খালেদা জিয়া নির্বাচনে করণী ঠিক করতে বুদ্ধিজীবীদের দারহস্ত

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:ঢাকা: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শলা-পরামর্শ করতে নিজের গুলশানের কার্যালয়ে বুদ্ধিজীবীদের ডেকেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

রবিবার রাতের এ পরামর্শসভায় অংশ নেন অন্তত ২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীরা। এদের মধ্যে কয়েকজন বিএনপির সিনিয়র নেতাও রয়েছেন।

বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই ঘণ্টার আলোচনায় চলমান মামলা নিয়ে খালেদা জিয়ার করণীয় ও বিএনপির অবস্থান–এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ আদালতে নয়, বরং মামলাগুলো নিয়মিত আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এছাড়া অন্যান্য পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে- সরকারের কৌশলে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য মামলাও বিশেষ আদালতে নেওয়া হয়। তাদের ধারণা, এই বিশেষ আদালতে নেওয়ার কারণ হচ্ছে খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন ব্যস্ত রাখা। রাজনৈতিক কোনও কার্যক্রমে অংশ নিতে না দেওয়া। সংগঠনকে শক্তিশালী করে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য খালেদা জিয়াকে আবারও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরামর্শ দেয়া হয়। জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসনও তাদের জানান, তিনি যোগাযোগ রাখছেন। বৈঠকে খালেদা জিয়ার ঢাকার বাইরে সফরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ডা. জাফরুল্লাহ তাকে মাঘ মাসের পর ঢাকার বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৈঠকের বিষয়ে তো আলোচনার কিছু নেই।’

বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে খালেদা জিয়াকে কয়েকজন বুদ্ধিজীবী পরামর্শ দিয়ে বলেন, সারা দেশে বিএনপির সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি অতিদ্রুত দিয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল এবং ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়ে দেওয়ারও পরামর্শ দেন তারা।

বৈঠকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে সরকারকে বাধ্য করতে সংগঠন শক্তিশালী করার বিকল্প নেই বলেও খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা। আমন্ত্রিত অতিথিরা জানান, তাদের সবাইকে খালেদা জিয়ার তরফে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

বৈঠকের বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিএনপির চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিয়েছি, তিনি যেন তার মামলাগুলো নিয়মিত কোর্টে শুনানির ব্যবস্থা করেন। বিশেষ আদালতে নেওয়া সরকারের একটি কৌশল। রোজ তাকে আটকে রাখার একটি ব্যবস্থা।’

বৈঠকটি রাত ৯টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়ে শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টায়। এতে আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক সদরুল আমীন, ইব্রাহিম খলীল, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ খন্দকার চৌধুরী, কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএনপি নেতাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান, প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ, অ্যাডভোকেট মাহবুব হোসেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সানাউল্লাহ মিয়াসহ অনেকে।

১৫জানুয়ারী,২০১৮সোমবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি

Check Also

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজ প্রশ্ন উঠছে গণতন্ত্র কোথায়: মঈন খান

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের রুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে ও তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।