অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র : বার্নিকাট

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র : বার্নিকাট

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে চায়।

আজ বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সাথে সাক্ষাৎ করেন মার্শা বার্নিকাট। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ওই সাক্ষাৎ-পর্ব শেষে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন বার্নিকাট।

মার্শা বার্নিকাটসহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সিইসির সাথে সাক্ষাৎ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা দীর্ঘ ওই সাক্ষাৎ পর্বে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে চায়। এক্ষেত্রে আগামী নির্বাচন যেন ‘প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে’ প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্ধৃতি স্মরণ করে দিতে চাই।’

বার্নিকাট জানান, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এটা শুধু ভোটের দিন নয়। সবাই যেন ভোটে প্রার্থী দিতে পারে এবং তারা সুচারুভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক ভালো নির্বাচনের ইতিহাস রয়েছে; আমরাও চাই- ভোটের দিন প্রতিটি নাগরিক যেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে। যেন তাদের প্রতিটি ভোট গণনা হবে-এটাও যেন নিশ্চিত হয়।’

পরে বৈঠকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, আগামীতে যেন ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৫ জানুয়ারির মতো বয়কটের নির্বাচন যাতে না হয়-সে বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বড় দলের অংশগ্রহণ না থাকলে ভোটে সহিংসতা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে-আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই; যাতে সহিংসতা না হয়। যে নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। সিইসিও বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগোচ্ছে।’

সচিব জানান, সৌজন্য সাক্ষাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিগত নির্বাচনে অভিজ্ঞতা, নতুন চ্যালেঞ্জ, তাদের প্রত্যাশা ও সহযোগিতার কথা তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘ভোটের ত্রুটি-বিচ্যুতি, হরতাল-জ্বালাও পোড়াও নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ রয়েছে তাদের।’

সিইসিকে উদ্ধৃত ইসি সচিব আব্দুল্লাহ বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে ভোটে সহিংসতা থাকবে না। সবাইকে নিয়ে ভোট করতে উদ্যোগ আছে কমিশনের।’

সিইসি বলেছেন, ‘১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালে আমাদের ভালো নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। চার মাসের ব্যবধানেও ভালো নির্বাচন করেছে ইসি। সেক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যেন আর নয়-সে জন্যে দু’পক্ষ একমত হয়েছি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটে বড় দল অংশ না নেয়ায় সবার কোছে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান সচিব আবদুল্লাহ।

সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সবাইকে মাঠে নামানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরাও উদ্যোগ নিচ্ছি। দলগুলোর সাথে সংলাপের মাধ্যমে এর কাজ শুরু হবে। সবাইকে ভোটে আনতে হবে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব ধরনের সহায়তা করে আসছে। তা অব্যাহত থাকবে।

সচিব আব্দুল্লাহ জানান, ইভিএম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হচ্ছে- তাদের আশা কমিশন সবার মতামত নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি ‘রোডম্যাপ’ ধরে কাজ এগোনোর কথাও তুলে ধরা হয় বৈঠকে।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।