তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে লাখ লাখ মানুষ রাজপথে নামবে-মঈন তত্ত্ববধায়ক সরকার আর কোন দিন আসবেনা : তোফায়েল

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে প্রয়োজনে লাখ লাখ মানুষ ঢাকার রাজপথে নেমে আসবে।অন্য দিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন ,নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার আর কোন দিন আসবেনা । আজ রাজধানী পৃথক দুটি সভায় তারা এসব মন্তব্য করেন।

‌‘তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে লাখ লাখ মানুষ রাজপথে নামবে’

 ড.আব্দুল মঈন খান বলেছেন , আমরা বিএনপি চেয়াপরপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এদেশে আবার বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব। যেমন করেছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।

শুক্রবার ‘মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল জাতীয় প্রেসক্লাবে এর আয়োজন করে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ ওমর ফারুক পীর সাহেবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাবেক এমপি আব্দুল গফুর ভূইয়া, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, জাসাসের সহ-সভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ভিপি আ ন ম খলিলুর রহমান প্রমুখ।

আমরা রাজপথে আছি রাজপথে থাকব উল্লেখ করে মঈন বলেন, পৃথিবীর কোথাও কেউ অন্যায় ক্ষমতা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয় না। আন্দোলনের মাধ্যমে প্রয়োজনে এই সরকারকে বাধ্য করা হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদল চাই। এই সত্যকে আজকে আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রয়োজনে লাখ লাখ মানুষ ঢাকার রাজপথে নেমে আসতে হবে।

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, সকল রাজনৈতিক দল যাতে সমান সুযোগ সুবিধা পায় এমন নির্বাচন আমরা চাই। আওয়ামী লীগের পেছনে যেন প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, কেন্দ্রীয় প্রশাসন সাপোর্ট না দেয় এমন নির্বাচন আমরা চাই। আসুন আমরা সমানে সমানে রাজনৈতিক খেলা বাংলাদেশে খেলব। কারও সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে নয়। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণের শক্তি।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যদি নিজেদের মঙ্গল চায় তাহলে তাদের জন্য একটি মাত্র পথ খোলা আছে। সেটি হলো বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা।

ড. মঈন বলেন, আওয়ামী লীগ যে মিথ্যাচারের ইতিহাস লিখছে তা টিকবে না। মানুষ জানে কোনটি সত্য। সত্য কখনো আড়াল করা যায় না। আগামী নির্বাচন করতে হলে বিএনপির সাথে সমঝোতায় আসতেই হবে। যে সংকট তৈরি হয়েছে তা সমাধান আওয়ামী লীগকেই করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া এই সংকট সমাধান হবে না।

–০–

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সদ্য সমাপ্ত রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা, দেশি বিদেশি মিডিয়া ও সারাদেশের মানুষ দেখেছে নিরপেক্ষ হয়েছে। একমাত্র বিএনপিই বলেছে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। সব কিছু ভিন্ন চোখে দেখা বিএনপির রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের গাজিপুর রোডস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, যারা রংপুরের অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে কুলষিত করতে চায়, তাদের কথা দেশের মানুষ আর বিশ্বাস করবেনা। খালেদা জিয়া পরিবারের বিদেশে রাখা টাকার কথা আজকে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশ পাচ্ছে। তার এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করার মামলার বিচারও সমাপ্তির পথে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বর্তমান ক্ষমতাশীল সরকারের অধীনেই অংশগ্রহণ করতে হবে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার আর কোন দিন বাংলাদেশে ফিরে আসবেনা। আর সহায়ক সরকার বলে কিছু নেই। আগামি যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দ্বায়িত্ব পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান দেশটাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধকে নষ্ট করেছে। বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষণ আজকে বিশ্ব বিখ্যাত ভাষণ। এই ভাষণ জিয়া আমাদের প্রচার করতে দেয় নাই। এটা নিষিদ্ধ করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের তিনি দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনীদের নির্বাচিত করে সংসদে বসিয়েছিলেন। ২০০১ সালে তিনি ক্ষমতা পেয়ে আওয়ামী লীগ ও দেশের মানুষের প্রতি ভয়াবহ অত্যাচার করেছেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি সে সময় ভোলায় এসে বিএনপি’র অত্যাচার থেকে রেহাই পাননি। তাকে সেদিন জনসভা করতে দেয়নি বিএনপি। এই হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে তাদের উপর কোন প্রতিশোধ নেইনি। কারণ প্রতিহিংসার রাজনীতি আওয়ামী লীগ কখনও করেনা।
আগামী বছরের মধ্যে ভোলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বর্তমানে শতকারা ৮৩ জন মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে। ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষ এই সুবিধার আওতায় আসবে। সারা বিশ্ব আজ বাংলাদেশের প্রসংশা করছে। দেশ এগিয়ে চলছে দূর্বার গতিতে।
এসময় জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, পৌর মেয়র মো: মনিরুজ্জামান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাসস

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।