SAMSUNG CAMERA PICTURES

রানীশংকৈলে চাকুরী হারিয়ে পঙ্গু আমিনুলের

মানবেতর জীবন যাপন
মোঃ আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল থেকে ঃ ঠাকুরগাওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভাংবাড়ি গ্রামের বগুড়া পাড়ার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম চাকুরী হারিয়ে পঙ্গু জীবনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সম্প্রতি ছবি তোলার জন্য আসা আমিনুলের সাথে কথা হয় উপজেলার বন্দর বাজারের জননী ষ্টুডিওতে। প্রায় ৫ফিট ৬ ইঞ্চি লম্বা শারীরিক কাঠামো পাতলা আকৃতির। ডান হাত নেয়। বাম হাতে সব কাজ করছেন। পঙ্গুত্বের কথা জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম বলেন, ঢাকার সফিপুরের আনসার একাডেমীতে হাবিলদার পদে চাকুরী করতাম। বিএনপি সরকার ১৯৯৪ সালে সেখানে চাকুরীরত একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বিরোধী মামলা দেয়। ফলে চাকুরী হারাতে হয়। চাকুরী হারিয়ে হাজি সেলিম এমপির অধিনে জাহাজ চালানোর চাকুরীতে যোগদান করি। এ-সময় মামলার কাজে হাইকোর্টে যাওয়ার সময় সায়েদাবাদের পোস্তগোলার ডায়না সিনেমা হলের সামনে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হই। দুর্ঘটনার সময় টাউন সার্ভিসের গাড়ি ডান হাতের উপর দিয়ে চলে যায়। এতে ডান হাতের পুরোটায় কেটে ফেলতে হয়। জীবনের জন্য নেমে আসে ভয়াবহ বঙ্গুত্ব। জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে হাসপাতালে দেখতে পান আমিনুল।
চিকিৎসা শেষে জাহাজে ফিরে গেলে চাকুরীতে আর যোগদান করাইনি জাহাজ কৃর্তপক্ষ। জীবনে নেমে আসে অসহায়ত্ব। হতাশার গ্লানি নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় জাহাজে কর্মরত লোকজন ব্যক্তিগত অনুদান হিসেবে ৫০ হাজার টাকা আমিনুলের হাতে তুলে দেন।
বাড়ি ফিরে আমিনুল অন্যের এক বিঘা জমি আধি নিয়ে ঘাস চাষ শুরু করেন। প্রতিদিন ভাংবাড়ি থেকে প্রায় ৯ কিঃমিঃ পথ পায়ে হেঁটে ঘাষের বোঝা কাঁধে নিয়ে রাণীশংকৈলে বিক্রী করতে হতো। রাণীশংকৈল দক্ষিণপাড়ার পোষ্ট মাষ্টার রফিকুল ইসলাম আমিনুলের জীবনের কষ্টের কথা শুনে তাঁকে গাভি পালনের পরামর্শ দেন। পরামর্শ শুনে আমিনুল ৫০ হাজার টাকার মধ্য থেকে একটি গাভি কিনেন। এক সময় গাভির পেট থেকে বাচ্চা হয়। প্রতিদিন ১ কেজি দুধ গাভি থেকে। তাই বিক্রী করে কোন রকমে সংসার চলে। সংসারের যাবতীয় খরচের যোগান সে টাকা সম্ভব না হলেও এভাবেই জীবন কাটাতে হয়। হাবিলদারের এক ছেলে। বাবার কথা মাথায় না রেখে স্ত্রী নিয়ে অন্যত্র সংসার করছে। বাবা-মাকে সে কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করছে না। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি এমনকি স্থাণীয় প্রশাসনেরও কোন সহযোগিতা পাই না আমিরুল। তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্কু ভাতা কিংবা পঙ্গুত্ব ভাতা এমনকি ১০ টাকা কেজি দরের চাল। বয়সের ভারে আক্রান্ত হতে বসেছেন আমিনুল। কাজ করার শক্তি যখন থাকবে না তখন আমিনুলের কি হবে ! সংসার চলবে কি করে এমন নানা চিন্তা তার মাথায়। হাতাশা যেন তাঁকে ঘিরে বসেছে। এমনই ভাবনা যেন সারাক্ষণ কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁকে।

এব্যাপারে ৫নং বাচোর ইউপি চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র নাথ বর্ম্মনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি আমিনুল সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।

Check Also

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।