ক্রাইমবার্তা রিপোট: কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামুর রশিদনগর গ্যারেজ এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জনের প্রানহানি হয়েছে। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আহতরা। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
সুপারভাইজারকে ড্রাইভিং শেখাতে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারমুখি ইউনিক পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব- ১৪-০১০৫) ৪ যাত্রী নিহত হন। আহত হন ২৬ জন।
নিহতরা হলেন- ভৈরব জেলার বাসিন্দা মো. কাশেম (৪২), চকরিয়া উপজেলার পূর্বভেওলার মৃত কবির আহামদের স্ত্রী নূরুন্নাহার (৪০), পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের মো. শফিকের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (২২) ও কুতুবদিয়ার উপজেলার লেমশিখালী ইউনিয়নের মৃত এবাদুল্লাহর ছেলে মো. ফারুক (২০)।
দুর্ঘটনার জন্য চালককে দায়ী করছেন যাত্রীরা।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সুমন, মেহেদী হাসান (১৮), মোহাম্মদ শোয়াইব (২১), মো. জালাল (২৭), সাকিব (১৪) জানান, গাড়ী চলন্ত অবস্থায় ড্রাইভিং শেখানোর জন্য সুপারভাইজারকে চালকের আসনে বসানোর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে গাড়ীটি উল্টে যায়।
আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সুমন বলেন, আমি গাড়ীর ৩ নং সীটে বসা ছিলাম। চালককে বলতে না বলতেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়।
আহত যাত্রী মোহাম্মদ শোয়াইব বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই গাড়ী উল্টে যায়। আহত যাত্রী সুমন নিজেকে মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দিয়ে বলেন, দুর্ঘটনার জন্য চালকই সম্পূর্ণ দায়ী। এ জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে আইনী ব্যবস্থা নিব।
আহত যাত্রী চট্টগ্রাম হাজী ওমর গণি (এমইএস) কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান বলেন, আমি একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে গাড়ীটি উল্টে যায়। চারিদিকে চিৎকার ছাড়া আর কিছুই শুনিনি। পরে দেখি, আমাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
আহত আরেক যাত্রী আবুল হোসেন চট্টগ্রামে একটি মাদরাসায় চাকরি করেন। মেয়ে উম্মে কুলসুম ও উম্মে হাবিবাকে নিয়ে টেকনাফে বাড়ীতে আসছিলেন। পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আর বাড়ী যাওয়া হলোনা। হাসপাতালের বিছানায় দুই মেয়েকে বুকে নিয়ে কাতরাচ্ছেন তিনি।
আবুল খায়ের নামে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা জেনারেটর বসিয়ে লোহা কাটার মেশিনের সাহায্যে গাড়ীর ভেতর থেকে লোকজনকে বের করে আনেন।
রামু উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া জানান, দুর্ঘটনার পর পরই উদ্ধারকারীদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পেরেছি, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি চালাচ্ছিলেন সুপারভাইজার। চকরিয়া এলাকায় চালক নেমে গেলে সুপারভাইজারই চালকের আসনে বসেন। বিষয়টি দেখে কয়েকজন যাত্রী তাকে নিয়ন্ত্রিত ভাবে গাড়ি চালানোর অনুরোধ করেও কোন কাজ হয়নি।
রামু হাইওয়ে থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ীটি গত রাতে তুলাবাগান হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের এস আই কেশব চন্দ্র চৌধুরী বাদী হয়ে সোমবার বিকালে রামু থানায় মামলা করেছেন।