রোহিঙ্গা হত্যায় মিয়ানমার সেনাপ্রধানের স্বীকারোক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ– মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: : রাখাইনে দশজন রোহিঙ্গাকে হত্যায় মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লায়াংয়ের স্বীকারোক্তিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্কট মার্সিয়েল। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র আরো বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রত্যাশা করে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত বুধবার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং জানান, ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাখাইনের ইন দীন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার ঘটনায় চার সেনা সদস্য জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন তারা।

তিনি জানান, ওই সদস্যরা ‘ রোহিঙ্গা বিদ্রোহী’দের হত্যায় সহযোগিতা করেছিলেন। হত্যার পর তড়িঘড়ি তাদের মাটিচাপা দেয়া হলে ২০ ডিসেম্বর সেসব মৃতদেহ পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনে সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী ও রিপোর্টারদের একটি ফোরামে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ১০ ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে সেনাবাহিনীর স্বীকারোক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মার্কিন দূত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার নিন্দাও জানান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য রয়েছে যে, পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মায়ানমার সেনাবাহিনী ব্যাপক হারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে।

স্কট আশা প্রকাশ করেন, সামরিক বাহিনীর ইন দীনের ঘটনায় সেনা সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়ে এই স্বীকারোক্তি আরও খোলাখুলি হতে সহযোগিতা করবে। আর তা নিপীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সহায়তা করবে।

স্কট আরো বলেন, আশা করি এর পর আরও স্বচ্ছতার মাধ্যমে দায়ীদের খুঁজে বের করা হবে। আমি এটার প্রতি জোর দেব। শুধু যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এটা করতে হবে তা নয় বরং এটা মিয়ানমারের গণতন্ত্রকেও সুসংহত করবে।

গত বছরের আগস্টে মায়ানমারের রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরসা’র সদস্যরা। জবাবে ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে অভিযান জোরদার করে মায়ানমার সেনাবাহিনী। স্থানীয় বৌদ্ধদের সহায়তায় সেখানে বহু বাসিন্দাকে হত্যা ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ত্রাণ সংস্থাগুলোর হিসাবে এই পর্যন্ত অভিযানের কারণে প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছে।

১৩জানুয়ারী,২০১৮শনিবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/রয়টার্স /আসাবি

Please follow and like us:

Check Also

বাংলাদেশি জাহাজ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ৮ জলদস্যু গ্রেফতার

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ অপহরণে যুক্ত ৮ জলদস্যুকে আটক করেছে সোমালিয়ার পুলিশ। রোববার জাহাজটিকে মুক্তি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।