অভয়নগরে ফসলি জমি ও আবাসিক জায়গায় ইটভাটা স্থাপন!

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট: : অত্যধিক বন্যা, খরা ও শীতসহ প্রাকৃতিক বিভিন্ন দূর্যোগের আশঙ্কার মধ্যে পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটাগুলো এবার কৃষিজমি ও আবাসিক জায়গা দখল করে ইটভাটা স্থাপনে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে।আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় যশোরের অভয়নগর উপজেলা এলাকায় ফসলি কৃষি জমি, আবাসিক এলাকা ও সবুজ বনায়ন এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের হিড়িক পড়েছে। প্রতি বছর কোন না কোন জায়গায় একের পর এক এসব ইটভাটা স্থাপন করা হচ্ছে।
খোজ নিজে জানা গেছে, এ বছর অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর গ্রামে ফজলু ব্রিকস নামে নতুন ইট ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ভাটায় ইট পোড়ানোতে গাছের কাঠ ব্যবহারের মহোৎসব চললেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে আসছে। ইটভাটা স্থাপনে এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিন্তু ভাটা মালিকেরা প্রভাবশালী হওয়াই সাধারন মানুষ হয়রানীর ভয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারছেন না।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩ মোতাবেক বছরে একাধিক কৃষি পণ্য উৎপাদন হয় এমন জমি, বন বিভাগের ২ কিলোমিটার দূরত্বের ভিতর, গ্রামীন সড়কের অর্ধ কিলোমিটার দুরত্বের ভিতরে ও আবাসিক এলাকায় ইট ভাটা স্থাপন করা যাবে না, উল্লেখ থাকলেও এই উপজেলায় সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বন এলাকার ভিতরে, ফসলী কৃষি জমির উপরে ও আবাসিক এলাকায় ইট ভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
শুধু ভাটা স্থপনই শেষ নয় কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে গ্রামীন সড়ক ব্যবহার করে তা ট্রাক্টরে বহন করে ভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যদিও সেটি আইন বহির্ভূত। যার ফলে গ্রামীণ কাঁচা ও পাকা সড়কগুলো দিন দিন চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা এলাকায় ১১টি ইটভাটা রয়েছে, যেগুলি ইটভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানো (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩ মোতাবেক একটিও স্থাপন যোগ্য নয়।
সচেতন মহল ও পরিবেশবিদরা মনে করছেন, ইট একটি অতিব প্রয়োজনীয় বস্তু। যা দিয়ে উন্নয়মূলক কাজ বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। তার পরও ফসল উৎপাদনের জন্য মাটির প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে জমির উপরিভাগে। যাকে বলা হয় টপ সয়েল। যা তৈরি হতে সময় লাগে কয়েকশত থেকে কয়েক হাজার বছর। তা কেটে বানানো হচ্ছে ইট। এটা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে জমি উর্বরতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সেই সাথে কিছু ভাটায় কাঠ পোড়ানোর কারণে সবুজ বেষ্টনি ধ্বংস হচ্ছে।
এলাকার সচেতন মহল মন্তব্য করেছেন, সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে ফসলী জমি রক্ষা সহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে ইট ভাটা গুলির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ অতীব জরুরী।
উপজেলা অফিস সূত্রে মতে ১১টি ইটভাটার মধ্যে লাইসেন্স আছে ৫টির, লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে ২টি, মেসার্স রহমান ব্রিকস ও মেসার্স আশা ব্রিকস’র লাইসেন্স নবায়ন নেই তথাপি ইট পোড়ানোর কর্যক্রম চালু আছে, মেসার্স মুন ব্রিকস যার কোন লাইসেন্স নাই (ইট পোড়ানোর কর্যক্রম চালু আছে), মেসার্স মিতালী ব্রিকস লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেছে তবে ইট পোড়ানোর কর্যক্রম চালু আছে।
এ ব্যাপারে ফজলু ব্রিকস এর মালিক ফজলু জানান, আমাদের কাগজ এখনো হয় নি। আবেদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একজন প্রভাব আ’লীগ নেতার কথা বলে তিনি বলেন কাগজের ব্যাপারটা তিনিই দেখছেন।

১৪জানুয়ারী,২০১৮রবিবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি

Please follow and like us:

Check Also

কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রী’র আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি :সাতক্ষীরার কলারোয়ায় স্বামী আজহারুল ইসলামের পুরুষাঙ্গ কেটে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন আত্মহত্যা করেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।