উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনে জর্ডানের রানী ‘রোহিঙ্গাদের নির্যাতন আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:জর্ডানের রানী রানিয়া আল আব্দুল্লাহ বলেছেন, মিয়ানমার নিজ দেশের অধিবাসী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা করেছে, তা অমানবিক।

নির্যাতনের বর্ণনা মতে, এটি আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানায়। তাই রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবতার অবমাননার ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিশ্ববাসীর উচিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো। জর্ডান নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে- এটি জানাতে আমি এখানে এসেছি।

সোমবার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে জর্ডানের রানী এসব কথা বলেন।  তিনি আরও বলেন, তথ্যমতে কক্সবাজারের এ এলাকায় এখন স্থানীদের চেয়ে আশ্রিতের সংখ্যা দ্বিগুণ।

এতে বোঝা যায়, নিজেদের নানা দিকে ক্ষতির পরও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। যা বিশ্ব দরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

তিনি নিপীড়িত মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি অনুরোধ করে বলেন, আশ্রিতদের অধিকাংশই নারী-শিশু ও বৃদ্ধ। জাতিসংঘের উচিত এদের বিশেষ যত্ন নেয়া। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবসনে নিরলস কাজ চালাতে জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় জর্ডানের রানী উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান। এরপর তিনি রোহিঙ্গা বস্তি ও স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিও পরিচালিত স্কুলগুলো পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে খেলে তাদের আনন্দ দেন।

এরপর তিনি ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে ক্যাম্পে তৈরি মঞ্চে উঠে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। ৯ মিনিটের বক্তব্য শেষে তার গাড়িবহর বেলা সোয়া ১টার দিকে কক্সবাজারের দিকে রওনা হয়।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে তাকে বহনকারী বিমান কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছে। এরপর তার গাড়িবহর রোহিঙ্গা  ক্যাম্পের উদ্দেশ্য রওনা দিয়ে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে ক্যাম্পে পৌঁছে বলে জানান উখিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো.কায় কিসলু।

তার আগমন উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা  জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য। ফলে কক্সবাজার শহর ও কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। একই অবস্থা ছিল মেরিন ড্রাইভ সড়কেও।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানিয়েছেন, জর্ডানের রানীর কক্সবাজার আগমন উপলক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশ, বিজিবি’র পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।

রানী রানিয়া আল আব্দুল্লাহ কুতুপালং ক্যাম্পে পৌঁছে রোহিঙ্গাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি জাতিসংঘের একাধিক সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো.আলী হোসেন, পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা এবং রানীর সফরসঙ্গীরা তার সঙ্গে ছিলেন।

উল্লেখ্য, জর্ডানের রানী রানিয়া আল আব্দুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) একজন বোর্ড সদস্য। একইসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবিক সংস্থাগুলোর পরামর্শক।

Please follow and like us:

Check Also

নতুন যোগ হচ্ছে ২০ লাখ দরিদ্র

মূল্যস্ফীতির কশাঘাত মোকাবিলায় ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে নতুন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।