মুফতি হান্নানের সঙ্গে শেষ দেখা করেছেন স্বজনরা ॥ মায়ের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলার ইচ্ছা ॥ কারাগারে কফিন ॥ কারাগারে ডিআইজি (প্রিজনের) প্রবেশ ॥ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে ॥

ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা,  ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসি কার্যকর করতে প্রস্তুত কারা কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ডিআইজি (প্রিজন) তৌহিদুল ইসলাম কারাগারে প্রবেশ করেছেন। ইতোমধ্যে মুফতি হান্নানের সঙ্গে বুধবার স্ত্রী-মেয়েসহ তার স্বজনরা শেষবারের মতো দেখা করেছেন। এসময় মুফতি হান্নান তার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। কাশিমপুর কারাগারে বন্দি মুফতি হান্নান ও তার সহযোগি বিপুলের কার্যকরের চ’ড়ান্ত প্রস্তুতি রেখেছে কারা কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যেই ফাাঁসি কার্যকরের আইনী প্রক্রিয়ার প্রায় সবক’টি ধাপই সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন্ শুধু রায় কার্যকরের পালা। দুপুরে কারা চিকিৎসক দন্ডপ্রাপ্তদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। সন্ধ্যার পর আরেক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। বুধবার রাতেই ওই দুই জঙ্গীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মিজানুর রহমান জানান, সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়র চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ৩ জনকে হত্যার মামলায় মৃতুদন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামীর মধ্যে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) এর শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুল এ কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছে। রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন (মার্সি পিটিশন) নাকচ হওয়ার পর যে কোন সময়ে তাদের দন্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে। এজন্য কারা কর্তৃপক্ষ চুড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ফাঁসি কার্যকরের পর লাশ বহনের জন্য দু’টি কফিন মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে কারাগারে আনা হয়েছে। ফাঁসির মঞ্চ ও রশি প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ফাঁসি কাযকরের জন্য জল্লাদ ও তওবা পড়ানোর জন্য ইমাম। নিয়ম অনুযায়ী দন্ড কার্যকরের আগে মুফতি আব্দুল হান্নানের সঙ্গে বুধবার তার স্বজনরা শেষবারের মতো কারাগারে দেখা করেন। একই মামলায় ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত অপর আসামি দেলোয়ার হোসেন রিপন সিলেট জেলা কারাগারে ফাঁসির সেলে বন্দি রয়েছেন।

রায় কার্যকরের চুড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন ॥
এদিকে, কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারা কমপ্লেক্সে ডিআইজি (প্রিজন) মো. তৌহিদুল ইসলাম প্রবেশ করেছেন। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ডিআইজিকে বহনকারী গাড়িটি কারা কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে। এ কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগি শরীফ শাহেদুল বিপুল। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত এ দু’জনের ফাঁসির রায় কার্যকরে আইনি সবগুলো ইতোমধ্যে ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু রায় কার্যকরের অপেক্ষা।

কারা সূত্রে জানা যায়, ফাঁসি কার্যকর করার জন্য প্রধান জল্লাদ রাজু ও তার দুই সহযোগীকে বাছাই করা হয়েছে। সহযোগীরা হচ্ছেন- যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি শরিফুল ইসলাম ও ইকবাল হোসেন। দন্ড কার্যকরের আগে কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সের ইমাম মাওলানা হেলাল উদ্দিনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আসামিদের তওবা পড়ানোর জন্য। ফাঁসি কার্যকরের জন্য মহড়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। দুপুরে কারা চিকিৎসক মিজানুর রহমান মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুলকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তারা সুস্থ্য ও স্বাভাবিক রয়েছেন। সন্ধ্যার পর আরেক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।

কারা কর্তৃপক্ষ ফাঁসি কার্যকর করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছেন। রাতেই তাদের ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে-এমনটা নিশ্চিত করেছেন পুলিশের একটি সূত্র। সন্ধ্যার মধ্যে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা সিভিল সার্জন কারাগারে এসে পৌঁছাবেন বলে পুলিশের সূত্রটি জানিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন বা কারা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কাছে এ ব্যাপারে কিছু বলেননি। কারা ফটকের সামনে সকাল থেকে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচারের জন্য বিপুল সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত রয়েছেন।

মুফতি হান্নানের সঙ্গে পরিবারের শেষ সাক্ষাৎ ॥
কারাগারের সুপার মিজানুর রহমান জানান, জানান, কাশিমপুরের এ কারাগারে বন্দি মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী বিপুলের পরিবারের সদস্যদেরও শেষবারের মতো সাক্ষাতের জন্য মঙ্গলবার খবর পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষের ডাকে মুফতি হান্নানের সঙ্গে শেষবারের মতো সাক্ষাত করতে মুফতি হান্নানের বড় ভাই আলি উজ্জামান মুন্সী, হান্নানের স্ত্রী জাকিয়া পারভীন রুমা এবং ছোট মেয়ে নাজনীন খানম ও বড় মেয়ে নিশি খানম বুধবার সকালে কারাগার এলাকায় আসেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা কারাভ্যন্তরে সাক্ষাৎ করেন এবং সকাল ৭টা ১০ থেকে ৭টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৪০ মিনিট কথা বলেন। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই মুফতি হান্নানের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও বড় ভাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার হিরণ এলাকার গ্রামের বাড়ি থেকে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ভোরে তারা গাজীপুরে এসে পৌছে কারাগারের আশপাশে এলাকায় অবস্থান নেন। পরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তারা কারাগার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন।

