রাণীশংকৈলে দুই মন গমে এক হালা ইলিশ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:রাণীশংকৈল প্রতিনিধি ঃ বাঙ্গালি জাতির দ্বারপ্রান্তে ১৪২৪ খিঃ ১লা বৈশাখ । বাংলা বর্ষবরণে বাঙ্গালী জীবনে পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাজা যেন সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর তাই পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে ঠাকুরগাও জেলার রাণীশংকৈলে বেড়েছে ইলিশের দাম। দুই মন গম বিক্রী করে পাওয়া যাচ্ছে এক হালা ইলিশ। যার আনুমানিক ওজন এক কেজি।23 পহেলা বৈশাখ উদযাপনে রব রব সাজে মহা আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছে বাঙ্গালি। বর্ষবরণ উদযাপনে ঠাকুরগায়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উপজেলায় বয়স্ক যুবক তরুণ এমনকি নারীরাও বৈশাখ পালনের প্রস্তুতি নিতে পিছিয়ে নেয় কেউ। উপজেলায় বৈশাখ উদযাপন পরিষদ ২৫তম ও সম্মিলিত বৈশাখ উদযাপন পরিষদ শিবদিঘী পৃথক পৃথক ব্যানারে ২টি বৃহৎ র‌্যালীর সমন্বয়ে ঢাকঢৌল পিটিয়ে বর্ষবরণ উদযাপন করবে চলছে এমন আয়োজন। প্রস্তুতি চলছে সবার মাঝে পান্তা ইলিশের আয়োজন। আবাল বৃদ্ব থেকে কোলের শিশুটিও পহেলা বৈশাখের আনন্দ উল্লাসের হাত ছাড়া করতে রাজি নই। পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ ভাজার জুড়ি নেই। শত কষ্টের মধ্যে হলেও বৈশাখ উদযাপনের অংশিদার হতে হবে খেটে খাওয়া মানুষটিকে প্রত্যাশা এমনই। তবে বাধ সাধে ইলিশের লাগাম ছাড়া দামে বর্তমান সরকার চাকুরী জীবিদের বৈশাখ পালনে উৎসব ভাতা দিচ্ছেন। ইলিশের দাম যতই হোক তারা কিনতে পারবেন। কিন্তু একজন কৃষক, দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে বর্তমান বাজারে এক কেজি ইলিশ কেনা বড়ই কষ্টকর। কারণ রাণীশংকৈলে মাছের বাজারে বৈশাখকে সামনে রেখে ইলিশের দাম হুড় হুড় করে বেড়ে চলেছে। বৈশাখ না আসতেই বর্তমান বাজারে মাঝারি আকরের ইলিশের এক কেজি সাড়ে ১৪ শত থেকে ১৫ শত টাকা। বিনিময়ে একজন কৃষককে ১ কেজি ইলিশ কেনার জন্য ২ মণ গম বিক্রি করতে হবে । বর্তমানে গমের মণ ৮০০ টাকা । আর বৈশাখ ঘিরেই ইলিশের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। কারণ এটি বাঙালী ঐতিহ্য। বৈশাখ উদযাপনে অংশ নেওয়াটা এ যেন এক অন্য রকম আনন্দ উল্লাস। কিন্তু স্বপ্ন থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় ইলিশ কিনতে পারে না একজন খেটে খাওয়া মানুষ। আর তাই বাজারে গিয়ে অর্থের অভাবে ইলিশ কিনতে না পেরে চোখে মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে খালি হাতেই ফিরে যান ঐ সব মানুষ। মাছ ব্যবসায়ী শফিকুল জানান, বর্তমান ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। চাহিদার তুলনায় মজুদ কম। আর ১লা বৈশাখেই গরীব দুখি সবাই ইলিশ কিনতে চাই। তাই মজুদ কম হওয়ায় ১লা বৈশাখ আসতে আসতে আরো দাম বাড়তে পারে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ নিয়াজ উদ্দিন বলেন, এ বছর মোটামুটিভাবে ইলিশের সরবরাহ থাকায় দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আছে। সরবরাহ না থাকলে আরো অনেক বেশি দাম বাড়তো ।
বাঙালীর ঐতিহ্য বাংলা নববর্ষ সবার জীবনে আনন্দের জোয়ার বয়ে আসুক এমন প্রত্যাশা সুধিমহলের।

Please follow and like us:

Check Also

বাবার ইমামতিতে ছেলের জানাজা

চাঁদপুর শহরের হাজি মহসিন রোডের রেলওয়ে নূরানি জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাও. আ ন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।