মুসলিম উম্মাহর ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি কামনা

টঙ্গী: বিশ্ব মানবতার শান্তি-কল্যাণ, মুসলিম উম্মার পরকালের মুক্তি কামনা ও মুসলিমদেশগুলোকে হেফাজত করতে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম ও তাবলীগের শূরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের হাসান।
আখেরি মোনাজাতে মাওলানা জুবায়ের হাসান বলেন, হে আল্লাহ মুসলিম দেশগুলোকে হেফাজত করুন। মুসলমানদের এক শরীরে পরিণত করে দিন। মুসলমানদের দিলের মধ্যে মহব্বত প্রতিষ্ঠা করে দিন। হে আল্লাহ বিবাদ, মারামারি, হানাহানি খতম করে দিন। এ দুনিয়ার জীবনকে শান্তির জিন্দেগি, জান্নাতের জিন্দেগি বানায়ে দিন। হে আল্লাহ আমাদেরকে আপনার বন্দেগি করার তৌফিক দিন। আপনার প্রিয় হাবিবের (সা.) সুন্নাত অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তৌফিক দিন।
মাওলানা জোবায়েরের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আবেগ-আপ্লুত লাখো মুসল্লি ‘আমিন’ ‘আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত করে তোলেন টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমা প্রাঙ্গণ।
আখেরি মোনাজাতকে ঘিরে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো মাইকে সেই ধ্বনি তুরাগ নদের চারপাশের আরও বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে।
আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণে ব্যাকুল হয়ে ইজতেমা ময়দানে ছুটে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অশ্র“সিক্ত নয়নে নিজ নিজ গুনাহ মাফ ও আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি, সংহতি, অগ্রগতি এবং দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ কামনা করেন।
এদিকে আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে রোববার ভোর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। তবে এরপরও ভোরের কুয়াশা ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে মোনাজাতে শরিক হতে দলে দলে হাজারো মানুষ পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে পৌঁছান।

ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে বহু নারীও এসেছেন মোনাজাতে অংশ নিতে। তবে ময়দানে ঢোকার অনুমতি না থাকায় তারা আশপাশের বিভিন্ন কারখানা ও আবাসিক ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়ে এতে শরিক হন।
এদিকে ইজতেমার মাঠে পৌঁছাতে না পেরে হাজার হাজার মানুষকে কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিতে দেখা যায়। অনেকে বিমানবন্দর গোল চত্বর ও উত্তরা থেকেও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা, বিপণি বিতান ও অফিস ছিল বন্ধ। মোনাজাত শেষে ইজতেমাস্থল থেকে বাড়ি ফেরার সুবিধবার জন্য বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা থাকলেও সবার একসঙ্গে বাড়ি ফেরার তাড়াহুড়ায় টঙ্গীর কামারপাড়া সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী- কালীগঞ্জ সড়কের আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের সড়ক-মহাসড়ক এবং সংযোগ সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

Please follow and like us:

Check Also

বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়

অবশেষে মুক্তিপণে ৩১ দিন পর অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পেলেন সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।