প্রধান বিচাপতি ফিরে এসে দায়িত্ব নিতে পারবেন: দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার

দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছেন, ‘চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যখনই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হবেন, তখনই নিতে পারবেন। এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। তিনি যদি কাল সকালে আবার দায়িত্ব নিতে চান আমার ধারণা, তাতে কোনও সমস্যা হবে না।’
সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রোববার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, আপিল বেঞ্চের পাঁচজন বিচারপতি যেখানে তার সঙ্গে এক বেঞ্চে বসতে রাজি নন, সেখানে তার দায়িত্বে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম আলী ভিন্ন সুরেই কথা বললেন। তিনি বোঝাতে চাইলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ প্রধান বিচারপতিকে তার পদ থেকে হটিয়ে দিয়েছে বিষয়টা আসলে এমন নয়।
হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিতভাবে ছুটির আবেদন করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছেন। আগে থেকেই তিনি ক্যান্সারে ভুগছেন, কাজেই তিনি অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে চান। এজন্য লম্বা ছুটি প্রয়োজন। স্বভাবতই রাষ্ট্রপতি তা মঞ্জুরও করেছেন। এখন যদি তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন কিংবা পুরোপুরি সুস্থ না হয়েও কাজে যোগ দিতে চান, তবে তিনি আবার কাজে যোগ দেবেন। এই তো ব্যাপার।’
তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই প্রধান বিচারপতি নিজের অসুস্থতার কথা বলছিলেন। তবে হ্যাঁ, সরকারের সঙ্গে কোনও কোনও বিষয় নিয়ে সম্প্রতি তার সংঘাত হয়েছে, এটা সত্যি। কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না। কাল সকালে প্রধান বিচারপতি যদি ফিরে এসে আবার দায়িত্ব নিতে চান, আমি নিশ্চিত, আদালত তাকে আবার গ্রহণ করে নেবে। তিনি নির্দিষ্ট কয়েকটা দিনের জন্য ছুটির আবেদন করেছেন। ছুটি শেষে ফিরে তিনি যেকোনও সময়ই আবার যোগ দিতে পারেন।’
তবে পর্যবেক্ষকদের ধারণা, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটিতে যাওয়ার ঘটনাকে ভারতে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম যেভাবে ‘বাংলাদেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতির হেনস্তা’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে, তার জবাব দিতেই রাষ্ট্রদূত এভাবে গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘এই সমস্যার সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কোনও যোগ নেই। ইনশাল্লাহ, প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সমস্যা আমরা ঠিকই মিটিয়ে ফেলবো। কিন্তু বাংলাদেশে আসা সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমস্যা কিভাবে মেটানো যায়, সেটাই আসলে এখন আমাদের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা।’

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।