বই বিতরণের নামে প্রতারণা চলছে : রিজভী

ক্রাইমবার্তা রিপোট: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, কোমলমতি শিশুদের বিনামূল্যে বই বিতরণের নামে প্রতারণা চলছে। শিক্ষামন্ত্রী ঘটা করে বই বিতরণের উৎসব করলেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টাকা ছাড়া বই পাচ্ছে না শিশুরা, এমন অভিযোগ পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদেরকে একটি মাত্র বই সরবরাহ করে, বলা হচ্ছে বই উৎসব। উৎসবের নামে কোমলমতি শিশুদের সঙ্গে বই বিতরণে প্রতারণা ও তামাশা বন্ধ করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানান রিজভী। সেইসাথে সরকার বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, গতকাল ওবায়দুল কাদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে-এ ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার তথ্য প্রমাণ দিতে হবে। তিনি তথ্য প্রমাণ দিতে না পারলে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। নতুবা সরকার তার বিরুদ্ধে মামলা করবে।

এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্য দেশে আওয়ামী লীগের হুমকি সংস্কৃতিরই বহি:প্রকাশ। দেশে দেশে বর্বর অগণতান্ত্রিক, জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন স্বৈরাচারী সরকারই গণতন্ত্রকে দুমড়ে মুচড়ে মানুষের কথা বলা বন্ধ করতেই এধরণের হুমকি প্রদর্শন করে। তারা দুর্নীতি করে বলেই মানুষের কথা বলা বন্ধ করার জন্য হুমকি দেয়। আতঙ্ক থেকেই তাদের মধ্যে হুমকি প্রবণতা দেখা দেয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, কোনো সৎ গণতান্ত্রিক সরকার কোনো সমালোচনাতেই হুমকির আশ্রয় নেয় না। অন্তরে সততার দ্বীপশিখা প্রজ্জলিত থাকলে কোন সমালোচনাতেই বিচলিত হওয়ার কথা নয়। ডালের মধ্যে কালো পদার্থ আছে বলেই ক্রুদ্ধ হয়ে তখন হুমকি দিতে হয়। এটাই নিষ্ঠুর স্বৈরাচারদের আচরণ। এরা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলের কন্ঠরোধ এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য বিরাট হুমকি।

রিজভী বলেন, আমরা বলতে চাই-২০১১ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করলো কেনো বিশ্বব্যাংক। পদ্মা সেতুর কাজ পেতে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দেশপ্রেমিক সার্টিফিকেট দিয়ে মন্ত্রীত্ব কেড়ে নিয়েছিলেন কেন? সচিবসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল কেন? যেহেতু দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো আপনাদের একটি সাফসূত্র করার একটি ধোপাখানা আছে, সুতরাং আপনারা তো নিজেদের বড়বড় দুর্নীতিবাজদের ধোপাখানার ওয়াশিং মেশিনে পরিস্কার করে অব্যাহতি দেন। আর বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুদক দিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা মামলা দায়ের করে তা টিকিয়ে রাখেন। কারন মামলা করার, অভিযোগ দায়ের করার এবং গ্রেফতার করার সংস্থাগুলি সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের পকেটে।

রিজভী আরো বলেন, উক্ত সংস্থাগুলো নিরপেক্ষতাহীন একটি আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠান। এজন্যই সরকারদলীয় নেতারা তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনায় অসন্তুষ্ট হয়ে মামলা দায়ের করে এবং মামলার হুমকি দেয়। তবে তাদের মনে রাখা দরকার, তাদের হুমকি, অন্যায়-অনাচার কোন কিছুই হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো মিলিয়ে যাচ্ছে না। প্রতিটি অপকর্মেরই হিসাব রেজিষ্ট্রি থাকছে। দেশবাসীকে এগুলোর হিসাব দিতেই হবে। দেশবাসী জানে যে, শেয়ার বাজারের হাজার হাজার কোটি টাকা কারা হজম করেছে, ব্যাংক-বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কারা লুট করেছে, বড় বড় প্রকল্পের লুটের টাকা কোথায় পাচার হচ্ছে। জনগণের টাকা জালিয়াতি করে কল্পনাতীত গুন্ডামীর মাধ্যমে আত্মসাৎ করা যাবে না, জনগণের টাকা জনগণকে ফেরত দিতেই হবে একদিন।

Check Also

হাফিজের কাছ থেকে রাজনীতিতে উৎসাহ না পেয়ে চলে যান সাকিব

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনীতির বিষয়ে উৎসাহিত হয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।