরঞ্জিৎ মল্লিকের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় জমি বিক্রি ও সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে যৌতুক হিসেবে নগদ তিন লাখ টাকাসহ মোটর সাইকেল, ফ্রিজ আলমারি ও সোনার গহনাসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল দিতে হয়। বিয়ের তিন মাস না যেতেই বাবার পরামর্শ মত চিরঞ্জিৎ ব্যবসা করার জন্য স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা আনতে বলে। টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে (মেয়ে) শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। টাকা না দিলে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে মোবাইল হুমকি দেয় চিরঞ্জিৎ। একপর্যায়ে বাপের বাড়ি থেকে গত ১৭ জুন দীপ্তিকে মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সংবাদ সস্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়,২৩ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তার মেয়ে বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে বেড়িবাঁধের উপরে গেলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা তার জামাতা চিরঞ্জিত ও আশাশুনি উপজেলার কোদ-া গ্রামের কুখ্যাত জুয়াড়ী শহীদুল ইসলামের ছেলে সোহাগ একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। বিষয়টি আমার বেহাই চন্দ্রকান্ত মল্লিক ও শহীদুলকে জানালে তারা বলে যেমন টাকা দিসনি তেমনি ভারতে বিক্রি করে দিয়েছি। পারলে কিছু করিস বলে জানিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদে বসাবসি হয়। সেখানে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তিনি (ভিকটিমের বাবা) বাদি হয়ে ৭ জুলাই জামাতা চিরঞ্জিৎ, বেহাই চন্দ্রকান্ত, শহীদুল ও সাহাগের নাম উল্লেখ করে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (পিটিশন-২৮৬/১৯)দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে কালিগঞ্জ থানা ১৪ জুলাই মামলা রেকর্ড করে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার এসআই জিয়ারত আলী জামাতা চিরঞ্জিৎ গ্রেপ্তার করলেও অন্য আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত ৭ আগষ্ট চিরঞ্জিত জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। নইলে মেয়েকে চিরজীবনের মত শেষ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে আসামীরা। আড়াই মাসেও তার মেয়ে উদ্ধার না হওয়ায় হতাশ হন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেয়েকে উদ্ধার ও দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন প্রশাসনিক কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত আলী বলেন, ভিকটিম উদ্ধার ও পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

০৪.০৯.১৯

Please follow and like us:

Check Also

পৃথিবীর যেসব দেশে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রিরও উপরে

জলবায়ু পরিবর্তনের চরম ভয়াবহতার সাক্ষী হতে যাচ্ছে সারাবিশ্ব। প্রতিদিনই একটু একটু করে বৈরি হচ্ছে আবহাওয়া, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।