মুফতি হান্নানের সঙ্গে কারাবন্দি দুই ভাইয়ের সাক্ষাৎ ॥
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের সঙ্গে কারাবন্দি তার দুই ভাই দেখা করেছেন। বুধবার বেলা ২টার দিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে থাকা বন্দি মোঃ মহিবুল ও গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের বন্দি মোঃ আনিসের সঙ্গে মুফতি হান্নানের সাক্ষাৎ করানো হয়।

মায়ের সঙ্গে শেষ কথা বলতে চেয়েছেন মুফতি হান্নান ॥
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির সেলে বন্দি মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান তার মায়ের সঙ্গে মোবাইলে শেষবারের মতো কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এসময় তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

বুধবার সকালে মুফতি হান্নানের সঙ্গে কারাগারে পরিবারের চার সদস্যের সাক্ষাৎ শেষে তার বড়ভাই আলি উজ্জামান কারা এবং স্ত্রী জাকিয়া পারভীন রুমা কারা ফটকের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

মুফতি হান্নানের স্ত্রী জাকিয়া পারভীন রুমা জানান, মুফতি হান্নান ভাল আছেন, সুস্থ্য আছেন। কারাভ্যন্তরে সাক্ষাৎকালে মুফতি হান্নান বলেছেন, যে মামলায় তাকে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে এটা মিথ্যা মামলা। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।এসময় তিনি তার পরিবারের সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে বলেন।

মুফতি হান্নানের বড় ভাই আলি উজ্জামান বলেন, মুফতি হান্নান সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। মাকে সালাম জানিয়েছেন, তার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি তার সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখতে আমাকে (আলি উজ্জামান) অনুরোধ করেছেন এবং সবার সঙ্গে মিলেমিশে তাদেরকে থাকতে বলেছেন। সাক্ষাৎকালে মুফতি হান্নান বলেছেন, যে ক’দিন হায়াত আছে ওই কদিনই বেঁচে থাকব। দোয়া করবেন আল্লাহ তায়ালা যেন আমাকে নাজাত দান করেন, হেফাজত করেন এবং ঈমানের সঙ্গে যেন মৃত্যুবরণ করতে পারি। আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িত করে এ অবস্থায় দাঁড় করানো হয়েছে।

আলিউজ্জামান আরো বলেন, মুফতি হান্নান মায়ের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলার ইচ্ছে প্রকাশ করলে কারা কর্তৃপক্ষ মোবাইল নম্বর রেখে দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সম্ভব হলে মায়ের সঙ্গে হান্নানকে কথা বলিয়ে দেয়া হবে।

বড় ভাই আলিউজ্জামান জানান, মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হলে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ির পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করতে চাই। কারা কর্তৃপক্ষকে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে। জবাবে কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

সাক্ষাৎ শেষে তারা গ্রামের বাড়ি কোটালীপাড়ার উদ্দেশ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর হতে রওনা হন।

অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ॥
এদিকে, কাশিমপুর কারাগারে দুই জঙ্গির ফাঁসিকে কেন্দ্র করে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলগেইট ও আশেপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার কারাগার এলাকা পরিদর্শন করেন গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। এসময় তিনি বলেন, মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী বিপুলের ফাঁসির রায় কার্যকর করা নিয়ে আমরা প্রস্তুত। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ কারাগার এলাকায় কাজ করছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে জঙ্গি বিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।4

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত পাঁচ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদন্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং দেলোয়ার হোসেন রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদন্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। পরে প্রায় ৭ বছর পর গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দন্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অন্য মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন। আপিলের শুনানি শেষে চুড়ান্ত রায়ে গতবছরের ৭ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ রায় বহাল রাখে। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা রিভিউ করেন। পরে ১৯ মার্চ দেয়া রিভিউ খারিজের রায় গত ২১ মার্চ প্রকাশিত হয়। রিভিউ খারিজের ২১ মার্চ রায়ের কপি রাত পৌণে ১২টার দিকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। পরদিন বুধবার সকাল ১০টার পর তা মুফতি হান্নান ও বিপুলকে পড়ে শুনানো হয়। এছাড়া ওইদিন সিলেট কারাগার থেকে আসা মৃত্যু পরোয়ানাটিও ওই দিন রাতে তাদের পড়ে শুনোনো হয়েছে।

আদালতে মৃত্যুদন্ডের রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুল প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে গত ২৭ মার্চ রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন (মার্সি পিটিশন) করেন। পরে তা স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যায়। সম্প্রতি ওই আবেদন নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। তাদের আবেদন নাকচের কপি সোমবার কারাগারে পৌঁছে। প্রাণভিক্ষা নাকচের চিঠির সঙ্গে ফাঁসি কার্যকরের ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনাও এসেছে। প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার খবর সোমবারই তাদের জানানো হয়েছে।

 

এছাড়াও রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছে বিচারিক আদালতে। ওই মামলায় তার আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন। এই হুজি নেতার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। ২০০০ সালের ২০ জুলাই সেই কোটালীপাড়াতেই শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। মুফতি হান্নান ওই মামলারও আসামি। গত ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর ঢাকার বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মুফতি হান্নান আফগানিস্তানে গিয়ে তালেবানদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে আহত হওয়ার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরবর্তী সময়ে তিনি হরকাতুল জিহাদে যোগদান করেন।

রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ চাঞ্চল্যকর অনেক মামলার আসামি হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রথম কোন মামলায় মৃত্যুদন্ড হতে যাচ্ছে।

 

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।