পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ বিশ্বে রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে ৪৩টি দেশে ২৭ দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, ১৩টির খ্রিস্টান, হিন্দুধর্ম কোনো দেশেরই রাষ্ট্রধর্ম নয়

সারাবিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ২০ ভাগ দেশের রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ তথ্য দিয়েছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বের পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি দেশে রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে। এ দেশগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম রাষ্ট্র। ৫৩ ভাগ দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধর্মের কথা উল্লেখ নেই।

এছাড়া ১০টি দেশ (৫ ভাগ) কোনো ধর্মকেই স্বীকৃতি দেয়নি। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং উত্তর ইউরোপের ৪৩টি দেশে অফিসিয়ালি রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে এশিয়া, সাব-সাহারা আফ্রিকা, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ২৭টি দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। এদিকে ইউরোপের ৯টি দেশসহ বিশ্বের ১৩টি দেশের রাষ্ট্রধর্ম খ্রিস্টান।

ভুটান ও কম্বোডিয়ায় রাষ্ট্রধর্ম হল বৌদ্ধ এবং ইসরাইলের রাষ্ট্রধর্ম ইহুদি। তবে সারাবিশ্বের কোনো দেশেই হিন্দুধর্ম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। পিউ রিসার্চের রিপোর্টে বলা হয়, বেশকিছু ক্ষেত্রে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনেক নিয়মনীতি থাকে। কিন্তু আইনি বা করসংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা, রিয়েল এস্টেট বা সম্পত্তির মালিকানা এবং রাষ্ট্রকর্তৃক আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়া দেখা যায়, রাষ্ট্রকর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস ও ধর্মচর্চার বাধ্যবাধকতার কারণে সংখ্যালঘু ধর্মীয়গোষ্ঠীগুলোর ওপর বিধি-নিষিধ আরোপ করা হয় বা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। রিপোর্টে আরও বলা হয়, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক দেশই তাদের ইতিহাসের প্রথম দিকে রাষ্ট্রধর্মকে স্বীকৃতি দিয়েছে কিন্তু বর্তমানে আংশিকভাবে এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

অন্যদিকে স্বল্প কিছু দেশ আবার উল্টো পথে হাঁটে। তারা তাদের প্রতিটি নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রধর্ম পালন বাধ্যতামূলক করেছে। বিশ্বের ৪০টি দেশের মধ্যে ২৮টি দেশ খ্রিস্টান ধর্ম বিশ্বাসকে পছন্দ করে থাকে। ত্রাণ ও ধর্মভিত্তিক শিক্ষা প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি তহবিল দিয়ে থাকে এ ধর্মের লোকেরা। এছাড়া ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে তৃতীয় বৃহত্তম অনুদান দিয়ে থাকেন তারা।

বিশ্বের মোট ১০টি দেশে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয় এবং সেখানে খুব সক্রিয়ভাবে ধর্মকে প্রতিহত করা হয়। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কিছু দেশ। পিউ রিসার্চের মতে, এসব দেশে সরকারি কর্তৃপক্ষ ধর্মীয় প্রার্থনা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া জনসম্মুখে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় বিষয় প্রচারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
Please follow and like us:

Check Also

ঢাকায় প্রথম মহিলাদের ঈদের জামাত

বাংলায় মুসলমান সমাজে নারীদের প্রতিকূলতার ইতিহাস অনস্বীকার্য। নারীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বিবাহ ও অন্যান্য ব্যাপারে ইসলামের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।