জেরুসালেম পোস্ট : যুক্তরাষ্ট্র আর সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগারখ্যাত গাজা উপত্যকার মানুষেরা। জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিবাদে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার অধিবাসীরা অব্যাহত রেখেছে তাদের প্রতিবাদ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম তেহরানভিত্তিক প্রেস টিভির খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।
ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদ জানাতে গত রোববার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী পপ্যুলার ফ্রন্ট গাজা শহরে এক বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। জেরুসালেমের প্রতি অবমাননার প্রতিবাদ জানাতে মিছিলে অংশ নেন উপত্যকার হাজার হাজার মানুষ।
গাজা উপত্যকায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে পপ্যুলার ফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় নেতা জামিল মাজহার বলেন, “আল-কুদস (জেরুসালেম) হচ্ছে ফিলিস্তিনের চিরন্তন রাজধানী এবং এই নগরীর এক ইঞ্চি ভূমিও ইসরাইলকে দেয়া হবে না।”
বিক্ষোভকারীরা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিকৃতিতে আগুন দেন তারা। জেরুসালেম আল-কুদসকে দখলদার ইসরাইলের রাজধানী করার মার্কিন ও ইহুদিবাদী প্রচেষ্টায় আরও কিছু আরব দেশের বিরুদ্ধে ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ তোলে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তাদের হাতে প্ল্যাকার্ড শোভা পায়।
জায়নবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে সমগ্র জেরুসালেম শহরকে নিজের রাজধানী বলে দাবি করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুসালেমকে তাদের সম্ভাব্য রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়।
ইসরাইল-বাহরাইন সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টায় ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ : সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাহরাইনের প্রতিনিধি দলটি ইসরাইলে পৌঁছেছে। পাঁচ দিনের এই সফর ক্ষুব্ধ করেছে। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম-এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
জেরুসালেম পোস্ট জানিয়েছে, এই সফরের উদ্দেশ্য ইসরাইলের সঙ্গে বাহরাইনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া সফরের অংশ হিসেবে বাহরাইনের ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এখন জেরুসালেমে অবস্থান করছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিনিধি দলের অর্ধেক সদস্যই বাহরাইনি বংশোদ্ভূত। আর বাকি অর্ধেক বিভিন্ন দেশের বংশোদ্ভূত বাহরাইনি নাগরিক। জেরুসালেম পোস্ট জানায়, প্রতিনিধি দলে কোনও সরকারি কর্মকর্তা নেই। বিভিন্ন এনজিওতে কর্মরত ভিন্ন ভিন্ন ধর্মবিশ্বাসীদের নিয়ে দলটি গঠন করা হয়েছে।
৬ ডিসেম্বর বুধবার জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুসালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। এরপর বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। এমন অবস্থায় এই সফর ক্ষুব্ধ করেছে ফিলিস্তিনিদের। বাহরাইনি প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, এ সফরের পরিকল্পনা কয়েক মাস আগেই করা হয়েছিল।
প্রতিনিধি দলের প্রধান বেতসি মেথিসন বলেন, ‘অনেক মাস আগেই আমাদের এ সফরের পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্বে যা ঘটছে তার জন্য আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তাকে বিচ্যুত হতে দিতে পারি না।’
প্রতিনিধি দলটিকে ইসরাইল আমন্ত্রণ জানিয়েছে সিমন উইজেনথাল সেন্টার। প্রতিষ্ঠানটির সহকারি ডিন রাব্বি আব্রাহাম কুপার বলেন, ‘এটি সরকারি পর্যায়ের কোনও সফর নয়, তবে তার (বাহরাইনি বাদশাহ) প্রতিশ্রুতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
১২ ডিসেম্বর,২০১৭ মঙ্গলবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/জেরুসালেম পোস্ট/আসাবি