সুশীল সমাজের আচরণ দেখলে গাধার কথা মনে পড়ে: সুশীল সমাজের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:ঢাকা: সুশীল সমাজের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নয়নের গতিধারায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্ব বাংলাদেশের স্বীকৃতি দিচ্ছে। কিন্তু এ দেশের কিছু মানুষ উন্নয়নটা চোখে দেখে না। তাদের আচরণ দেখলে গাধার কথা মনে পড়ে।
জাতীয় সংসদে আজ বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ফজিলাতুন্নেসার সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, কিছু সুশীল ও পণ্ডিতজন সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক কোনো অগ্রগতি দেখতে পারছেন না। উন্নয়নের ছোঁয়া দেখতে পারছেন না। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর মত জানতে চান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা চোখ থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির, তাদের হাজার বলেও দেখানো, শোনানো যাবে না। তাদের বোঝানোর কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বলা হচ্ছে সুশীল। আমি জানি না, এই সুশীলের অর্থটা কী, ব্যাখ্যাটা কী। কোন তত্ত্বের ভিত্তিতে তারা সুশীল। সেটাই প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়, যখন তারা কোনো কিছু দেখেনও না, শোনেনও না, বোঝেনও না। তারা সুশীল না অসুশীল তা আমি জানি না।’
সার্কাসের গাধার গল্প সংসদে শুনিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করার আশায় গাধা দড়ি ছেঁড়ার অপেক্ষায় বসে থাকে। ওই শ্রেণিটা গাধার মতো দড়ি ছেঁড়ার অপেক্ষায় বসে থাকে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কাউকে গাধা বলছি না। তারা জ্ঞানী-গুণী, শিক্ষিত। বিদেশ থেকে উচ্চ ডিগ্রিপ্রাপ্ত। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। তবে, তাদের আচরণগুলো যখন দেখি, খুব স্বাভাবিকভাবেই গাধার কথা মনে পড়ে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু মানুষ সব সময় নিজেদের অশুভ শক্তির কাছে বিক্রি করতে প্রস্তুত থাকে। রাস্তার পাশে ডাস্টবিনে লেখা থাকে ‘ইউজ মি’। তেমনি তারাও রাজনীতি ও ক্ষমতার ক্ষেত্রে বুকে সাইন বোর্ড লিখে বসে থাকে—‘ইউজ মি’। তারা সব সময় আশায় বসে থাকে, কেউ অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতা দখল করলে একটি পতাকা পাবে। ক্ষমতায় যেতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তাদের এই না দেখাটা একধরনের অসুস্থতা। কারণ, তাদের দৃষ্টি অবৈধ ক্ষমতা দখলের দিকে। তাদের আকাক্সক্ষা ক্ষমতায় যাওয়ার। কিন্তু তারা জনগণের কাছে যেতে পারেন না। ভোটের রাজনীতিতে তারা অচল। এই শ্রেণি ক্ষমতায় যেতে বাঁকা পথ খোঁজে।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমাম সম্পূরক প্রশ্নে জানতে চান, প্রধানমন্ত্রী একাই অর্জন করে যাবেন, নাকি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সবাইকে নিয়ে চলতে চান। তবে কথা আছে, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে…।’
সরকারের অর্জনগুলোকে সম্মিলিত প্রয়াসের ফল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানাই। তারা গঠনমূলক বক্তব্য রেখেছে। গঠনমূলক আচরণ করেছে। অন্তত এইটুকু বলতে পারি, বিএনপি থাকতে তখন যে খিস্তিখেউড় হতো, যেসব আলাপ-আলোচনা হতো তা কান পেতে শোনা যেত না। এখন সেসব নেই। অত্যন্ত গণতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে বিরোধী দল গঠনমূলক আলোচনা করছে এবং সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে।’

২৪জানুয়ারী,২০১৮মঙ্গলবার:ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।