আবরারের পরিবারে চলছে শোকের মাতম, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইলেন মা:

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পুরো পরিবারে চলছে শোকের মাতম। প্রধানমন্ত্রীর কাছে হত্যার বিচার চেয়েছেন তার মা রোকেয়া খাতুন।

আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের নিরীক্ষক কর্মকর্তা। মা রোকেয়া খাতুন একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবরার ফাহাদ বড়। ছোট ভাই আবরার ফায়াজ ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শের-ই-বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে (২১) সোমবার রাত ৩টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন বুয়েটের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মাশুক এলাহী।

আবরার নিহতের ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করেছে ‍পুলিশ।

আবরারের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। সোমবার সকালে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারের কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শোকের মাতম বইছে। পরিবারের সদস্যরা বুঝে উঠতে পারছেন না, এত শান্ত, মেধাবী ছেলেটিকে কারা কী কারণে হত্যা করেছে। তাদের সন্তানকে কেন এভাবে জীবন দিতে হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সন্তানের হত্যাকারীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন।

জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে ভারতকে বন্দর, পানি ও গ্যাস দেয়ার বিরোধিতা করে পোস্ট দিয়েছিলেন নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ। মৃত্যুর ৮ ঘণ্টা আগে ৫ অক্টোবর বিকাল ৫টা ৩২ মিনিটে ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি।

স্ট্যাটাসে ফাহাদ লেখেন, ‘৪৭-এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোনো সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ছয় মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ ভারতকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।’

তিনি আরো লেখেন, ‘কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়া কামড়ি কয়েক বছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চায় না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড় লাখ কিউসেক মিটার পানি দেব।’

ভারতকে গ্যাস দেয়ার সমালোচনা করে বুয়েটের এই শিক্ষার্থী লেখেন, ‘কয়েক বছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তর ভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দেব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।’

স্ট্যাটাসের শেষ তিনি কবি কামিনী রায়ের একটি কবিতা জুড়ে দিয়ে বলেন, হয়তো এ সুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-

‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মতো সুখ কোথাও কি আছে।’
সূত্র : ইউএনবি

Please follow and like us:

Check Also

নতুন যোগ হচ্ছে ২০ লাখ দরিদ্র

মূল্যস্ফীতির কশাঘাত মোকাবিলায় ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে নতুন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।