বর্তমান চলচ্চিত্র নিয়ে পাঁচ তারকা যা বললেন

ক্রাইমবার্তা বিনোদন ডেস্ক:অমিত হাসান, ওমর সানী, আমিন খান, মৌসুমী ও পূর্ণিমা চলচ্চিত্রের সার্বিক পরিস্থিত নিয়ে কথা বলেছেন এক ঘরোয়া আড্ডায়।

গল্পে, আড্ডায় অমিত হাসান বলেন, ‘আমি মনে করি চলচ্চিত্রের বর্তমানে যে দূরবস্থা চলছে তার জন্য প্রয়োজন প্রযোজক সমিতির বিরাট ভূমিকা। কারণ প্রযোজক সমিতিই হচ্ছে চলচ্চিত্রের প্রশাসক। কিন্তু তারাই যদি নেতৃত্বে না থাকে তাহলে ভালো চলচ্চিত্রে হবে না। টুকটাক ভালো চলচ্চিত্র নির্মিত হলেই হবে না। বছরজুড়ে ভালো ভালো চলচ্চিত্র নির্মিত হতে হবে। তা না হলে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। যেমন আমি এর আগে ‘কে আপন কে পর’ নামের একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিলাম। কিন্তু এখন আর সাহস পাই না। কারণ নেতৃত্বে নেই প্রযোজক সমিতি। শুধু পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি সুসংগঠিত হলে হবে না। প্রযোজক সমিতিকে সুসংগঠিত হতে হবে।’29

ওমর সানী বলেন, ‘সারা দেশের সিনেমা হলকে একটি বিএফডিসির একটি সার্ভারের মধ্যে নিয়ে আসার উচিত। তাহলে ভিডিও পাইরেসি বন্ধ হবে। ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু করতে হবে। সর্বোপরি গৎবাঁধা গল্পের যেমন আমি তোমাকে ভালোবাসি, তোমায় না পেলে মরে যাবো-এই ধরনের প্রেম-পিরীতি টাইপের গল্প নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করলেও হবে না। স্ক্রিপ্ট’র ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ স্ক্রিপ্টই হচ্ছে একটি চলচ্চিত্রের মূল ভিত্তি। এখানে মনোযোগ দেয়াটা খুব জরুরি।’

তবে আমিন খান বলেছেন ভিন্ন কথা। আমিন খান বলেন, ‘চলচ্চিত্রে যারা কাজ করতে আসেন তাদেরকে শিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষিত মানে এই নয় যে শুধু লেখাপড়ায় শিক্ষিত, চলচ্চিত্রের যে যেই কাজটি করতে আসেন, তিনি যেন সেই কাজটি শিখে আসেন। আগের মতো দেখে দেখে শিখে এলাম, তা যেন না হয়। কারণ এখন সারা বিশ্বেও চলচ্চিত্রে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু আমরা পড়ে আছি সেই আগের স্থানে। কোথায় যেন আমরা আটকে আছি, বের হতে পারছিনা। সর্বোপরি একজন পরিচালককে হতে হবে সবচেয়ে বেশি চৌকস। কারণ তার হাতেই নির্ভর করে একটি চলচ্চিত্রের সফলতা, দর্শকপ্রিয়তা’

চিত্রনায়িকা মৌসুমীও অমিত হাসানের সুরে সুর মিলিয়ে প্রযোজক সমিতিকে নেতৃত্বে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি মৌসুমী বলেন, ‘আমি মনে করি চলচ্চিত্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য শিল্পীদেরও অধিক সচেতন হতে হবে। বিশ্বের নানা দেশ চলচ্চিত্রে কতো এগিয়ে গেছে। ডিজিটাল এই যুগে মানুষ এখন খুব সহজে সিনেমা হলে যান না। তাদেরকে দেখার মতো কিছু না দিতে পারলে তারা সিনেমা হলে না গিয়ে ইউটিউবেই সিনেমা দেখে নিতে পারেন। তবে আমি আরেকটি বিষয়ে বিশেষত বলতে চাই- তা হলো শুধু নায়ক নায়িকা দিয়েই সিনেমা নির্মাণের ধারাবাহিকতা বন্ধ হওয়া উচিত। মাল্টিকাস্টিং করে সিনেমা নির্মাণ করা উচিত। একটি সময়ে আমি, আমার নায়ক, শাবানা আপা, আলমগীর ভাই, জসীম ভাই একই সিনেমায় অভিনয় করেছি। এসব সিনেমা দর্শক প্রাণ ভরে উপভোগ করেছেন। একটি সিনেমার একটি গল্প থাকাটাও জরুরি। সবমিলিয়ে এখন সত্যিকার অর্থেই সিনেমার নির্মাণে মনোযোগী হওয়া উচিত।’

চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা বলেন, ‘সত্যি বলতে কী চলচ্চিত্র ব্যবসাকে আমরা এখন ব্যবসা হিসেবে দেখছিনা। আগে যারা কাজ করতেন সেটা প্রযোজকই হোক কিংবা পরিচালকই হোক না কেন তারা চলচ্চিত্রকে ব্যবসা হিসেবে দেখতেন। যে কারণে শিল্পীরাও দিনরাত পরিশ্রম করে কাজ করতেন। প্রযোজনা কিংবা পরিচালনা দুটোর একটিতেও পেশাদারিত্ব নেই, নেই শিল্পীদের মধ্যেও পেশাদারিত্ব। যে কারণে একটি চলচ্চিত্র ব্যবসায়িকভাবে লাভের মুখ দেখে না। ফলে একবার যিনি প্রযোজনায় আসেন, পরবর্তীতে তাকে আর খুুঁজে পাওয়া যায়না। বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্রের গল্প মিলিয়ে সিনেমা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। আমাদের দেশেই অনেক মৌলিক গল্প আছে। নিজের দেশ, নিজের মাটি, নিজের মানুষকে তুলে ধরার মতো অনেক গল্প আছে। তা নিয়ে একটু ভাবলেই ভালো গল্প দাঁড়ায়। হতে পারে ভালো ভালো চলচ্চিত্র। সময়ের সাথে তাল মিলিয়েই আধুনিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু আধুনিকতার নামে যেন নোংরামি না হয়।’

Check Also

সিরিয়াতেই থাকতে হবে ‘আইএস বধূকে’, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কে এই শামীমা?

ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দিতে ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া শামীমা বেগম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।